Hare to Whatsapp
আনলকেও শিক্ষক শিক্ষিকাদের স্কুলে যাওয়ার ফতোয়া
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ৩০, : আনলক চতুর্থ পর্যায় চালু হতে না হতেই ব্যতিক্রমী পথে হাঁটতে শুরু করেছে বিজেপি শাসিত ত্রিপুরার শিক্ষা দপ্তর।শনিবার রাতেই দপ্তরের তরফে শিক্ষক শিক্ষিকাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে স্কুলে আসতে হবে। মেমোর প্রতিলিপি হোয়াটসঅ্যাপে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।স্কুল বন্ধ তবে ওরা স্কুলে গিয়ে কি করবে তা অবশ্য জানানো হয়নি। হয়তো তৎপর শিক্ষা মন্ত্রী রতন বাবু এখন কদম্ব ফুলের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন দিশা পাওয়ার আশায়।
রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের কথা অমৃত সমান।এর কথা যত কম বলা যায় ততই মহান।করোনা শুরু হতেই তখন সবকিছু বন্ধ হয়ে যেতে শুরু করল তখন রতন বাবু ঠান্ডা ঘরে বসে একের পর এক নির্দেশ দেয়া শুরু করলেন। শিক্ষক শিক্ষিকাদের বাধ্য করলেন স্কুলে যেতে। এঁরা কি করবেন, চাকরি তো বাঁচাতেই হবে।এরা শুরু করলেন স্কুলে যাওয়া আসা।গিয়ে করলেন কি? প্রথমে বসে থাকা।বসে থাকবেন এমন কমন রুম নেই। প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলির তো এমনিতেই বেহাল অবস্থা।তার উপর কমন রুম! অতএব দাড়িয়ে থাকা।ঠায় বিকাল তিনটা পর্যন্ত।এরপর পরীক্ষা,খাতা দেখা, উত্তর পত্র দেখা।ফলাফল প্রকাশের পর একেকজনের হাতে ধরিয়ে দেয়া হল ৫/৬ জন ছাত্র ছাত্রী র নামের তালিকা।ব্যস এবার জমির আল ধরে ছাত্র ছাত্রী দের বাড়ী বাড়ী যাওয়া, পড়াশোনা র খোঁজ খবর নেয়া। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অভিভাবক বাড়ীর গেট খুলেন নি।উল্টো ধমক খাওয়া।অভিভাবকরা জানতে চাইলেন লকডাউনে আপনারা এলেন কেন? ঠিক কথা। কিন্তু এঁরা কোন উত্তর দিতে পারেননি।
এরপর শিক্ষা মন্ত্রী শুরু করলেন তার বৃহত্তম কর্মযজ্ঞ। স্কুলের কোনায় কোনায়, জঙ্গলে, গাছের উপর উঠে নেইবারহুড নামে ক্লাস নেয়ার কর্মসূচি।মন্তীর বকলমে দায়িত্ব প্রাপ্তরা যা বলছেন তাই করছেন গোবেচারা প্রাইমারি শিক্ষক শিক্ষিকারা। ভিন্ন উপায় নেই। আগামী বছরের প্রথমদিকে অবসরে যাবেন এমন বয়স্ক শিক্ষক শিক্ষিকারা ও ছাড় পায়নি।
এখন শুরু হচ্ছে আন লক চতুর্থ পর্যায়।স্কুল কলেজ ৩০ শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বন্ধ। কিন্তু আনলক ঘোষনা মাত্র এ রাজ্যের শিক্ষাদপ্তর শনিবার রাতেই জারী করলেন নুতন হুলিয়া।না,না, বিদ্যালয়ে আসতেই হবে।কয়েকজন ফোনে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিকের কাছে জানতে চাইলেন তাঁরা কি করবেন স্কুলে গিয়ে।আগে আসুন,পরে কথা। অদ্ভুত সব কাণ্ড কারখানা।অথচ আগরতলা পুর এলাকায় করোনার প্রকোপ বাড়ছেই।খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। কিন্তু হলে কি হবে? উনার কথা কি আর শিক্ষা মন্ত্রী শুনেন!
এদিকে আরেক নুতন ফরমান।৫ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস।ওই দিন স্টেট ব্যান্ক অব ইন্ডিয়া শিক্ষকদের সন্মান জানাবেন।তাই প্রত্যেককে ব্যান্কে আসতে হবে। সেখানে একাউন্ট খুলতে হবে। একাউন্ট খোলার পর ৩০০০/ টাকা করে ঝৃন দেয়া হবে।অথচ অধিকাংশ শিক্ষক শিক্ষিকারা গ্রামীণ ব্যাংকের মাধ্যমে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন। যেখানে গ্রামীন ব্যাংক র মাধ্যমে বেতন-ভাতা পেয়ে থাকেন শিক্ষক শিক্ষিকারা সেখানে তাঁরা এসবিআইতে গিয়ে কি করবেন।সন্মান জানাতে চাইলে অন্যভাবে জানানো মেতে পারে। কিন্তু ফতোয়া জারী করে এসবিআই তে নিয়ে যাওয়া কেন? এটাও শিক্ষক শিক্ষিকাদের শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে বড় প্রাপ্তি!