Hare to Whatsapp
মুখ্যমন্ত্রীর হুমকী প্রত্যাহারের দাবিতে সাংবাদিকরা রাজ্যপালের দ্বারস্থ হলেন
By Our Correspondent
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২০, : গত ১১ সেপ্টেম্বর সাব্রুমে প্রকাশ্য সভায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সংবাদমাধ্যমকে দেখে নেওয়া ও ক্ষমা না করার হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টের ঘোষিত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবার সাংবাদিকদের এক প্রতিনিধিদল রাজভবনে মহামান্য রাজ্যপাল রমেশ বৈশ-র সাথে দেখা করেন। প্রতিনিধি দলটি রাজ্যপালের হাতে তিন পাতার একটি স্মারকলিপি তুলে দেন। আলোচনা শুরুর আগে স্মারকলিপিটি তিনি মনোযোগের সাথে পড়েন।
মুখ্যমন্ত্রীর হুমকি এবং সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমের সাথে সরকারের অনাকাঙ্ক্ষিত সম্পর্কের ঘটনায় তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রে সরকার এবং গণমাধ্যমের মধ্যে ইতিবাচক থাকা উচিত। গণতন্ত্রে শাসকপক্ষের সমালোচনা গ্রহণ করার ক্ষমতা প্রত্যাশিত। তিনি বিস্তারিত বিষয়গুলো শুনে বলেন যে, তিনি এ ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করবেন। রাজ্যপাল বলেন যে সরকার ও সংবাদ মাধ্যমের মধ্যে ইতিবাচক সম্পর্ক যাতে গড়ে ওঠে সে ব্যাপারে তিনি উদ্যোগ নেবেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ সেপ্টেম্বর, মুখ্যমন্ত্রী সাব্রুমের প্রকাশ্য সভায় সংবাদমাধ্যমকে দেখে নেওয়ার হুমকির পরই সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের উপর আক্রোশমূলক প্রশাসনিক তৎপরতা আরও তীব্র হয়। মুখ্যমন্ত্রীর হুমকির পরিপ্রেক্ষিতে এ পর্যন্ত গত ক'দিনে চারজন সাংবাদিক আক্রান্ত ও রক্তাক্ত হয়েছেন। আশ্চর্যজনকভাবে, মুখ্যমন্ত্রী কোনও ঘটনারই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেননি। এছাড়া, সুনির্দিষ্ট এজাহার পুলিশে দায়ের করার পরও কোন অভিযুক্ত এখনো গ্রেপ্তার হয়নি, বরং সাংবাদিক এবং সংবাদমাধ্যমের উপর বিভিন্নভাবে চাপ ও হুমকি আরও বেড়েছে। পাশাপাশি, সাংবাদিকদের উপর আক্রমণও অব্যাহত রয়েছে। একইভাবে, সংবাদপত্রের বিরুদ্ধে নানাভাবে আর্থিক অবরোধ সৃষ্টি করা হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সংবাদপত্রগুলিকে হেনস্তা করার জন্য প্রশাসনিক অপচেষ্টা চলছে। রাজ্যপালকে সরকারের সংবাদপত্র বিরোধী বিভিন্ন কাজকর্ম ও পদক্ষেপের নথিপত্রসহ বিবরণ প্রতিনিধিদল অবহিত করেন।
প্রসঙ্গত, স্মারকলিপিতে এটাও উল্লেখ করা হয়েছে যে অপছন্দের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রত্যক্ষ মদতে কুৎসা রটনা এবং মিথ্যাচার করা হচ্ছে। এসব সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে নানাভাবে পেশাগত প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টাও চলছে সরকারী তরফে।
ত্রিপুরা অ্যাসেম্বলি অব জার্নালিস্টস গত ১৩ সেপ্টেম্বর সভা থেকে আশা প্রকাশ করেছিল, মুখ্যমন্ত্রী তার সংবাদপত্র বিরোধী অসাংবিধানিক বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন। কিন্তু দেখা গেলো, মুখ্যমন্ত্রী প্রকারান্তরে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রকে হেয় করার প্রয়াস আরও জোরদার করেছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে
সাংবাদিকদের প্রতিনিধিদল সাংবিধানিক প্রধান রাজ্যপালের সাথে মিলিত হন। প্রতিনিধিদলে ছিলেন সংগঠনের চেয়ারম্যান সুবল কুমার দে, আহ্বায়ক শেখর দত্ত, সদস্য পারমিতা লিভিংস্টোন, শাণিত দেবরায়, জয়ন্ত ভট্টাচার্য ও ড. বিশেন্দু ভট্টাচার্য।