Hare to Whatsapp
বিশালগড়ের ঘটনার জন্য সিপিএম-এর মদতে কংগ্রেস ও কিছু পূর্বতন সরকারের দলদাস পুলিশ দায়ীঃ বিজেপি
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ২১, : বিশালগড়ের ঘটনায় কিছু পুলিশ কর্মীকে দলদাস বললো বিজেপি। বিজেপি-র প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য-এর মতে আজ বিশালগড়ের কংগ্রেস কর্মী সমর্থকরা সিপিএম-এর প্রত্যক্ষ মদতে বিজেপি-র উপর হামলা চালিয়েছে। এবং এক্ষেত্রে কিছু পুলিশ আধিকারীকের ভূমিকা সন্দেহজনক ছিল।
বিজেপি-র বিবৃতি অনুযায়ী, গত ২০ আগষ্ট বৃহষ্পতিবার বিরোধী সিপিআইএম- এর প্রত্যক্ষ মদত পুষ্ট কংগ্রেসের কতিপয় উশৃঙ্খল যুবক পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক ভারতীয় জনতা পার্টির কয়েকজন কার্যকর্তার উপর প্রানঘাতী হামলা চালায়। খবর পেয়ে তাদের রক্ষা করতে গিয়ে পার্টির আরও বেশ ক'জন কার্যকর্তা গুরুতরভাবে জখম হন। শুধু তাই নয়, ঘটনাস্থলে ছুটে যাওয়া ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তারা পূর্বতন সরকারের দলদাস কতিপয় পুলিশ কর্মীর রোষানলেও পরেন। আহত সহকর্মীদের উদ্ধার করতে যাওয়া পার্টির কার্যকর্তারা কিছু বুঝে উঠার আগেই রাজনৈতিক দুর্বৃত্ত এবং চিহ্নিত দলদাস পুলিশ কর্মীরা এক যোগে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তাদের উপর চড়াও হয়।
দীর্ঘ সময় ধরে পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক এই অবর্ণীয় হামলা চলতে থাকে। যদিও এই ধরনের ন্যাকারজনক ঘটনার খবর পেয়ে অতিরিক্ত সুরক্ষা কর্মী নিয়ে জেলা পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে ছুটে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। দ্রুত আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।
বিজেপি-র বিবৃতি অনযায়ী, ঘটনার সূত্রপাত হয় সিপাহীজলার ভেসজ উদ্যান সংলগ্ন আগরতলা সাব্রুম সড়কে। পার্টির এক বুথ সভাপতি সহ দুইজন কার্যকর্তা বিদ্যালয় পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন। সে সময় করোনা পরিস্থিতিতে সরকারি বিধি নিষেধ এবং যাত্রী পরিবহন নীতি লঙ্ঘন করে একটি বাসে করে বিরোধী দলের মদত পুষ্ট দুর্বৃত্তরা এই পথ ধরে আসছিল। দুর্বৃত্তরা প্রথমে বাস থেকে প্রথমে পার্টির এই দুই কার্যকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। প্রতিবাদ করায় সমাজ বিরোধীরা সশস্ত্র অবস্থায় বাস থেকে নেমে এই দুই কার্যকর্তাকে বেধরক পেটাই শুরু করে। আশ্চর্যজনকভাবে পুলিশের মাধ্যমে প্রথমে বিশালগড়ের মন্ডল সভাপতি সুশান্ত দেব এবং পরে চড়িলাম মন্ডলের সভাপতি রাজকুমার দেবনাথের কাছে এই হামলার ঘটনার খবর পৌছায়। উদ্বিগ্ন দুই মন্ডল সভাপতি জনাকয়েক কার্যকর্তাকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যেতেই তাদের উপর পুলিশের কতিপয় দলদাস এবং সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা কালখেপ না করে একযোগে হামলা সংঘটিত করে। চড়িলামের মন্ডল সভাপতি রাজকুমার দেবনাথ মারে অচৈতন্য হয়ে পথে লুটিয়ে পরার পরেও তার মাথায় এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করা হয়।
পরে জেলা পুলিশ সুপার অতিরিক্ত বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে যান এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন। দ্রুত আহতদের হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। রাজকুমার দেবনাথ, সৈকত সাহা এবং রতন দেবনাথের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাদের দ্রুত হাপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। ঘটনায় আরো ২০ জন কার্যকর্তা আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে কয়েকজনের পার্শ্ববর্তী হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা চলছে।
পরবর্তী সময়ে সাংসদ প্রতিমা ভৌমিকের নেতৃত্বে পার্টির অন্যান্য কার্যকর্তারা থানায় ছুটে যান। তখন পুলিশের ঊদ্ধর্তন আধিকারীকেরাও থানায় উপস্থিত ছিলেন। দোষীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয় পুলিশ প্রশাসন থেকে।
এদিকে গুরুতরভাবে আহত পার্টির কার্যকর্তাদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে এবং তাদের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পর্যালোচনার জন্য দ্রুত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজে ছুটে যান পার্টির প্রদেশ সভাপতি অধ্যাপক ডাঃ মানিক সাহা।
পার্টির কার্যকর্তাদের উপর এই ধরনের পূর্ব পরিকল্পনা মাফিক বর্বরোচিত হামলার ঘটনার তীব্র নিন্দা এবং ধিক্কার জানিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রদেশ নেতৃত্ব। তবে দুর্বৃত্ত এবং করোনা নিরোধক বিধি নিষেধ উলঙ্ঘঙ্কারীদের বিরিদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে পুলিশের একটি অংশ যেভাবে ভারতীয় জনতা পার্টির কার্যকর্তাদের উপর অবর্ণীয় নির্যাতন চালিয়েছে তার সুষ্ঠ তদন্ত দাবী করেছে পার্টি নেতৃত্ব। একই সঙ্গে দোষীদের বিরদ্ধে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবীও জানানো হয়েছে।