Hare to Whatsapp
শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করতে ২১ দফা কর্মসূচি গৃহীতঃ মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, ফেব্রুয়ারি ১৩, : ২৩ মাসে ত্রিপুরা সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে ২১ টি নতুন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে,যা গোটা দেশের মধ্যে বিরল ঘটনা। বুধবার কল্যাণপুর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের দ্বার উদঘাটন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
এছাড়াও তিনি, নতুন দিশা, শিক্ষা দর্পন, মেগা পেরেন্টস টিচার মিটিং, সেন্ট্রালাইজড এক্সাম, এসিআর ফর অল টিচার, স্কুল ট্রেনিং, পঞ্চাশ টি নতুন স্কুল খোলা, ২৮ টি বাংলা মাধ্যম স্কুল কে ইংরেজি মাধ্যমে পরিবর্তন করা, এনসিআরটি সিলেবাস, ট্রান্সপোর্টেশন স্কিম সহ অন্যান্য অভিনব পদক্ষেপ গুলির কথা।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গত সরকারের ২৫ বছর এবং তার আগের ১০ বছর, সরকারের দলবাজি দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই ভেঙে পড়ে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থা। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, বিশাল সংখ্যক শিক্ষক পদ পূরণের লক্ষ্যে যে টেট পরীক্ষা নেয়া হয়, তাতে এক লক্ষ ষোল হাজার পরীক্ষার্থীর মধ্যে মাত্র বারোশ এর মত উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হয়েছে। শিক্ষাব্যবস্থায় বিগত সরকারের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ফলেই এমনটি হয়েছে বলে অভিমত ব্যাক্ত মূখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন "জীবনে তিনটি জায়গায় আমরা পয়সা লাগাতে চাই।" সেই তিনটি জায়গা হিসেবে শিক্ষা,স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের কথা তিনি উল্লেখ করেন। আর এই সব ক্ষেত্রেই রাজ্যের সাধারণ মানুষের চিন্তার দায়ভার সরকার গ্রহণ করেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন "ধীরুভাই আম্বানি এবং মুকেশ আম্বানির মত শিল্পপতিরা তাদের ছেলেমেয়েদের নিয়ে যতটা চিন্তা করে, ততটাই চিন্তা করে কল্যাণপুরের গরিব মা বাবা ও।" তিনি বলেন "শিক্ষা বিনয় দান করে, শিক্ষা জাতির মেরুদন্ড,স্বদেশে পূজ্যতে রাজা বিদ্বান সর্বত্র পূজ্যতে।" বাস্তবে সেগুলিকে পরিণত করাই সরকারের কাজ।
মিশন "থার্টি থার্টি" নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন। ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে যারা ষান্মাসিক পরীক্ষায় ভালো ফল করেনি, তাদের বার্ষিক পরীক্ষার ৩০ দিন আগে থেকেই বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে সরকার। এর জন্য ৫৫৮ জন অফিসারকে প্রশিক্ষণ দিয়ে নিয়োগ করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। এখন পর্যন্ত ৩৮৮২ টি স্কুলের মধ্যে ইন্সপেকশন হয়েছে। ২১,৮৩৪ জন ছাত্রছাত্রীকে সাহায্য করা হচ্ছে।
এদিন বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান সরকার দলমত নির্বিশেষে সবার জন্য কাজ করছে। এই প্রসঙ্গে কল্যাণপুর ব্লক এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি কথাও তিনি বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন। ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে এই এলাকায় ৪ লক্ষ ৩২ হাজার ৩১৯ শ্রমদিবসের কাজ দেয়া হয়েছে এমজিএন রেগায়।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ৩৩৭ টি ঘরের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ২০৮৩ টি শৌচালয় নির্মাণ করা হয়েছে। বিশ্ব ব্যাংক থেকে সাহায্য নিয়ে আরো ৮০০ শৌচালয় নির্মাণের কাজ হাতে নেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন কল্যাণপুরে ৮ কোটি ৭২ লক্ষ টাকা খরচ করে নির্মাণ করা হবে একটি হাসপাতাল। একই সাথে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য ২ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা ব্যয়ে কোয়াটারও নির্মাণ করা হবে। দুর্গাপূজার আগেই জনগণের স্বার্থে এই হাসপাতালের দ্বার খুলে দেয়া হবে বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দেন।
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন কল্যাণপুরে প্রায় ৯৯৭৩ টি পরিবারকে আয়ুষ্মান ত্রিপুরা কার্ড দেয়া হয়েছে। ২১৫৪ জন পেয়েছেন কিসান সম্মন নিধি। উজ্জ্বলা যোজনায় ৫ হাজার ৩১৪ জন মহিলাকে দেয়া হয়েছে নতুন এলপিজি সংযোগ। পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে দিতে, চারটি স্থানে বসানো হবে ডিপ টিউবওয়েল, নদী ভাঙ্গন রোধে ও সরকার পদক্ষেপ নিয়েছে। আদর্শগ্রাম যোজনায় এই এলাকার দুটি তপশিলি জাতিভুক্ত গ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী।
এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী শ্রী রতন লাল নাথ, বিধানসভার মুখ্য সচেতক শ্রীমতী কল্যাণী রায়, বিধায়ক শ্রী পিনাকি দাস চৌধুরি সহ অন্যান্যরা।