Hare to Whatsapp
ব্যাপক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে গোটা দেশে অনুকরণীয় হয়ে উঠবে ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থাঃ মুখ্যমন্ত্রী।
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ১৬, : আগামী ৮-১০ বছরের মধ্যে ত্রিপুরার শিক্ষাব্যবস্থা এতটাই শক্তিশালী হবে যে, গোটা দেশে অনুকরণীয় হয়ে উঠবে। এই লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি রাজ্যের মেরুদন্ডকে শক্তিশালী করছে। রবিবার কুমারঘাটে শ্রী শ্রী ঠাকুর অনুকূল চন্দ্র দেবের ১৩২ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে ঊনকোটি জেলা ভিত্তিক উৎসবে অংশগ্রহণ করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন যুব সমাজকে সঠিক দিকে ধাবিত করার কাজ করে চলেছে বর্তমান সরকার। এ লক্ষ্যে শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক উন্নয়ন, নেশা মুক্ত ত্রিপুরা গঠন ও নিয়মানুবর্তিতার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে বর্তমান সরকার। শিক্ষার সামগ্রিক উন্নয়নে ২১ টি নতুন পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই পরিবর্তিত শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ এবং গুণগত মানসম্পন্ন শিক্ষার প্রসার লাভ করবে।
এর প্রথম ধাপ হিসেবে এনসিইআরটি সিলেবাস চালু করা হয়েছে। জাতীয় ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় রাজ্যের শিক্ষার্থীরা বরাবরই পিছিয়ে থাকতো। এর অন্যতম কারণ হল সেই পুরনো সিলেবাস। সেই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে রাজ্য সরকার প্রথমেই এনসিইআরটি সিলেবাস চালু করেছে। খুব অল্প সময়ে তা চালু করার জন্য গোটা দেশের রাজ্য প্রশংসিত হয়েছে।
শুধু তাই নয়, পাঠ্যক্রমের সময় পরিবর্তন করা হয়েছে। যাতে জাতীয় ব্যবস্থার সঙ্গে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা তাল মেলাতে পারে। সেই বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। পাশাপাশি পরীক্ষা পদ্ধতিকে কেন্দ্রীয় করন করা হয়েছে। যার মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকার ছাত্রছাত্রীরাও ততটাই প্রস্তুত হতে পারবে, যতটা শহর আগরতলার বনেদি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা প্রস্তুত হতে পারছে।
প্রসঙ্গত বিধানসভা অধিবেশনে বিরোধী দলনেতা শ্রী মানিক সরকারের করা একটি প্রশ্নের কথা উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। শ্রী মানিক সরকার বলেছিলেন যে নতুন সরকারের গৃহীত নীতির ফলে গ্রামের লোক চাকরি পাবে না। মুখ্যমন্ত্রী বলেন গ্রামকে শক্তিশালী করার জন্যই শিক্ষা ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানো হয়েছে।
এছাড়া শিক্ষক অভিভাবক বৈঠকের কথাও তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন সদ্য অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ৮ লক্ষ অভিভাবক অংশগ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ৭০ শতাংশই মহিলা। যা রাজ্যে আগে কোনও দিন হয়নি। বলেন জবাবদিহি শিক্ষাব্যবস্থা তৈরি করার লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
এছাড়া সামার ট্রেনিং, নতুন দিশা, লক্ষ্য ইত্যাদি প্রকল্পের কথা তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী। বলেন এই প্রথম রাজ্য থেকে ৩০ জন শিক্ষার্থীকে বহিঃরাজ্যে ইউ পি এস সি পরীক্ষার জন্য কোচিং এর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এজন্য জন প্রতি এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা করে খরচ করছে রাজ্য সরকার।
এছাড়া কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষার ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের আর এক বছর অপেক্ষা করতে হবে না। এখন সংশ্লিষ্ট বছরে কয়েক মাসের ব্যবধানেই সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে গিয়ে কার্যত পথভ্রষ্ট হত ছাত্রছাত্রীরা। যা আখেরে যুবসমাজের বিপদ ডেকে আনে।
এছাড়া গোটা শিক্ষা ব্যবস্থায় নজরদারি আরো জোরদার করা হয়েছে। শিক্ষকদের এসিআর লেখা হচ্ছে। গোটা ব্যবস্থাকে কম্পিউটারাইজড করা হয়েছে। এখন মিছিল-মিটিং করার সুযোগ বা প্রয়োজন হয়না শিক্ষক-শিক্ষিকাদের। এই পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরার শিক্ষা ব্যবস্থা আগামী ৮-১০ বছরে অনুকরণীয় হয়ে উঠবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।