প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং কাজের গতি আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, ডিসেম্বর ২৪, : নতুন ত্রিপুরা গঠনের লক্ষ্যে বর্তমান রাজ্য সরকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল, বিদ্যুৎ, ক্রীড়া সহ বিভিন্ন পরিকাঠামোর উন্নয়নে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, সড়ক যোগাযোগ ও কৃষিক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য নীতি আয়োগ ত্রিপুরাকে ফ্রন্ট রানার রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। রাজ্যের মাথাপিছু গড় আয় এবং জিএসডিপি'র ক্ষেত্রে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। ২৩ ডিসেম্বর খোয়াই ব্লকের ধলাবিল এলাকায় খোয়াই জেলা হাসপাতাল এবং ৫০ শয্যাবিশিষ্ট ড্রাগ ডি অ্যাডিকশন সেন্টার সহ ১১টি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথাগুলি বলেন। বিভিন্ন অতিথিদের উপস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী খোয়াই জেলা হাসপাতালের নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ভূমি পূজন, ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ও ফলক উন্মোচন করেন। এরপর চারা গাছে জল সিঞ্চন করে তিনি এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। তিনি বোতাম টিপে ১১টি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সাক্ষরতার ক্ষেত্রে ত্রিপুরা দেশের তৃতীয় পূর্ণ সাক্ষর রাজ্য হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। বর্তমানে রাজ্যে সাক্ষরতার হার ৯৫.৬ শতাংশ। ত্রিপুরাই একমাত্র রাজ্য যেখানে কেবিনেট থেকে শুরু করে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত পর্যন্ত ই-অফিস ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে। যার ফলে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা এবং কাজের গতি আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগে রাজ্যে চিকিৎসা শিক্ষার সুযোগ সীমিত ছিল। বর্তমানে এমবিবিএস কোর্সে আসন সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে ৪৫০টি হয়েছে। পিজি কোর্সে ৯৩টি আসন রয়েছে। এর ফলে তুলনামূলকভাবে অনেক কম খরচে রাজ্যের ছাত্রছাত্রীরা রাজ্যেই চিকিৎসা বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করতে পারছে। জিবি হাসপাতালে ইতিমধ্যেই ৫ জনের কিডনি প্রতিস্থাপন সফলভাবে করা সম্ভব হয়েছে। টেলিমেডিসিন পরিষেবার জন্য দিল্লির এইমস-এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। রাজ্যে ১০২৪টি আয়ুষ্মান ভারত হেলথ এন্ড ওয়েলনেস সেন্টার চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় ১০০ ভাগ সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তিনি বলেন, জিবি হাসপাতালের পাশে ২০০ শয্যবিশিষ্ট মা ও শিশু পরিচর্যা কেন্দ্র, ১০০ শয্যাবিশিষ্ট চক্ষু হাসপাতাল, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ডেন্টাল কলেজের নিজস্ব ভবন নির্মাণ সহ একাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ণের কাজ চলছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিধানসভায় সরকার পক্ষের মুখ্যসচেতক বিধায়ক কল্যাণী সাহা রায়, বিধায়ক পিনাকী দাস চৌধুরী, বিধায়ক নির্মল বিশ্বাস, খোয়াই জিলা পরিষদের সভাধিপতি অপর্ণা সিংহ রায়, খোয়াই পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন দেবাশিস নাথ শর্মা, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে পুলিশ সুপার রণদিত্য দাস প্রমুখ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খোয়াই জেলার জেলাশাসক রজত পন্থা উল্লেখ্য, যে ১১টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে সেই প্রকল্পগুলি রূপায়ণে ব্যয় হয়েছে ১০২ কোটি ৩০ লক্ষ টাকা। খোয়াই জেলা হাসপাতালের নতুন ভবন এবং ড্রাগ ডি অ্যাডিকশন সেন্টার নির্মাণে ব্যয় হবে ৪৫ কোটি ৮৬ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা। এই অনুষ্ঠান শেষে মুখ্যমন্ত্রী খোয়াই শহরের সুভাষ পার্ক এলাকায় ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন এবং ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি পার্ক ও ফুড পার্কের উদ্বোধন করেন।
আরও পড়ুন...