Hare to Whatsapp
সামাজিক ভাতা সহ সরকারি সুবিধা প্রদানে যোগ্যরাই সুযোগ পাবে: মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ১৬, : সরাসরি জনতার মাঝে গিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলার যে প্রক্রিয়া শুরু করেছেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব, তা আজও জারি রেখেছেন। মানুষের সুখ-দুঃখের কথা সরাসরি শোনার জন্য পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া, হঠাৎই তিনি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ঘুরে বেড়াচ্ছেন। বলেন এর মধ্য দিয়ে বাস্তব চিত্র উঠে আসে। "রাজ্যের মুখিয়া যদি জনতার সুখ-দুঃখের কথা না জানে, তবে উন্নয়ন কিভাবে হবে?" এভাবেই আকস্মিক সফর সম্পর্কে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী। গ্রামীণ এলাকায় সরকারের যে বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, তার খোঁজ খবর নেন। বলেন এর মাধ্যমে গ্রাম স্বরাজের স্বপ্ন প্রকৃত অর্থেই বাস্তবায়িত হবে।
সোমবার আচমকা সফরের অংশ হিসাবে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান গোলাঘাঁটি, গাবর্দী ইত্যাদি এলাকায়। সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলে যাবতীয় বিষয়ে জানতে চান। একইসঙ্গে খুব সহজভাবেই তাদের জীবনচর্যার সঙ্গে নিজেকে মিলিয়ে নেন। জাতি জনজাতি, বিভিন্ন অংশের মানুষের সঙ্গেই তিনি কথা বলেন।
পরে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী বলেন "রাজ্য সরকার উন্নয়নের প্রশ্নে দলমত বিচার করে না। যেকোনো রাজনৈতিক দলেরই হোক না কেন, তার যোগ্যতা অনুসারে সরকারি যাবতীয় উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের সুফল পাবেন।"
এদিন তার সফরকালে স্পষ্ট হয়ে উঠে এসেছে যে, বেশ কয়েকজন ব্যক্তির যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র রাজনৈতিক কারণে তাদের সুযোগ সুবিধা থেকে বিরত রাখা হয়েছে। বিগত সরকারের সময় শুধুমাত্র বাম বিরোধী হওয়ায় তারা প্রাপ্য ভাতা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন বর্তমান সময়ে ১৭/১৮ হাজার ভাতা প্রাপকের সংখ্যায় শুন্যতা এসেছে। শীঘ্রই এগুলি পূরণ করা হবে। তিনি বলেন এক্ষেত্রে প্রকৃত যোগ্যরাই ভাতা পাবে। যেকোনো রাজনৈতিক দলেরই হোন না কেন, ভাতা প্রদানের ক্ষেত্রে যোগ্যতাকেই প্রাধান্য দেয়া হবে।
এলাকা পরিদর্শন শেষে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষ সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা সঠিকভাবেই পাচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে গণবণ্টন ব্যবস্থার সুফল পাওয়া যাচ্ছে। কোথাও কোন অভিযোগ নেই। ২০২২ সালের মধ্যে অটল জলধারা মিশন প্রকল্পে সবার ঘরে পানীয় জল পৌঁছে যাবে।
এছাড়া বিভিন্ন এলাকায় রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা খরচ করা হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন ইতিমধ্যেই তিন-চারটে প্রকল্প তৈরি করে, এনইসির বৈঠকে ডোনার মন্ত্রকে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রায় ২০০ কোটি টাকা নিয়ে কাজ শুরু করে দেওয়া হয়েছে। যাতে করে বিভিন্ন গ্রামীণ রাস্তার সঙ্গে মূল সড়কের যোগাযোগ স্থাপন হয়।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিকাঠামো সহ রাজ্যে লজিস্টিক হাব, আইটি হাব, হেলথ হাব ইত্যাদি তৈরি করার কাজ চলছে। এছাড়া আগরতলা সহ ত্রিপুরার ৭ টি পুর পরিষদ এলাকার উন্নয়নের জন্য এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক থেকে ১৬৫০ কোটি টাকা মঞ্জুর করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই প্রজেক্ট রিপোর্ট তৈরি করার জন্য ১৭ কোটি টাকা দিয়ে দেয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন এক বছরের মধ্যেই কাজের সুফল দেখতে পারবেন রাজ্যবাসী। তৈরি হবে নতুন রোজকার।
এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে কাছে পেয়ে রীতিমত বেজায় খুশি গোলাঘাঁটি এলাকার লোকজন। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব, প্রথমেই চলে যান গোটাঘাঁটি বাজারে স্থিত দলীয় পার্টি অফিসে। কিছুদিন আগে একাংশ দুষ্কৃতী বিজিপি পার্টি অফিসটি ভাঙচুর করেছিল। তা পরিদর্শন শেষে দলীয় কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেই মুখ্যমন্ত্রী কথা বলেন স্থানীয় লোকজনদের সঙ্গে। স্কুল পড়ুয়া ছাত্র-ছাত্রীরা মুখ্যমন্ত্রীকে দেখতে পেয়ে রীতিমতো ব্যাপক উৎসাহিত হয়ে উঠেছিল। ওই এলাকায় পরিদর্শন শেষে মুখ্যমন্ত্রী চলে যান গাবর্দীর সুধরাই ঠাকুরপাড়া এলাকায়। সেখানে মানুষের সঙ্গে কথা বলেন, তাদের সুখ-দুঃখের কথা জানেন। ওই জায়গাতেই মধ্যাহ্নভোজন করেন তিনি। তারপর স্থানীয় কৃষকদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাদের উৎপাদিত ফসল নিজেই ক্রয় করে আনেন। এদিন মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্থানীয় বিধায়ক শ্রী বীরেন্দ্র দেববর্মা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন সদর্থক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে উন্নয়নের শিখরে রাজ্যকে তুলে ধরতে চান। বলেন "মানুষের ভালোবাসা থেকেই আমি এনার্জি পাই।"