Hare to Whatsapp
শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, মুখ্যমন্ত্রীর স্বনির্ভর যোজনার বাস্তবায়নে ত্রিপুরা সরকার খুব ভালো কাজ করছেঃ বিজেপি
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ৩০, : শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল সহ বিজেপি-র আড়াই বছরের সময়কালে ত্রিপুরা সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে গেছে। দলের দু’দিনের রাজ্য কার্যকারিনী বৈঠক শেষে এক প্রেস রিলিজে একথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, বিরোধী দলগুলি ত্রিপুরার অগ্রগতি থেমে গেছে বলে মিথ্যা ও বিভ্রান্তি মূলক প্রচার করছে।
আজ বিজেপি রাজ্য সদর দপ্তরে আহূত কার্যকারিনী সভার সমাপ্তি দিবসের শুরুতেই রাজ্য সভাপতি উপস্থিত সবাইকে স্বাগত জানান এবং বর্তমানে করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ইতিবাচক পদক্ষেপ এবং কার্যকর্তাদের ভুমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংশা করেন। প্রথম পর্যায়ে রাষ্ট্রীয় মহামন্ত্রী শ্রী অরুন সিং এই ভার্চ্যুয়েল কার্য্যাকারিণীতে উপস্থিত সকলকে সম্বোধন করতে গিয়ে বলেন যে, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব-এর সদিচ্ছায় এবং কর্ম তৎপরতায় ত্রিপুরা বিকাশে অন্যধারায় এগিয়ে চলেছে। এমনকি বর্তমান অতিমারীর সময়েও সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহনের ফলে রাজ্যের মানুষ সুরক্ষিত রয়েছে। কার্যকর্তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন যে, ২০১৮ সালে এই রাজ্য থেকে কমিউনিস্টদের বিতরণ করে রাজ্যে বিজেপি সরকার প্রতিষ্ঠায় নিষ্ঠাবান কর্মীদের ভূমিকা গোটা দেশে এক অন্য নজির।
এই সভায় রাজনৈতিক প্রস্তাব উত্থাপন করেন ত্রিপুরা প্রদেশ বিজেপি’র মুখ্য প্রবক্তা শ্রী সুব্রত চক্রবর্তী। এই প্রস্তাবে বিশ্ব অতিমারী করোনা পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্য পরিষেবায় অত্যন্ত পারদর্শিতার সঙ্গে তার নিয়ন্ত্রনে গৃহীত ব্যবস্থাদি প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ যোজনা, আত্মনির্ভর ভারত এবং অন্যান্য দৃঢ় ও ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য তার প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাজ্যের ক্ষেত্রে হীরার বাস্তবায়ন ও হীরা প্লাস, মুখ্যমন্ত্রী স্বনির্ভর যোজনা, বিদুত, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পানীয় জল, জনজাতি কল্যান সহ সরকারের সুদৃঢ় প্রসারী সদর্থক উদ্যোগের উল্লেখ করেন ও বিরোধীদের নেতিবাচক জনস্বার্থ বিরোধী ও বিভ্রান্তিমূলক প্রয়াসের নিন্দা জানান। এই প্রস্তাবের সমর্থনে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন সাংসদ শ্রীমতি প্রতিমা ভৌমিক এবং শ্রী রাজীব ভট্টাচার্য্য। এরপর অর্থনৈতিক প্রস্তাব পেশ করেন ত্রিপুরা প্রদেশ সম্পাদক শ্রী যাদব লাল নাথ। এই প্রস্তাবে রাজ্যের উন্নয়নে কৃষি, বিপনন, উৎপাদন ক্ষেত্র এবং এম.এস.এম.ই-র দুর্বলতা দূর করে তাকে স্বয়ংম্ভরতার ভিত্তিতে রুপান্তরিত করার প্রস্তাব পেশ করেন। তার সমর্থনে আলোচনায় অংশ গ্রহন করেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যীষ্ণু দেববর্মন এবং রাজ্যের সহ-সভাপতি অশোক সিনহা। বিস্তৃত আলোচনার পর প্রস্তাব দুটি সর্বসম্মতিভাবে গৃহিত হয়। এরপর রাজ্য সহ-সভাপতি তথা বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া সংগঠনিক প্রস্তাব পেশ করেন। এতে সাংগঠনিক সর্বশেষ অবস্থা, কার্যকর্তাদের সমস্যা ও কার্যকর্তা নির্মান দলীয় শৃঙ্খলা ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা করেন। এরপর আসাম এবং ত্রিপুরার সংগঠন মহামন্ত্রী শ্রী ফনীন্দ্রনাথ শর্মা আগামীদিনের কর্মসূচী নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা করেন। যারমধ্যে উল্লেখ্য আগামী ১৭ই সেপ্টেম্বর ভারতবর্ষের যশস্বী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী’র ৭০তম জনদিন। তাই ১৪-২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচী পালনের মাধ্যমে সেবা সপ্তাহ রুপে দিনটি উদযাপিত করা হবে।
এছাড়া, ৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস। তাই ৫ এবং ৬ সেপ্টেম্বর দুইদিনব্যাপী বিদ্ধিজীবি সেলের উদ্যোগে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতি প্রসঙ্গে জেলা ও মন্ডল স্তরে বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করা হবে। এছাড়া আগামীদিনে দলের প্রশিক্ষন শিবির করা সহ অন্যান্য সাংগঠনিক বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে বিস্তৃত পথ নির্দেশিকা নিয়ে আলোচনা করেন। উত্তর পূর্বাঞ্চলের সাংগঠনিক মহামন্ত্রী শ্রী অজয় জাম্বুয়াল। বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন ক্ষমতা বিজেপি’এর মূল লক্ষ্য নয়। কিন্তু সমাজের কল্যাণ ও সমাজ পরিবর্তনের জন্য ক্ষমতা একটি মাধ্যম মাত্র। এই লক্ষ্য পূরণে বিজেপি’র সভানেত্রী শ্রীমতি বিজয়া রাহাতকর স্মার্ট সিটি প্রকল্পে ত্রিপুরার অবস্থান ৭৪তম স্থান থেকে ৫৬তম স্থানে আসা, ত্রিপুরায় অপরাধ প্রবনতা বিশেষ করে মহিলা সংক্রান্ত অপরাধ হ্রাস পাওয়ায় এবং ত্রিপুরাকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের লজেস্টিক হাব হিসাবে গড়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকারের ঐকান্তিক প্রয়াসে সন্তোষ ব্যক্ত করেন এবং মুখ্যমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। বিজেপি সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক শ্রী রাম মাধব রাজ্য বিজেপি সরকার তথা এবং দলের কাজে সন্তোষ ব্যক্ত করেন এবং দল মতের ঊর্দ্ধে উঠে দেশ গঠনের নিয়োজিত থাকার উপর গুরুত্ব আরপ করেন।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বক্তব্য রাখতে গিয়ে নেতৃত্ব নির্মান এবং জন সংযোগের উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, সরকার ও সংগঠনের সমন্বয়ের মাধ্যমে মানুষের কল্যাণই হচ্ছে প্রধান লক্ষ্য। রাজ্যের বর্তমান অগ্রগতির ধারাকে অব্যাহত রেখে ত্রিপুরাকে আর্থিক সমৃদ্ধির প্রদানের মাধ্যমে অষ্টলক্ষীর অন্যতম কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা করাই সরকারের মূল লক্ষ্য বলে মুখ্যমন্ত্রী অভিমত দেন।