Hare to Whatsapp
কৃষক পরিবারের সন্তানরা আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কাজে অংশ নিচ্ছেন : মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ২, : কৃষকরা শুধুমাত্র অন্নদাতাই নন। কৃষক পরিবারের সন্তানরা আমাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার কাজেও অংশ নিচ্ছেন। ১লা আগস্ট সিপাহীজলার পাথালিয়াঘাট টি এস আর ১১নং ব্যাটেলিয়ানের হেড কোয়াটার পরিদর্শন শেষে সৈনিক সম্মেলনে যোগ দিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। ঐদিন বিকেলে ব্যাটেলিয়ান হেড কোয়াটারে এসে পৌছালে বাহিনীর জওয়ানগণ মুখ্যমন্ত্রীকে অভিবাদন জানান। মুখ্যমন্ত্রী ব্যাটেলিয়ানের বিভিন্ন বিভাগ পরিদর্শন করেন। তাছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী টি এস আর ১১নং ব্যাটেলিয়ানের জওয়ানদের দ্বারা আয়োজিত এক স্বেচ্ছা রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করেন ও ব্যাটেলিয়ান প্রাঙ্গণে বৃক্ষ রোপন করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এক সময়ে সন্ত্রাস কবলিত ত্রিপুরায় শান্তি স্থাপনে টি এস আর বাহিনীর বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এদিন ১১ নং ব্যাটেলিয়ানে সৈনিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখার সময়, উপস্থিত জওয়ানদের থেকে জানতে চান, জওয়ানদের মধ্যে কারা কৃষক পরিবার সন্তান। সৈনিক সম্মেলনে উপস্থিত অধিকাংশ জওয়ানরা জানায় তারা কৃষক পরিবার থেকে এসেছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের কোভিড অতিমারী পরিস্থিতিতে বিভিন্ন জনপদে খাবার পৌঁছে দেওয়া থেকে শুরু করে লকডাউন বা করোনা কার্ফুতে বিশেষ ভূমিকা নিয়েছে টি এস আর জওয়ানরা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, এই বাহিনীর কাজে যেমন সম্মান আছে তেমনি বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতারও সম্মুখীন হতে হয়। মানুষ পুলিশ এবং টি এস আরকে তাদের পাশে দেখতে পেলেই অনুভব করতে পারে যে সরকার জাগ্রত আছে। বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা বিশেষ প্রতিভার অধিকারী। তাদেরকে চিহ্নিত করে যোগ্য সম্মান প্রদানের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ব্যাটেলিয়ানের ৫ জন জওয়ান জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে। প্রয়ােজনে গতানুগতিক ধারা থেকে বেরিয়ে এসে বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধি ও তাদের ভাল কাজে উৎসাহিত করতে বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। ব্যাটেলিয়ানের পারিপার্শিক ও বিভিন্ন ইতিবাচক দিক সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরতেও মুখ্যমন্ত্রী জওয়ানদের পরামর্শ দেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টি এস আর বাহিনীকে ভিনরাজ্যে পাঠানোর সময় জওয়ানদের মধ্যে প্রথমে অনীহা ছিলো। এখন অনেকেই ভিনরাজ্যে যেতে ইচ্ছুক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীতে কাজ করে যারা আত্মা বলিদান দিয়েছেন তাদের অবদান স্বরণ করতে হবে। রাজ্যের ইতিহাস, পরম্পরা ও সংস্কৃতির প্রতি আরও যত্নশীল হতে হবে আমাদের প্রত্যেককে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাহিনীর একজন কনস্টেবল হয়ে নিজেকে ছোট ভাবার কোন প্রয়োজন নেই। ব্যক্তির পদ নয়, ব্যক্তির কাজই হল বড়। সততা ও নিষ্ঠার সাথে নিজের দায়িত্ব পালন করাই বড় সৈনিক সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, টি এস আর কে স্মার্ট ব্যাটেলিয়ান হিসেবে গড়ে তুলতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে টি এস আর এর পোশাক পরিবর্তন। তাছাড়াও টি এস আর এর স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় ও তাদের সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে সি বি এস ই স্কুল সহ বিভিন্ন বিষয় সরকারের বিবেচনায় রয়েছে। রাজ্যে ৫ হাজার পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এই বাহিনীর জওয়ানদের মধ্যে যে সাহসিকতা, ইতিবাচক মানসিকতা এবং দক্ষতা রয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে কর্তব্য পালনের পাশাপাশি বৃদ্ধ, শিশু ও মহিলাদের প্রতি যত্নবান হওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে ১৮ ঊর্ধ্বদের ৯১ শতাংশ কোভিড টিকাকরণের কাজ শেষ হয়েছে। পশ্চিম জেলায় ১০০ শতাংশ কোভিড টিকাকরণ হয়ে গেছে। রাজ্যে ১১টি নগর এলাকায় ও ২৪৪টি গ্রামীণ এলাকায় ১০০ শতাংশ কোভিড টিকাকরণ হয়ে গেছে। এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশক ভি এস যাদব, সিপাহীজলা জেলার জেলাশাসক বিশ্বশ্রী বি, টি এস আর-এর আই জি জি এস রাও, ব্যাটেলিয়ানের কমান্ডেন্ট সহ অন্যান্য আধিকারিকগণ।