Hare to Whatsapp
বন্ধের খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে দুই জায়গায় দুই সাংবাদিকের উপর হামলা, এসেম্বলী অব জার্নালিস্টের নিন্দা
By Our Correspondent
আগরতলা, নভেম্বর ২৬, : আগরতলা, ২৬ নভেম্বরঃ কর্তব্য পালন করতে গিয়ে রাজ্যে আবার আক্রান্ত দূই সাংবাদিক। বৃহস্পতিবার ধর্মঘটের খবর ও ছবি সংগ্রহ করতে গিয়ে বক্সনগরে শাসক দল সমর্থক দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত ও আহত হন উদয়পুরের দুরন্ত টিভি-র সাংবাদিক শরিফ আহমেদ।
অনুরূপভাবে, আগরতলায় SUCI পার্টি অফিসের আক্রমণের ছবি তুলতে গেলে হেনস্থা করা হয় চিত্র সাংবাদিক চিন্টু রায় দেববর্মণকে। তার হাতের মোবাইল নিয়ে ডিলিট করে দেয় সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ। পুলিশের সামনেই ঘটে ঘটনা। পুলিশ টি.এস.আর নীরব ভূমিকায় ছিল। রাজ্যে সাংবাদিকদের বৃহত্তম ঐক্যমঞ্চ অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা করছে এবং অবিলম্বে দোষীদের গ্রেফতার ও উপযুক্ত সাজার দাবি জানাচ্ছে।
অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছে যে, সংবাদ মাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রীর দেখে নেওয়ার হুমকির পর রাজ্যে সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে এবং গত আড়াই মাসে কমপক্ষে ১৪ জন সাংবাদিক দুর্বৃত্তদের আক্রমণের শিকার হয়েছেন।
দুর্ভাগ্যজনকভাবে, সরকার কিংবা শাসকদল একটি ঘটনারও নিন্দা করেনি বা দোষীদের শাস্তির দাবি পর্যন্ত জানায়নি। ফলে, শাসকদলের ছায়ায় আশ্রিত দুষ্কৃতীরা সংবাদিকদের উপর লাগাতর আক্রমণে সাহস পাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকালে দুরন্ত টিভির সাংবাদিক শরিফ আহমেদ বক্সনগর বাসস্ট্যান্ডে বনধের খবর সংগ্রহ করতে গেলে বিজেপি যুব মোর্চার বক্সনগর সভাপতি জিমুল হক তার উপর হামলা চালায়। জিমুল হকের নেতৃত্বে রাসেল মিয়াঁ ও দুলাল শীল তাকে শারীরিকভাবে নিগ্রহ করে। এতে শরিফের মাথায় হাতে প্রচন্ড আঘাত লাগে। তিনি বর্তমানে বক্সনগর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
১১ সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির পর আজকে পর্যন্ত প্রতিটি ঘটনাতে লিখিত অভিযোগ জানানোর পরও পুলিশের কোনও তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না। কিছু ক্ষেত্রে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হলেও লঘু ধারা দিয়ে এদের জামিনে ছাড়া পাওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস রাজ্যের এই অগণতান্ত্রিক পরিবেশে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন এবং উদ্ভুত পরিস্থিতিতে সরকারের দ্রুত ইতিবাচক পদক্ষেপ আশা করে।
স্বাধীন ভারতের ইতিহাসে দেশের কোনও মুখ্যমন্ত্রীকেই এইভাবে সংবাদ মাধ্যম বিরোধী মানসিকতা নিয়ে কাজ করতে দেখা যায়নি।
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে উদয়পুরের ছনবনে দুরন্ত টিভি‘র অফিসে দুর্বত্তরা ঢুকে কর্মরত স্টাফদের ধমক দিয়ে গেছে, সেখানে যেন তারা আর কাজ না করেন এবং যেন তারা অফিস খালি করে বাড়ি চলে যান৷ অন্যথায় তাদের ভয়ংকর পরিণতি হবে বলে শাসিয়ে যায়৷ এমনকি প্রাণনাশেরও হুমকি দেয়।
ক’দিন আগে উদয়পুরে ‘জি ত্রিপুরা’ নামে একটি সংবাদ চ্যানেলের উপর আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে৷ তার আগে প্রতিবাদী কলম পত্রিকার প্যাকেট গাড়ি থেকে নামিয়ে ছিঁড়ে ফেলে ও আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল দুর্বৃত্তরা৷ রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় মিডিয়া হাউস এবং সাংবাদিকরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন গত আড়াই মাসে।
রাজ্য সরকারের সংবাদ মাধ্যম-বিরোধী ভূমিকা গণতান্ত্রিক অধিকার ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ৷ ভারতের সংবিধান বহির্ভূত এই স্বৈরাচারী ও অগণতান্ত্রিক পথ থেকে অবিলম্বে সরে আসতে রাজ্য সরকারকে অনুরোধ করছে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস৷
সুবল কুমার দে
চেয়ারম্যান, অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস এক বিবৃতিতে সাংবিধানিকদের উপর পর পর এসব হামলার ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।