Hare to Whatsapp
কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে : মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ৬, : রাজ্যের কৃষকদের আয় ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার যে সমস্ত কর্মসূচি সাফল্যের সাথে রূপায়ণ করেছে তা প্রচারের আলোয় নিয়ে আসতে হবে। তবেই কৃষক কল্যাণে সরকার যে দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করছে তা রাজ্যের জনগণের নিকট পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব অভিমত ব্যক্ত করেছেন। আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা-ওয়াটারশেড ডেভেলপমেন্ট কম্পোনেন্টের বিভিন্ন কর্মসূচির পর্যালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী এই অভিমত ব্যক্ত করেন। পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা-ওয়াটারশেড ডেভেলপমেন্ট কম্পোনেন্টের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে ক্ষুদ্র জল বিভাজিকা তৈরি করার ফলে কতজন কৃষক উপকৃত হয়েছেন এবং কৃষি উৎপাদন বেড়েছে কিনা তা দপ্তরকে পর্যালোচনা করে দেখতে হবে। এই প্রকল্প শুরুর পূর্বে এবং প্রকল্পের রূপায়ণের পর বর্তমানে কৃষকদের আর্থিক অবস্থা কেমন উন্নত হয়েছে এবং পূর্বের তুলনায় উৎপাদন বেড়েছে কিনা তা তুলনামূলক বিশ্লেষন করে এর সাফল্যের দিকগুলি কৃষকদের সামনে তুলে ধরা প্রয়োজন। পাশাপাশি এই প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষক কল্যাণে আগামীতে কি পরিকল্পনা রয়েছে সে বিষয়গুলিও রাজ্যের কৃষকদের সামনে তুলে ধরতে হবে। পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার ক্ষেত্রে দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে ত্রিপুরাকে দেশের সামনে তুলে ধরার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করতে হবে দপ্তরকে। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। তিনি বলেন, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে কৃষকদের কাছ থেকে ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়, প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি প্রকল্পে কৃষকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান ইত্যাদি প্রকগুলি রাজ্যব্যাপী প্রচারে নিয়ে যেতে হবে।
পর্যালোচনা সভায় কৃষি দপ্তরের সচিব সি কে জমাতিয়া জানান, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার ওয়াটারশেড ডেভেলপনেন্ট কম্পোনেন্ট রূপায়ণে কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তর একটি স্টেট লেভেল নোডাল এজেন্সি নির্বাচন করেছে। প্রধানমন্ত্রী কষি সিঞ্চাই যোজনা ওয়াটারশেড কম্পোনেন্ট রূপায়ণের মূল উদ্দেশ্য হল বিভিন্ন জলাশয়ের সৃষ্টি, সেচের সম্ভাবনা বৃদ্ধির জন্য ভূগর্ভস্থ জলের রিচার্জ কাঠামো সৃষ্টি করা, জমির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, মাটির ক্ষয়রোধ এবং মাটির আর্দ্রতা বৃদ্ধি এবং গ্রামীণ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই প্রকল্প শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ৬৫টি প্রকল্পে ২ লক্ষ ৫৫ হাজার ৩৬৮ হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনার জন্য চিহ্নিত করা হয়েছে। এরমধ্যে এখন পর্যন্ত ৩১টি প্রকল্পে ২ লক্ষ ১৩ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে।
তিনি জানান, ২০ ১৮-১৯, ২০১৯-২০ এবং ২০২০-২১ এই তিন অর্থবর্ষে মোট ১১৮৮ টি নতুন ওয়াটার হার্ভেস্টিং স্ট্রাকচার নির্মাণ করা হয়েছে এবং ৪৫১টি ওয়াটার হার্ভেস্টিং স্ট্রাকচারের সংস্কার করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ২০১৮-১৯ থেকে ২০২০-২১ এই তিন অর্থবর্ষে মোট ১০ ১৯ হেক্টর এলাকায় উদ্যান শস্য এবং বাশ প্ল্যানটেনশন করা হয়েছে। এই তিন অর্থবর্ষে ৪৪৪টি স্ব-সহায়ক দলকে শূকর পালন, পোলট্রি এবং ছাগল পালনের জন্য সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও ১১৩৪ জন সম্পত্তিহীন ব্যক্তিকে প্রোডাকশন সিস্টেম এন্ড মাইক্রোএন্টারপ্রাইস প্রকল্পে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। তিনি জানান, ২০২১-২২, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ এই তিন অর্থবর্ষে ১১৫টি মাইক্রো ওয়াটার শেড তৈরী করার পরিকল্পনা নিয়েছে দপ্তর। এরফলে ১ লক্ষ ২০ হাজার হেক্টর জমিকে সেচের আওতায় আনা সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার ওয়াটারসেড ডেভেলপমেন্ট কম্পোমেন্টে এছাড়াও বাঁধ নির্মাণ, পুকুর খনন, সেচ খাল নির্মাণ, স্যুইচ গেট নির্মাণ, আনারস ও ড্রাগন ফলের চাষ,জল শক্তি অভিযান ইত্যাদি কর্মসূচিগুলি দপ্তর রূপায়ন করছে। পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও পরিবহন দপ্তরের প্রধান সচিব শ্রীরাম তরণিকান্তি, পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে, পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, অর্থ দপ্তরের সচিব ব্রিজেশ পান্ডে, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের সচিব দীপা ডি নায়ার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।