Hare to Whatsapp
প্রেস কাউন্সিল টিমকে ত্রিপুরার সংবাদ মাধ্যমের দুরাবস্হার কথা বিস্তৃত অবহিত করলো এসেম্বলী অব জার্নালিস্ট
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ২৯, : আগরতলা, ২৯ মার্চঃ রাজ্য সফরে আসা প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার তিন সদস্যের প্রতিনিধি দলের সামনে গতকাল 28 মার্চ রবিবার রাজ্যের সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমের দুরাবস্থার চিত্র তুলে ধরে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস। উত্তর পূর্বাঞ্চল, জম্মু কাশ্মীর সহ দেশের বিভিন্ন হিংসাদীর্ন অঞ্চলে সাংবাদিকদের পরিস্থিতির খোঁজ খবর নিতে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার এই প্রতিনিধি দল তিনদিনের রাজ্য সফরে আসে।
অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস'য়ের প্রতিনিধিরা তাদের সঙ্গে দেখা করে রাজ্যে সংবাদ মাধ্যমের কন্ঠরোধ করা ও টুটিঁ টিপে ধরার চেষ্ঠা সহ যে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি চলছে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন স্মারকলিপিতে।
প্রথমেই কাঞ্চনপুরের বিকাশ দাসের উপর দুস্কৃতিকারীদের প্রাণঘাতী হামলার পর তাকে ধর্ষণের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়। বিষয়টি তদন্ত শুরুর আগেই মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় বিবৃতি দিয়ে ঘটনায় ইতি টেনে দেন যা শুনে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিরা বিস্ময় প্রকাশ করেন।
গতবছর ১১ সেপ্টেম্বর প্রকাশ্য জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব প্রকাশ্যে সংবাদ মাধ্যমকে দেখে নেওয়ার হুমকির পর কিভাবে প্রশাসন ও দলীয় দুস্কৃতিরা সংবাদ মাধ্যমের উপর একের পর এক আক্রমণ করছে তা সবিস্তারে তুলে ধরা হয়।
মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির পর রাজ্যে সংবাদ মাধ্যমের উপর আক্রমনের ২২টি ঘটনা ঘটেছে। কোন ঘটনাতেই অভিযুক্তদেরকে বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়নি পুলিশ। যে কজন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, মামলার দুর্বলতার সুযোগে ও লঘুধারার কারনে সবাই সঙ্গে সঙ্গে জামিন পেয়ে গেছে তা শোনেও পি, সি, আই -র প্রতিনিধিরা উষ্মা প্রকাশ করেন। করোনা মহামারীর সময়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দুর্বলতা নিয়ে খবর করার জন্য দৈনিক সংবাদ ও স্যন্দন পত্রিকাকে আইনী জালে ফাঁসানোর চেষ্ঠা হয়। কৃষি দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে খবর প্রকাশের পর উদয়পুরে প্রতিবাদি কলম পত্রিকা ছিনতাই করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রন্ত্রীর নেপাল ও শ্রীলঙ্কায় বি জে পি শাসন প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের উপর টকশো'র মৃনালিনী ই এন এন টিভি চ্যানেলের উপর প্রশাসনিক চাপের বিষয়টিও জানানো হয়। যাতে মুখ্যমন্ত্রীকে নিয়ে ভবিষ্যতে কোনদিন সমালোচনা না হয়, এনিয়ে চ্যানেল টিকে শাসানো হয়। এমন কি চ্যানেল বন্ধ করে দেওয়ার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা শাসক। ডেইলি দেশের কথার সাংবাদিক, হকার ও পাঠকদের উপর তিন বছর ধরে যে রাজ্যজুড়ে নির্যাতন চলছে তাও জানানো হয়। তথ্য দপ্তরে সাংবাদিকদের এক্রেডিকেশন কার্ড দেওয়া নিয়ে যে বৈষম্য ও দুর্নীতি চলছে তারও তথ্য তুলে ধরা হয়।
এছাড়া সরকারি কাজকর্মের সমালোচক সংবাদ প্রতিষ্ঠান গুলির প্রতি বিজ্ঞাপন বৈষম্যের তথ্যও সবিস্তারে প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার সদস্যদের সামনে তুলে ধরা হয়। প্রতিনিধিরা অভিযোগ গুলি গুরুত্ব দিয়ে শোনেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এই আলোচনায় অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস'য়ের প্রতিনিধি দলে ছিলেন সংগঠনের সভাপতি সুবল কুমার দে, সহ-সভাপতি শেখর দত্ত, অরুণ নাথ, সমীর পাল ও সমীর ধর, সাধারণ সম্পাদক শানিত দেবরায়, সম্পাদক ডঃ বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য ও জয়ন্ত দেবনাথ, প্রচার সচিব সম্রাট চৌধুরী ও সদস্য অভিজিৎ নাথ।