Hare to Whatsapp
সংবাদ মাধ্যমকে হুমকিঃ মুখ্যমন্ত্রীকে আগামী তিন দিনের মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহারের দাবি জানাল ত্রিপুরা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স
By Our Correspondent
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ১৩, : আগরতলা, ১৩ সেপ্টেম্বরঃ সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব সাব্রুমের একটি সরকারি অনুষ্ঠানে রাজ্যের সাংবাদিক ও সংবাদ মাধ্যমকে প্রকাশ্যে হুমকির ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে গণমাধ্যম কর্মীদের যৌথ মঞ্চ ত্রিপুরা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স। আগরতলা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংগঠনের এক সভায় আজ মুখ্যমন্ত্রীর এজাতীয় গণতন্ত্র বিরোধী অসাংবিধানিক মন্তব্যের নিন্দা জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী, আগামী তিন দিনের মধ্যে তার বক্তব্য প্রত্যাহার করবেন বলে আশা প্রকাশ করেছে ত্রিপুরা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স।
ত্রিপুরা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স এক প্রেস বিবৃতিতে বলেছে, মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য হুমকির ২৪ ঘন্টার মধ্যে রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের উপর আক্রমণ ও হুমকি শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে, দুইজন কর্মরত সাংবাদিক দৈহিক ভাবে নিগৃহীত হয়েছেন, যা গোটা সাংবাদিক মহলকে এখন আতঙ্কিত করে তুলেছে।
আজকের সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর এজাতীয় হুমকি এবং রাজ্যের সংবাদ মাধ্যমের প্রতি সরকারের অসহিষ্ণু মনোভাবের বিষয়টি, ত্রিপুরার রাজ্যপাল, প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া, ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অফ জার্নালিস্ট, কমন ওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিসিয়েটিভ এবং এডিটরস গিল্ড সহ সংশ্লিষ্ট সব জায়গায় জানানো হবে।
আজকের সভায় "ফোরাম ফর প্রটেকশন অফ জার্নালিস্ট'স", এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স -র সাথে মিলিয়ে দেওয়া হয় এবং সাময়িক কালের জন্য এর কাজকর্ম পরিচালনার জন্য একটি এডহক কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক মনোনীত হয়েছেন যথাক্রমে, বরিষ্ঠ সম্পাদক সুবল কুমার দে ও প্রবীন সাংবাদিক শেখর দত্ত। এছাড়া, সদস্য হিসেবে মনোনীত হয়েছেন প্রবীন সাংবাদিক পারমিতা লিভিংস্টোন, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, শানিত দেবরায়, ডঃ বিশ্বেন্দু ভট্টাচার্য, সমীর ধর, দেবাশীষ মজুমদার, ও রমাকান্ত দে।
সভায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে রাজ্যের সকল সাংবাদিকদের, দল মত বিশ্বাস ও আদর্শ নির্বিশেষে একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান, দৈনিক সংবাদের কার্যনির্বাহী সম্পাদক পারমিতা লিভিংস্টোন। তিনি সাংবাদিকদের একাত্ম হয়ে গনতন্ত্রের সার্থে কাজ করার অনুরোধ করেন। এছাড়া সরকারের সংবাদ মাধ্যম বিরোধী মনোভাব ও অসহিষ্ণু কর্মকান্ডের সমালোচনা করেন আজকের ফরিয়াদ পত্রিকার সম্পাদক শানিত দেবরায়, বরিষ্ঠ সাংবাদিক শেখর দত্ত, জয়ন্ত ভট্টাচার্য, সিতাংশু রঞ্জন দে ও উত্তম চক্রবর্তী প্রমুখ। সভার শুরুতে মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বরিষ্ঠ সম্পাদক সুবল কুমার দে বলেন, ত্রিপুরার সংবাদপত্র এবং সাংবাদিকরা চিরকালই নিস্ঠার সাথে গণতান্ত্রিক দায়বদ্ধতা পালন করে আসছে। ইতোপূর্বে চতুর্থ স্তম্ভের সাথে সরকারের কোন বিরোধ দেখা দিলে শেষ পযর্ন্ত আলোচনার মাধ্যমে তা মিটে গেছে। কিন্তূ গত বছর দুই ধরে পরিস্থিতি ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যাচ্ছে। রাষ্ট্রশক্তি সংবাদ মাধ্যমকে কেনা গোলামে পরিনত করতে চাইছে। সরকারী হুকুমনামা জারি করে সংবাদের সুত্র গুলোর মুখ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। সরকারী ভাবে সামাজিক মাধ্যমে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা করা হচ্ছে। এতে সরাসরি মুখ্যছমন্ত্রীর দপ্তরও জড়িয়ে যাচ্ছে। শাসক দল এবং সরকার প্রায় প্রতিদিন সাংবাদিক সম্মেলন করে সংবাদ মাধ্যমকে হুমকি দিচ্ছে। ত্রিপুরার মুখ্যংমন্ত্রী স্বয়ং প্রকাশ্য সভায় সংবাদ মাধ্যরমকে দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে গোটা গণমাধ্যমকে আতঙ্কের মধ্যে ঠেলে দিয়েছেন যা দেশে জরুরি অবস্থার সময়ও হয়নি।
আজকের সভা সর্বসম্মতভাবে সিদ্বান্ত নিয়েছে সরকারের সংবাদ মাধ্যম বিরোধী কোন অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড বা পদক্ষেপ সাংবাদিকরা মেনে নেবে না। এক্ষেত্রে, ত্রিপুরা এসেম্বলি অফ জার্নালিস্ট'স সরকারের সহযোগিতা আশা করে।