Hare to Whatsapp
সংবাদ মাধ্যমকে মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির প্রতিবাদে রাজ্য জুড়ে জার্নালিস্টসের আন্দোলনকে বানচাল করার প্রশাসনিক উদ্যোগ চলছে: অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্ট
By Our Correspondent
আগরতলা, অক্টোম্বর ১৯, : এবার প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে সাংবাদিকদের আন্দোলন বানচালের চেষ্টা শুরু হয়েছে। এর অংগ হিসেবেই আজ মুখ্যমন্ত্রী সম্পাদক ও বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের একটি বৈঠকে আমন্ত্রন জানান। সংবাদ মাধ্যমকে হুমকি দিয়ে, একের পর এক সাংবাদিক আক্রমনের ঘটনায় কোন ব্যবস্থা না নিয়ে সম্পাদক ও বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের নিমন্ত্রণ করা কোন বিশেষ উদ্দেশ্য প্রনোদিত বলে মনে করে, অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস। রাজ্যের সাংবাদিকদের মধ্যে অবিশ্বাসের বাতাবরণ সৃষ্ঠি করতেই প্রশাসনের এই উদ্যোগ বলে মনে করা হচ্ছে।
অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস' বিষয়টি স্পষ্ট করতে চায় যে, এই সংগঠনের কোন সদস্য বা সম্পাদক ও সাংবাদিক এই অনুষ্টানে অংশ নেননি। যতক্ষন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব উনার হুমকীর জন্য ক্ষমা না চাইবেন, অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস সরকারের কোন আমন্ত্রণ গ্রহণ করবে না। বরং যতদিন পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া হুমকি প্রত্যাহার করে ক্ষমা না চাইবেন ও সংবাদসূত্র বন্ধ করার নির্দেশনামা বাতিল করে স্বাধীন সাংবাদিকতার প্রতিশ্রুতি না দবেন রাজ্যব্যাপী সাংবাদিকদের আন্দোলন আরো তীব্র হবে।
অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্ট -এর দাবী আগে মিডিয়া-কে দেওয়া মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি এবং সংবাদের উত্সে তালা মারা সরকারি সার্কুলার প্রত্যাহার করা হোক। সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ, দমন পীড়ন বন্ধ হোক। তার আগে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কোথাও বসার প্রশ্ন ওঠে না। আজ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব-এর সঙ্গে সাক্ষাতের আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিয়ে এ কথাই বললেন ত্রিপুরার প্রবীণ সাংবাদিকরা। সোমবার বেলা আড়াইটায় এই সাক্ষাতের ব্যবস্থা হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে।
আনুষ্ঠানিকভাবে অবশ্য জিএসটি এবং 'প্রধানমন্ত্রীর আত্মনির্ভর ভারত' ইত্যাদি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে চান বলে বিপ্লব দেব-এর 'অফিসার অন স্পেশাল ডিউটি' সঞ্জয় মিশ্র দশ জন সাংবাদিককে ফোনে বিশেষভাবে আমন্ত্রণ জানান। কিন্তু উপস্থিত ছিলেন মাত্র দুই জন।
গত ১১ সেপ্টেম্বর সংবাদ মাধ্যমের একাংশকে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য হুমকি এবং রাজ্যের নানা জায়গায় সাংবাদিকদের উপর শাসক দলের সমর্থকদের আক্রমণের প্রেক্ষিতে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস-এর ডাকে রাজ্যের প্রায় সর্বস্তরের সাংবাদিকরাই পথে নেমেছেন। ১৫ অক্টোবর আগরতলায় রাজ্যভিত্তিক গণঅবস্থানে ঐক্যের চেহারাও স্পষ্ট ছিল। ১৭ অক্টোবর আবার বিশালগড়ের দুজন সাংবাদিক আক্রান্ত হতেই জরুরি বৈঠকে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস-এর কার্যকরী কমিটি প্রয়োজনে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব-কে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর পরই আজ মুখ্যমন্ত্রীর অফিসের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যানের ঘটনা।
এদিকে, লক্ষণীয় ভাবেই বেশ কিছু দিন ধরে রাজ্যের কোনও প্রথম সারির দৈনিক প্রথম পাতায় মুখ্যমন্ত্রীর ছবি ছাপছে না। বিপ্লব দেব-কে মুখ্যমন্ত্রীর কুর্সি থেকে সরানোর জন্য বিক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়করা যে তৎপরতা চালাচ্ছেন, তার সঙ্গে আপনাদের যোগ আছে ? এই জিজ্ঞাসার জবাবে অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস-এর চেয়ারম্যান, আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুবলকুমার দে বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বানানো বা বদলানো আমাদের কাজ নয়। আমরা সংবিধান-প্রদত্ত মত প্রকাশের স্বাধীনতা ফিরে পেতে চাই। এই রাজ্যে সেটা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত।
এদিকে, আগরতলা প্রেস ক্লাবের একটি হলঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা উদ্বোধনের নামে সোমবার উপমুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মাকে দিয়ে সরকারি উদ্যোগে অনুষ্ঠান করায় তুমুল বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। ৮ নভেম্বর প্রেস ক্লাবের নির্বাচন । ঘোষণা হয়েছে আগেই। এ সময় এই উদ্বোধন সম্পূর্ণ অনৈতিক এবং অবৈধ জানিয়ে ক্লাব সভাপতি সমেত প্রায় সব সাংবাদিকই অনুষ্ঠান বয়কট করেছেন বলে খবর। এ সম্পর্কে জানতে চাইলে আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি সুবল দে বলেন,
প্রেস ক্লাবের নির্বাচনী প্রক্রিয়া চলছে। ম্যানেজিং কমিটিকে ঘুমে রেখে শীততাপ যন্ত্রের উদ্বোধন হয়েছে। অনেক সদস্য আপত্তি করেছেন। অনুস্টানটি অনায়াসে নির্বাচনের পর করা যেতো। আমি অনৈতিক কাজের সাথে নেই বলেই যাইনি।