Hare to Whatsapp
ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনের ভোটে বিজেপি প্যানেলের শোচনীয় হার, রাজ্য রাজনীতিতে নয়া মেরুকরন
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ২৩, : ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে বিজেপি প্যানেলের প্রার্থীদের এবার শোচনীয় ভাবে পরাজয় স্বীকার করে নিতে হলো। বিজেপি সরকার রাজ্যের শাসন ক্ষমতা পাওয়ার পর গত বছর ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে ব্যাপক সংখ্যা ঘনিষ্ঠতা নিয়ে বিজেপি অনুগত আইনজীবী প্যানেল জয়ী হয়েছিল। কিন্তু একবছর যেতে না যেতেই এবার বিজেপি দলের অনুগত আইনজীবী প্যানেলের শোচনীয় ভাবে পরাজয়ের মুখ দেখতে হলো।
রাত নয়টা নাগাদ চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষনা হয়। ঘোষিত ফলাফল অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে-১৫ সদস্যক ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনের নির্বাচনে কংগ্রেস এবং সিপিএম-এর যৌথ উদ্যোগে গঠিত ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থীরা সংখ্যা ঘনিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়েছে। সভাপতি পদে কংগ্রেস অনুগত আইনজীবী মৃনাল কান্তি বিশ্বাস এবং সম্পাদক পদে সিপিএম অনুগত আইনজীবী কৌশিক ইন্দু জয়ী হয়েছে।
এবার ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে মোট ভোটার ছিল ৪০৮ জন। এর মধ্যে সভাপতি পদে ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থী মৃনাল কান্তি বিশ্বাস পেয়েছেন ২২২ ভোট। তার প্রতীদ্বন্দ্বী বিজেপি প্যানেলের অরবিন্দ দেব পেয়েছেন ১৫৭ ভোট। সহ সভাপতি পদেও জয়ী হয়েছেন ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের সুভাশীষ দে।
সহ সভাপতি পদে ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থী সুভাশীষ দাস পেয়েছেন ১৭৯ ভোট। তার প্রতীদ্বন্দ্বী সুব্রত রায় পেয়েছেন ১৬২ ভোট। সম্পাদক পদে ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থী কৌশিক ইন্দু পেয়েছেন ২১৬ ভোট। তার প্রতীদ্বন্দী আশিষ ভদ্র পেয়েছেন ১৬৩ ভোট। তছাড়া সহ সম্পাদকের দুটি পদেও সংবিধান বাচাও মঞ্চের প্রার্থী মিতালী নন্দী ও সুজয় সরকার জয়ী হয়েছে।সহ সম্পাদক পদে ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থী মিতালী নন্দী পেয়েছেন ১৯৫ ভোট, তার প্রতীদ্বন্দ্বী অরিন্দম দেব পেয়েছেন ১৬০ভোট। সহ সম্পাদকের অন্য জয়ী ‘সংবিধান বাচাও’ মঞ্চের প্রার্থী সুজয় সরকার পেয়েছেন ১৮১ ভোট। আর তার প্রতীদ্বন্দ্বী বিজেপি প্যানেলের ভবানী রঞ্জন ভট্টাচার্য পেয়েছেন ১৬৯ ভোট।
একই রকম ভাবে ত্রিপুরা বার এসোসিয়েশনের কার্যকরী কমিটির দশটি সাধারন সদস্য পদে সংবিধান বাচাও মঞ্চের অধিকাংশ প্রার্থীরা জয়ী হয়েছে। সংবিধান বাচাও মঞ্চের যেসব সদস্যরা জয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন, প্রসেনজিৎ দেবনাথ, অর্ঘ্য কুসুম পাল, পুলক সাহা, দীপ্তনু দেবনাথ, সৈকত রহমান, মনীষা মজুমদার ও সোমা রায়।
বিজেপি প্যানেলের প্রার্থীদের মধ্যে শুধু সদস্য পদে উৎপল দাস, অনিমেষ ভৌমিক এবং নন্দন পাল জয়ী হয়েছেন। বিজেপি প্যানেলের অন্য প্রার্থীদের মধ্যে শুধু শিল্পী সরকার এবং সুখেন্দু দেব্বর্মা মোটামুটি লড়াই-এ ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জয়ী হতে পারেনি।
রাজ্য কংগ্রেস সভাপতি (এক্টিং) পিযুষ কান্তি বিশ্বাস ত্রিপুরা বার অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচনে সংবিধান বাচাও মঞ্চের প্রার্থীদের এই জয়কে গনতন্ত্রের জয় বলে অবহিত করেছেন। তিনি বলেছেন, দেশজুড়ে বিজেপি দল সংবিধানকে পদধূলিত করে বিচার ব্যবস্থাকে দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করার যে কু-প্রচেষ্টা শুরু করেছে, ত্রিপুরা বার এর নির্বাচনে তার বিরুদ্ধে গনতান্ত্রিক পদ্ধতিতে প্রতিবাদ হয়েছে। আসন্ন এডিসি ভোটেও এর প্রতিফলন ফের মানুষ ঘটাবেন বলে তিনি দাবী করেছেন।
ত্রিপুরা বারের নির্বাচনে সংবিধান বাচাও মঞ্চের প্রার্থীদের বিপুল জয়ে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক গৌতম দাস জয়ী প্রার্থীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এসম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেছেন এই জয় বিজেপি সংবিধানকে অবজ্ঞা করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে এবং দেশকে ভাগ করার যে নতুন রাজনীতি শুরু করেছেন এর বিরুদ্বে সংঘবদ্ব প্রতিবাদ। সারা দেশের গনতন্ত্র প্রিয় মানুশের কাছে এই জয় একটি নয়া বার্তা বহন করবে বলে তিনি জানান।
জানাগেছে, আগামী ৭ই মার্চ একই রকম ভাবে ত্রিপুরা হাইকোর্ট বার এসোসিয়েশনের নির্বাচন হবার কথা। সেখানেও কংগ্রেস এবং সিপিএম যৌথভাবে প্রার্থী পদ ঘোষনা করতে পারে বিজেপি প্যানেলের বিরুদ্বে।