Hare to Whatsapp
সংবাদ মাধ্যম ছাড়া জনকল্যাণে রূপায়িত সরকারের উন্নয়ন কর্মসুচির কথা মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয় : তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ৮, : সংবাদমাধ্যম হচ্ছে গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ। সংবাদ মাধ্যম ছাড়া জনকল্যাণে রূপায়িত সরকারের উন্নয়ন কর্মসুচি ও দৃষ্টিভঙ্গির কথা মানুষের কাছে নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। আর এই কাজে সাংবাদিকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আজ রাজ্য অতিথিশালায় রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমের ট্রাস্টি, সম্পাদক ও সংবাদ প্রতিনিধিদের সাথে পরিচিত হয়ে একথা বলেন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তরের প্রচার ও প্রসার হয় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর রাজ্য সরকারের চোখ ও কান। এই সভায় অংশগ্রহণ করেন রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মন্ত্রীকে বরণ করে নেওয়া হয়। এরপর অনুষ্ঠানে উপস্থিত রাজ্যের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের ট্রাষ্ট্রি, সম্পাদক ও সংবাদ প্রতিনিধিদের সাথে পরিচিত হন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী।
| সভায় রাজ্যের সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কি কি সমস্যা রয়েছে সেবিষয়ে সম্পূর্ণ অবগত হন তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। শুনে নেন তাদের প্রস্তাব ও বক্তব্য। সভায় সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের আলােচনা ও পরামর্শ শুনে তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সমস্যা সমাধানে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন। আলােচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, তিন মাস অন্তর অন্তর যাতে সংবাদমাধ্যমের সম্পাদক ও সাংবাদিকদের সাথে এধরণের মতবিনিময় সভা করা যায় সে বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে। তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সভায় আশ্বস্ত করেন কারাের প্রতি কোন পক্ষপাত করা হবে না। রাজ্য সরকার সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে। সাধ্যমতাে কাজ করে যাবে। কর্মরত সাংবাদিকদের প্রেস জ্যাকেট প্রদান যাতে স্বচ্ছতার সাথে হয় সেবিষয়টিও গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। প্রয়ােজনে প্রেস জ্যাকেট প্রদানের সংখ্য আরও বাড়ানাে হবে।
| সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী সংবাদ প্রতিনিধিদের প্রস্তাব অনুসারে যাতে বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ইংরেজী প্রেস রিলিজ করা যায় সেবিষয়টিও খতিয়ে দেখার আশ্বাস দেন। তিনি জানান, সরকারের মিডিয়া পলিসি যাতে বাস্তবায়িত হয় সেটাও গুরুত্বের সাথে দেখা হবে। তিনি বলেন, দপ্তরের মন্ত্রী হিসেবে সংবাদ মাধ্যমের কল্যাণে তিনি সাধ্যমতাে কাজ চালিয়ে যাবেন। গঠনমূলক সমালােচনার মাধ্যমে ভুলত্রুটি উঠে আসবে। তাতে ভুলত্রুটি দূর করে কাজে আরও গতি আসবে। কর্মরত সাংবাদিকদের এক্রিডিটেশন কার্ড প্রদানের ক্ষেত্রেও অধিক স্বচ্ছতা বজায় রাখা হবে। যাতে সঠিক ব্যক্তির হাতে এই কার্ড পৌছায়। তাছাড়া তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের প্রেস রিলিজের গুণমান আরও কিভাবে বাড়ানাে যায় তা খতিয়ে দেখা হবে।
সভায় আলােচনা করতে গিয়ে ভূপেন চন্দ্র দত্ত ভৌমিক ট্রাস্টের চেয়ারম্যান সঞ্জয় পাল কর্মরত সাংবাদিকদের এক্রিডিটেশন কার্ড প্রদানের সংখ্যা আরও বৃদ্ধি করা সম্পর্কে দপ্তরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। আলােচনায় অংশ নিয়ে প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়ার রাজ্য প্রতিনিধি জয়ন্ত ভট্টাচার্য তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর থেকে প্রকাশিত প্রেস রিলিজের গুণমান বৃদ্ধি এবং ইংরেজি প্রেস রিলিজ প্রকাশ করা সম্পর্কে মতামত ব্যক্ত করেন। সেই সাথে প্রেস রিলিজগুলি দ্রুত আপলােড করার জন্য প্রস্তাব রাখেন। যানবাহনে প্রেস স্টিকারের অপব্যবহার বন্ধ করা নিয়েও পরামর্শ দেন তিনি। একইভাবে স্যন্দন পত্রিকার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অভিষেক দেও ইংরেজি প্রেস রিলিজ প্রদানের উপর গুরুত্বারােপ করেন। এছাড়া সাংবাদিক কল্যাণে আরও প্রয়ােজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি রাখেন।
| সভায় ত্রিপুরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট এসােসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক দেবাশিস মজুমদার বলেন, এই মতবিনিময় সভা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও সময়ােপযােগী। বর্তমানে প্রেস রিলিজের গুণমান অনেকটাই বেড়েছে। তবে কিছু ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে। বিশেষ করে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সংবাদ বিভাগে নিয়ােগের ক্ষেত্রে কর্মরত সাংবাদিকদের অগ্রাধিকার দেওয়ার উপরে তিনি গুরুত্ব আরােপ করেন। এছাড়া সাংবাদিকদের পেশাগত মানােন্নয়নে সময়ে সময়ে কর্মশালা করতে প্রস্তাব রাখেন তিনি। আলােচনায় অংশ নিয়ে ত্রিপুরা ওয়ার্কিং জার্নালিস্ট এসােসিয়েশনের সভাপতি তথা বিশিষ্ট সাংবাদিক দিবাকর দেবনাথ সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি উল্লেখ করেন। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তর থেকে আরও দ্রুত প্রেস রিলিজ সরবরাহের প্রস্তাব রাখেন তিনি। সভায় আজকের ফরিয়াদ পত্রিকার সম্পাদক শানিত দেবরায় সংবাদ মাধ্যম তথা সাংবাদিকদের সমস্যা নিরসনে প্রতি তিনমাস অন্তর আলােচনা সভা করার প্রস্তাব রাখেন। এছাড়া তিনি সংবাদ কর্মীদের সময়ে সময়ে প্রশিক্ষণ সহ কোথাও সাংবাদিক আক্রান্ত হলে দ্রুত পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি পেশ করেন। সত্যভাষণ পত্রিকার সম্পাদক নবেন্দু ভট্টাচার্য মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে সংবাদ মাধ্যমের সার্বিক মানােন্নয়নে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সাংবাদিকদের বেতনকাঠামাে চালু করা সহ সাপ্তাহিক পত্রিকাগুলির মানােন্নয়নে গুরুত্বারােপ করেন।
| সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব প্রশান্ত কুমার গােয়েল বলেন, রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কাজকর্ম সময়ে সময়ে মানুষের কাছে পৌঁছানাের অন্যতম গুরুদায়িত্ব রয়েছে সাংবাদিকদের উপর। কোভিড কালীন পরিস্থিতিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন সাংবাদিকরা। রাজ্য সরকার সাংবাদিকদের সার্বিক কল্যাণের জন্য নিরন্তর প্রচেষ্টা জারি রেখেছে। সাংবাদিকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় সরকার সাধ্যমতাে সহায়তা করছে। ইতিমধ্যে পেনশন স্কিম চালু হয়েছে। সভায় তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা রতন বিশ্বাস দপ্তরের পক্ষ থেকে উপস্থিত সমস্ত প্রতিনিধিদের অভিনন্দন জানান। এদিন মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে আলােচনায় অংশ নেন লাইভ ২৪’র পক্ষে সম্পাদক সুভাষ দাস, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধি দেবরাজ দেব, রাইজিং ত্রিপুরার প্রতিনিধি ইন্দ্রানী দে, গণচেতনার পদাতিক পত্রিকার সম্পাদক প্রশান্ত চক্রবর্তী, বিতীর্ণ পত্রিকার সম্পাদক। উত্তম চক্রবর্তী, চ্যানেল দিনরাতের প্রতিনিধি সুশান্ত দে, ত্রিপুরা ইনফো ওয়েবসাইটের কর্ণধার জয়ন্ত দেবনাথ, ত্রিপুরা স্পাের্টস জার্নালিস্ট ক্লাবের সভাপতি সরযু চক্রবর্তী, চিত্র সাংবাদিক নিতাই দে, ককখরাঙ টিভি চ্যানেলের সমীর দেববর্মা, বিটিভির কর্ণধার মনীষা পাল চৌধুরী, হল্লাবােল চ্যানেলের কর্ণধার প্রশান্ত ভট্টাচার্য, ত্রিপুরা বাণী সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক রঘুনাথ সরকার প্রমুখ।