Hare to Whatsapp
রাজ্যের নিজস্ব উৎপাদন বৃদ্ধিতে মুখ্যমন্ত্রীর জোর।
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ১৭, : আগরতলা, ১৭ই ফেব্রুয়ারি : এফ সি আই এর মাধ্যমে আগামী 3-4 বছরের মধ্যে কৃষকদের কাছ থেকে তিন লক্ষ মেট্রিক টন ধান ক্রয়ের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। ইতিমধ্যে ২ লক্ষ ২১ হাজার কৃষক এফ সি আই এর মাধ্যমে ধান বিক্রি করেছেন। সোমবার কাকড়াবনে ডিস্ট্রিক ইনস্টিটিউশন অফ এডুকেশন এন্ড ট্রেনিং এর গোমতী জেলা ভিত্তিক কিষাণ মেলার উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর কৃষকদের কাছ থেকে সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয়ের মাধ্যমে কৃষকদের ব্যাংক একাউন্টে ১৩৭ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা পৌঁছে দেয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী এদিন অর্গানিক কৃষিকে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান। তিনি বলেন এর জন্য 9 হাজার হেক্টর জমি চিহ্নিত করেছে সরকার। এর মধ্যে দুই হাজার হেক্টর জমিতে অর্গানিক চাষের জন্য অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন " কৃষি হোক, ফিশারি, এনিমেল হাজবেন্ডারী, ব্যাংক, এই প্রাথমিক ফ্যাক্টর গুলিই কোন রাজ্যের ইকোনমিকে শক্তিশালী করতে পারে।" এই বিষয়ে তিনি কৃষির পাশাপাশি ফিশারির কথা বলতে গিয়ে, রুদিজালা কে কেন্দ্র করে কোপারেটিভ সোসাইটি গড়ে মাছ চাষের পরামর্শ দেন। সঠিক পরিকল্পনায় চাষ করলে ৩ থেকে ৪০০ কোটি টাকা আয় করা সম্ভব হবে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। অন্ধ্রপ্রদেশ ত্রিপুরা থেকে মাছ ক্রয় করতে আগ্রহী বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উঠে আসে কামধেনু প্রকল্পের কথাও। তিনি বলেন দুগ্ধ উৎপাদনের লক্ষ্যে পঁচিশটি ক্লাস্টার করে জার্সি গাই পালনের পরিকল্পনা রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন "১৯৭২ সালে ত্রিপুরা পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা পেয়েছে। কিন্তু আজও রাজ্যকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারিনি।" এর জন্য তিনি সবাইকে স্বনির্ভর হয়ে উঠার পরামর্শ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন এরমধ্যে ত্রিপুরায় ২৬৪৫ টি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইউনিটি তৈরি হয়েছে।রাজ্যে জব ক্রিয়েটর বাড়ছে। বাড়ছে সরোজগারীর সংখ্যাও।এর উপর ভর করে বেড়েছে মাথাপিছু আয়ও। বর্তমান সরকারের কর্মতৎপরতার ফলেই মধ্যস্বত্বভোগীদের হাত থেকে কৃষকরা মুক্ত হয়েছেন বলেও জানান মূখ্যমন্ত্রী। বাজারের সাথে তাল রেখে বর্ধিত মূল্যের সুফল এখন কৃষকরাও পাচ্ছেন বলেও জানান তিনি।
কাকড়াবন ব্লক এলাকার নাগরিকদের উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ২০১৭-১৮ সালে এমজিএন রেগায় কাজ হয়েছিল ৩৬.২৫ শতাংশ, এখন বেড়ে হয়েছে ৫৯.৪১ শতাংশ। ২০১৭-১৮ সালে কাজ হয়েছিল ৪,২৩৮৭৩ শ্রমদিবসে। ২০১৯-২০২০ অর্থবর্ষে কাজ হয়েছে ৭ লক্ষ ৩৮৭ শ্রমদিবস।
আয়ুষ্মান ভারত যোজনার মাধ্যমে ত্রিপুরায় এখন নয় লক্ষ কার্ড তৈরি হয়েছে। এরমধ্যে কাকড়াবন ব্লকে ২১ হাজার ৫৪৭ টি এই কার্ড দেয়া হয়েছে। ৬০.১৬ শতাংশ সুবিধাভোগীর হাতে কার্ড পৌঁছে দেয়া সম্ভব হয়েছে। বাকি কাজও দ্রুত সম্পন্ন হবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। কাকড়াবন প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র কে কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে উন্নীত করার কাজও দ্রুত এগিয়ে চলেছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। হাসপাতালটির চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার সুবিধায় বারটি স্টাফ কোয়াটার নির্মাণাধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।
এই এলাকায় একটি মার্কেট সেডের নির্মাণের কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিগত অর্থবছরে কাকড়াবন ব্লক এলাকায় ১৫.৯৫ কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা ৯ কোটি ৫৯২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কৃষক সম্মান নিধি যোজনায় এই ব্লক এলাকায় ৩৮১৭ জন কৃষক সুবিধা পেয়েছেন বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন চলতি বছরেই শিলঘাট,কিশোরগঞ্জ, ও কাঁকড়াবনে তিনটি জল শোধনাগার স্থাপন করা হবে। সৌভাগ্য যোজনা ২৭১১ টি ঘরে পৌঁছে দেয়া হয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ।একই সাথে এই ব্লক এলাকায় অটল জলধারা মিশনে পৌঁছে দেয়া হয়েছে ৪৩২ টি সংযোগ।
কাকড়াবন ব্লক এলাকায় ৭৫২ জন সামাজিক ভাতায় সুবিধাভোগী রয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনও তিনি সামাজিক ভাতা থেকে শুরু করে সরকারি কর্মচারীদের দাবি-দাওয়া পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের অর্থ সাহায্য এলেই পূরণ করা হবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী প্রনজিৎ সিংহ রায়, বিধায়ক রাম পদ জমাতিয়া, রতন ভৌমিক সহ অন্যান্যরা।