Hare to Whatsapp
বিশেষ কোভিড টিকাকরণ অভিযান ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হলো
By Our Correspondent
আগরতলা, জুলাই ২৯, : রাজ্যে দু’দিনব্যাপী বিশেষ কোভিড টিকাকরণ অভিযান আরও তিনদিন বাড়িয়ে ৩১ জুলাই পর্যন্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রতি পরিবারে ১৮ উৰ্দ্ধ নাগরিকদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণে সরকার দৃষ্টান্ত স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে। আজ দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা ও গোমতী জেলার বেশ কয়েকটি কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় একথা জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। মুখ্যমন্ত্রী এদিন দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শাকবাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র এবং গোমতী জেলার অমরপুর ব্লকের কাসকো উপস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও তেই বাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের টিকাকরণ কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করেন। দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শাকবাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দে মুখ্যমন্ত্রীর উপস্থিতিতে বেশ কজন গর্ভবতী মহিলাকেও কোভিড টিকাকরণ করা হয়েছে।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলা ও গোমতী জেলায় কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী ত্রিপুরার জন্য পর্যাপ্ত টিকা পাঠিয়েছেন। রাজ্যে স্বতস্ফূর্ততার সঙ্গে টিকাকরণের ফলে ইতিমধ্যেই ৪৫ উৰ্দ্ধদের ১০০ শতাংশ টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়েছে। এবার ১৮ উৰ্দ্ধদেরও সম্পূর্ণ টিকাকরণের আওতায় আনা গেলে, ১০০ শতাংশ টিকাকরণ রাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি পাবে ত্রিপুরা। দু’দিনের বিশেষ টিকাকরণ কর্মসূচির ফলে রাজ্যে এক ইতিবাচক বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। আগামী তিনদিনের বর্ধিত টিকাকরণ কর্মসূচির সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে ১৮ উদ্ধাদের প্রত্যেককে টিকাকরণের আওতায় আনতে সবার সহযোগিতা কামনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, টিকাকরণ কর্মসূচিতে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণের ফলে ১৮ উর্দ্ধদের বড় মাত্রায় টিকাকরণ ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়ে গেছে। যারা এখনও টিকা গ্রহণ করেন নি তাদের টিকাকরণের আওতায় আনতে এই উদ্যোগ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কম টিকাকরণ হচ্ছে এমন এলাকাগুলিকে চিহ্নিত করেই তিনি এই টিকাকরণ কেন্দ্রগুলি পরিদর্শন করছেন। মানুষের মধ্যে টিকাকরণ সম্পর্কে আরও বেশি করে বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতেই এই সফর। করোনা পরীক্ষার মতো টিকাকরণ নিয়েও একটা অংশ বিভ্রান্তি ছড়িয়েছিল। কিন্তু এইসব গুজবে কান না দিয়ে ত্রিপুরার সচেতন নাগরিকগণ এগিয়ে এসে স্বতস্ততার সঙ্গে টিকা গ্রহণ করছেন। এরই ফলশ্রুতিতে ৪৫ উৰ্দ্ধ টিকাকরণে সফলতা মিলেছে। করোনাকে হাল্কা ভাবে না নিয়ে টিকাকরণের মাধ্যমে নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখার আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মার্গ দর্শনে সমগ্র দেশব্যাপী যে টিকাকরণের কর্মসূচি চলছে তাতে গতি আনতে রাজ্যেও টিকাকরণের এই বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। টিকাকরণ কর্মসূচি তিনদিন বাড়ানোর যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে তাকে কাজে লাগিয়ে এখনও যারা টিকা গ্রহণ করেন নি তাদের এই সুযোগ গ্রহণ করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মানুষের সচেতনতার ফলেই কমেছে কোভিড পজিটিভিটির হার। তবে করোনা এখনও সম্পূর্ণ নির্মূল হয়ে যায়নি। এই করোনা সংক্রমণ থেকে নিজেদের ও পরিবারদের সুরক্ষিত রাখতে প্রয়োজন টিকা গ্রহণ করা।
দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শাকবাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে টিকাকরণ কর্মসূচি পরিদর্শনের মাঝেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী মিশন দৃষ্টি প্রকল্প’র অন্তর্গত বেশ কয়েকজনের মধ্যে বিনামূল্যে চশমা বিতরণ করেন। উল্লেখ্য, যাদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পেয়েছে তাদের জন্য এই প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে চশমা বিতরণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজের হাতে বেশ কয়েকজনকে চশমা পরিয়ে দেন। এই চশমা পরে স্পস্ট দেখতে পাচ্ছেন বলে তারা জানান। দুই জেলাতেই কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন পরিবার কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধক দপ্তরের অধিকর্তা ডা, রাধা দেববর্মা। এছাড়া দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার শাকবাড়ি উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্র পরিদর্শনে মুখ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন বিধায়ক শংকর রায়, দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি কাকলি দাস দত্ত, এমডিসি কংজাঅং মগ। গোমতী জেলার কোভিড টিকাকরণ কেন্দ্রগুলিতে পরিদর্শনের সময় উপস্থিত ছিলেন গোমতী জেলার জেলাশাসক রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, বিধায়ক রঞ্জিত দাস, বিধায়ক সিন্ধুচন্দ্র জমাতিয়া প্রমুখ।