Hare to Whatsapp
এডিসি ভোটঃ আইপিএফটি-র সাথে জোটে ক্ষুব্ধ বিজেপি-র বহু নেতা, সমর্থকরা
By Our Correspondent
আগরতলা, মার্চ ১১, : পাহাড়ে এডিসি ভোটে বিজেপি-আইপিএফটির মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে দুই দলের ক্ষেত্র পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মধ্যেই একটা চাপা উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। এডিসি ভোটের দিনক্ষন ঘোষণার অনেক আগে থেকেই দুই দলের এমএলএ, নেতা মন্ত্রীরা বলে এসেছেন তারা পৃথক পৃথক ভাবে এডিসি ভোটে লড়াই করবেন। এবং আইপিএফটি একবার তিপ্রা দলের সাথে ঐক্যবদ্ধ ভাবে এডিসি ভোটে লড়াই করার কথা সাংবাদিক সন্মেলন করেই ঘোষণা করেন। এই অনুযায়ী বিজেপি-র জনজাতি মোর্চা প্রধান সাংসদ রেবতি ত্রিপুরাও ঘোষণা দেন বিজেপি একাই ২৮টি আসনে লড়াই করবে। এবং এই অনুযায়ী তারা ২৮টি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীর নামও চূড়ান্ত করে নেন। কিন্তু এরই মধ্যে দিল্লীর নির্দেশ ও সিদ্ধান্তে হঠাৎ করে রাজ্য বিজেপি ও আইপিএফটি-র শীর্ষ নেতৃত্ব পর্যায়ে কথাবার্তা শেষে আইপিএফটিকে ১৭টি আসনে প্রার্থী দেওয়ার অনুমোদন দেওয়ার সিদ্ধান্তে স্বাভাবতই বিজেপি-র জনজাতি মোর্চা ও উপজাতি এমএলএ দের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তিনটি আসনে বন্ধুত্বপূর্ন লড়াই-র সিদ্ধান্তে।
বিজেপি-র সাংসদ রেবতি ত্রিপুরা একাধিক দিন বলেছেন, বন্ধুত্বপূর্ন লড়াই হলে ২৮টি আসনেই লড়াই হোক। কিন্তু এটা না করে আইপিএফটি-র সুবিধা অনুযায়ী মাত্র তিনটি আসনে কেন বন্ধুত্বপূর্ন লড়াই-র সিদ্ধান্ত হলো এটা বিজেপি-র উপজাতি নেতৃত্ব কোনভাবেই মেনে নিতে আরছেন না।
উদ্ভত অবস্থার প্রেক্ষিতে গত ৯ই মার্চ সন্ধ্যা রাতে বিজেপি আইপিএফটি-র মধ্যে এডিসি ভোটের আসন সমঝোতার সিদ্ধান্ত পাকাপাকি হওয়ার ঘোষণা হতেই রাজ্যের বেশ কিছু এডিসি আসনে বিজেপির কর্মী সমর্থকদের মধ্যে ক্ষোভ বিক্ষোভ শুরু হয়ে যায়। বিশেষত আমবাসা, গন্ডাছড়া, রাইমাভ্যালি, তৈদু, অম্পি, অমরপুর, খোয়াই, কল্যানপুর, রামচন্দ্রঘাট, তেলিয়ামুড়া, কৃষ্ণপুর, করবুক, করমছড়া, গোলাঘাটি, টাকারজলা, বাগমা এলাকার বিজেপি-র উপজাতি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বেশী ক্ষোভ বিক্ষোভের খবর আসছে। এখন পর্যন্ত বিজেপি কোন আসনেই তাঁদের প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমা দিতে পারেনি।
পক্ষান্তরে, সিপিএম, কংগ্রেস, তিপ্রা মথা এমনকি আইএনপিটি পর্যন্ত অধিকাংশ সিটে তাঁদের প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে দিয়েছেন। শুধু বিজেপি ও আইপিএফটির প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া বাকি।
জানা গেছে, বিজেপি-র অম্পিনগর মন্ডলের সমর্থকরা সেখানে আইপিএফটির জনক হরি জমাতিয়াকে প্রার্থী করাতে এতটাই ক্ষুব্ধ হয়েছেন সেখানকার মন্ডল অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন খোদ বিজেপি কর্মীরা।
একই রকমভাবে আমবাসার এমএলএ পরিমল দেববর্মা এডিসি ভোটের প্রার্থী বাছাই ও আইপিএফটির সাথে আসন সমঝোতা নিয়ে এতটাই রাগ করেন যে তার মান ভাঙ্গাতে শেষ পর্যন্ত খোদ দিল্লীর দলীয় পর্যবেক্ষক বিনোধ সোনকর, মুখ্যমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি ডাঃ মানিক সাহাকে আমবাসা ছুটে যেতে হয়েছে।
একই রকমভাবে কল্যানপুর, কৃষ্ণপুর, বাগমার বিজেপি বিধায়করা দলের উপজাতি মোর্চা ও এমএলএ দের সাথে কথা না বলে আইপিএফটি-র সাথে আসন সমঝোতা করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এতে তারা অপমানিত বোধ করেন। এবং অনেকেই ৯ই মার্চ এর আস্তাবলের তিন বছরের পূর্তি অনুষ্ঠানে অংশ নেননি।
উদ্ভত অবস্থার প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেছেন আসন্ন এডিসি ভোটে বিজেপি আইপিএফটির শীর্ষ মহলের মনগড়া সিদ্ধান্তে দলের নীচুস্তরের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে যে ক্ষোভ বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে তার দ্রুত আশু সমাধান না হলে ভোটের ফলাফলে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য। এবং আগামী দিনে ভোটের প্রচার ইত্যাদি ক্ষেত্রেও তার প্রভাব পড়বে।