Hare to Whatsapp
আমার রক্ত বিন্দুতে ত্রিপুরা, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রাজ্যের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো : মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, জুন ৩, : শুধু মাত্র পাশে নয়, আপনাদের সরকার আপনাদের কাছেই আছে l আমার রক্ত বিন্দুতে ত্রিপুরা, শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত রাজ্যের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো ও মানুষের জন্য কাজ করে যাব l রাজধানীর নজরুল কলাক্ষেত্রে এক আনারম্বর অনুষ্ঠানে, চিফ মিনিস্টার কোভিড স্পেশাল রিলিফ প্যাকেজ স্কিমের সূচনা করে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব l করোণা সংক্রমণ প্রতিরোধে গোটা রাজ্যে কার্ফু জারী থাকার ফলে, অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল পরিবারের কথা বিবেচনা করে ত্রিপুরা সরকার ঘোষিত এই স্কিমের সূচনা করে পশ্চিম জেলার অন্তর্গত কয়েকজন সুবিধাভোগীর হাতে খাবারের প্যাকেট তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী l এর পর পতাকা নেড়ে, রেশন (খাবার প্যাকেট) পৌঁছে দেওয়ার ছোট মালবাহী গাড়ির সূচনা করেন l মুখ্যমন্ত্রী বলেন করোণা পরিস্থিতিতে গোটা রাজ্যের প্রায় সাত লক্ষ পরিবারে বিনামূল্যে রেশন (ড্রাই খাবার প্যাকেট) ও এক হাজার টাকা করে সরাসরি ব্যাংক একাউন্টে পৌঁছে দেওয়ার রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত গোটা দেশে নজিরl এই সংঙ্কটময় পরিস্থিতিতে রাজ্যের আর্থিক ভাবে অস্বচ্ছল পরিবারগুলির সহায়তার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে l পশ্চিম জেলার অন্তর্গত প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার সুবিধাভোগী এর সুফল পাবে l ৪৬ টি ন্যায্যমূল্যের দোকানের মাধ্যমে খাবারের প্যাকেটগুলি পৌঁছে দেওয়া হবে l মালবাহী ছোট গাড়িতে করে, বিভিন্ন প্রান্তের রেশন দোকানে এই খাদ্যসামগ্রী গুলি পাঠানো হবে l
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগরতলা শহরে একটা সময়ে পজিটিভিটি রেইট গিয়ে পৌঁছেছিলো ২২ শতাংশে l বর্তমানে কোভিড সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আসার ফলে পজিটিভিটি রেট ৫ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে l ত্রিপুরার মানুষের সচেতনতার ফলেই তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে l টিকাকরণ ও করোনা পরীক্ষায় জোর দিয়েছে সরকার l
তিনি বলেন, হাইকোর্ট ইতিমধ্যেই বলেছে কোভিড নিয়ে যেন কোন ধরনের বিভ্রান্তিকর খবর প্রচার করা না হয় l এক্ষেত্রে কিছু বিধি নিষেধ রয়েছে l কিন্তু, তার পরেও একটি সংবাদপত্রে রাজ্য সরকার করোনা চিকিৎসার টাকা বাড়িয়ে দিয়েছে বলে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে l যেখানে, রাজ্যের মানুষের কথা চিন্তা করে, করোণা চিকিৎসার জন্য মানুষকে যেন অতিরিক্ত টাকা দিতে না হয় তার জন্য রাজ্য সরকার একটি মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছে l সংবাদ মাধ্যমের এই ধরনের ভূমিকা কোনোভাবেই কাম্য নয় l তবে এই বিষয়টিকে সরকার যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী l ১৮ থেকে ৪৪ বছর পর্যন্ত ভ্যাকসিনেশনের ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে চিঠি পাঠানো হয়েছে l এক্ষেত্রে বিগত দিনের মত তিনি সদর্থক সাড়া দেবেন বলে আশা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী l তিনি বলেন ভয় নয়, আমারো করোনা সংক্রমণ হয়েছিল l দৃঢ় মনোবল নিয়ে সবাই মিলে কোভিডকে মোকাবিলা করতে হবে l
মুখ্যমন্ত্রী বলেন দেশের প্রত্যেক প্রান্তে কোভিড পরিকাঠামো ও আর্থিক সঙ্গতি চলমান রাখতে যথাযথ উদ্যোগ নিয়েছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি l কেউ কোনদিন কল্পনাও করতে পারেনি ভারতে কোভিডের টিকা তৈরি হবে l যারা ছোটখাটো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করতেই হিমশিম খেয়ে ছিলেন তারাই আজকে নরেন্দ্র মোদীর সমালোচনা করছেন l যুদ্ধ, মহামারী এই সময়গুলোতে, সবাই মিলেমিশে কাজ করতে হয় l কিন্তু দুর্ভাগ্যের হলেও সত্যি, এক জোট হয়ে কাজ করার বদলে একটা অংশ সমালোচনায় ব্যস্ত l ভেক্সিনের ক্ষেত্রেও অনেক ধরনের গুজব ছড়ানো হয়েছিল l তবে ত্রিপুরার সচেতন নাগরিকগন এসবে কর্ণপাত না করে সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন l তার জন্যই ৪৫ উর্দ্ধ ভ্যাকসিনেশনের ত্রিপুরা গোটা দেশে শীর্ষস্থানে রয়েছে l শুধু তাই নয় কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধে অনেকটা ভালো জায়গায় রয়েছে ত্রিপুরা l কেরালার বিভিন্ন সাফল্যের ইস্যু তুলে যারা ত্রিপুরায় প্রচার করে থাকেন, ত্রিপুরার সাফল্য নিয়ে তারা চুপ l ভ্যাক্সিনেশনে ত্রিপুরা গোটা দেশের শীর্ষ স্থান অর্জন করেছে তা নিয়ে তাদের কোনো প্রশংসা নেই l করোনা পরিস্থিতিতে কেরল সরকার যখন কর্মচারীদের বেতন কেটে নিচ্ছে, তখন ত্রিপুরায় সরকারি কর্মচারীদের বেতন কাটার বদলে ৩ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করছে সরকার l আন্দোলনের নামে রাজ্যের মানুষকে খেপিয়ে তুলে দীর্ঘ সময় ত্রিপুরার বিনাশ করা হয়েছে l আন্দোলনের নামে নিজেদের ঘর গুছিয়েছেন, নানান নামে এদের অস্তিত্ব ছিল l কিন্তু বর্তমান সরকারের সময়ের মানুষ আত্মনির্ভর হতে শিখেছে l পরিবর্তন হয়েছে মানসিকতার l মুখ্যমন্ত্রী বলেন ত্রিপুরার কাঁঠালের প্রশংসা এখন প্রধানমন্ত্রীর মুখে l এই কাঁঠাল এখন দখল করেছে বৈদেশিক বাজার l বাড়ছে চাহিদা l শুধু তাই নয়, নানা ভাবে স্বনির্ভরতার পথ খুঁজে নিচ্ছেন রাজ্যের যুবারা l করোনা জনিত কারনে একটা বড় সময় প্রতিবন্ধকতা তৈরী হলেও, মানুষের কল্যানে কাজ করে চলেছে ত্রিপুরা সরকার l
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন, কৃষি, পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাষক রাভেল হেমেন্দ্র কুমার, খাদি বোর্ডের চেয়ারম্যান রাজীব ভট্টাচাৰ্য সহ অন্যান্য প্রশাসনিক আধিকারিকগন l এই বৃহত কর্মকান্ড রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে, মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় এবং এর সাথে যুক্ত অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানন মুখ্যমন্ত্রী l তার পাশাপাশি ভ্যাকসিনেশন সহ কোভিড সংক্রমন প্রতিরোধে বিশেষ ভূমিকা গ্রহণের জন্য প্রেস ক্লাব, ক্লাব ফোরাম ও ক্লাব কর্মকর্তাগন, রাজ্যের সমস্ত নাগরিক,স্বাস্থ্য কর্মী এবং চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী l