Hare to Whatsapp
আমি যাচ্ছি না সরকারী কোয়ারেইন্টেন সেন্টারেঃ সুদীপ রায় বর্মন
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ৩, : সুদীপ রায় বর্মন গতকাল ভগৎ সিং কোভিড কেয়ার সেন্টারে (সিসিসি)- রোগীদের ফল দিতে গিয়ে ছিলেন। এই অপরাধে পশ্চিম জেলার জেলা শাসক গতকাল এক আদেশ জারী করে তাকে এ ডি নগরে সরকারী কোয়ারেইন্টেন সেন্টারে যেতে নির্দেশ দেন। আজ সকালে ডি এম - এর ওই চিঠির জবাবে পাল্টা চিঠি দিয়ে তিনি জানান, তাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। চিঠিতে তিনি ডি এমকে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি করোনা আক্রান্ত নন। তাই তিনি সরকারী কোয়ারেইন্টেন সেন্টারে যাবেননা।
জানাগেছে, গতকাল সুদীপ রায় বর্মন আগরতলার ভগৎ সিং যুব আবাসের কোভিড কেয়ার সেন্টারে যান রোগীদের ফল দিতে। তিনি এখনো বিজেপি বিধায়ক। ত্রিপুরায় এখনকার বিজেপি-আইপিএফটি সরকারের প্রাক্তন স্বাস্থ্য মন্ত্রীও ছিলেন সুদীপ রায় বর্মন।
জানাগেছে, গতকাল রোগীদের ফল দেওয়ার সময় তার সাথে বিধায়ক আশিষ সাহাও ছিলেন। কিন্তু তাকে সরকারী কোয়ারেইন্টেনে যেতে বলা হয়নি।
গতকালকের ঘটনার ব্যাপারে ডি এম -এর তরফে সদীপকে লেখা চিঠি সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই চিঠিতে লেখা হয়েছে, সুদীপ রায় বর্মন কোভিড কেয়ার সেন্টারে ‘আনঅথরাইসডলি’ গেছেন। তাকে বলা হয়েছে, আজ থেকে অরুন্ধুতি নগরের রিজিওন্যাল সার্ভে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এ সাতদিনের জন্য কোয়ারান্টিনে যেতে, তারপর সাতদিন হোম কোয়ারান্টাইন-এ থাকতে হবে।
সেই চিঠিতে আরও লেখা হয়েছে, সেই কোভিড কেয়ার সেন্টারের সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে দেখা গেছে, কোভিড পজিটিভ রোগীদের সাথে তিনি মুখোমুখি ছিলেন এক মিটারের মধ্যে।
তিনি এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন। ত্রিপুরা স্বাস্থ্য দফতরের ৪ জুলাইয়ের একটি স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিজার’এর কথা বলা হয়েছে।স্বাস্থ্যকর্মী, ডাক্তারদেরও কখন কোয়ারান্টিনে থাকতে হবে, ইত্যাদি বলা হয়েছে।
জেলা শাসক, এপিডেমিক ডিজিসেস অ্যাক্ট ১৮৯৭, এপিডেমিক ডিজিসেস ( অ্যামেন্ডমেন্ট) অর্ডিন্যান্স ২০২০, এবং ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট ২০০৫ অনুযায়ী সুদীপ রায় বর্মনকে নির্দেশ দিচ্ছেন যে তিনি যেন ৩ আগস্ট থেকে তার নিজের ও বৃহত্তর অংশের নিরাপত্তার জন্য এ ডি নগরের আরএসটিআই কোয়ারানন্টেন সেন্টারে সাত দিনের জন্য থাকেন। এবং তারপরে সাত দিন হোম কোয়ারান্টিনে।
বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মন’র কাছে এই ব্যাপারে আজ তার প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে তিনি জানান :
"আমি সেখানে যাচ্ছি না," । শ্রী রায় বর্মন জানান,
সামাজিক মাধ্যমে এই চিঠি ভাইরাল, অথচ আমি গতকাল রাত বারটায়ও এই চিঠি সরকারিভাবে পাইনি। যাকে এই চিঠি দেয়ার, সে-ই এখনও পেল না, অথচ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে গেছে। চিঠিটি মোটেও আইনি নয়, হলে, আমি মানতাম।
তিনি আরও বলেন, আমার তো কোনও টেস্ট হয়নি, টেস্ট করাতে কোনও আপত্তিও নেই, টেস্টে আমি পজিটিভ হলে তখন ডাক্তার পরামর্শ দেবেন, কী করতে হবে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এরকম হয় নাকি!
তিনি বলেন, আইসিএমআর গাইডলাইনেও পজিটিভ ব্যাক্তিদের হোম আইসোলেসন থাকার গাইডলাইন আছে। এটা কেন্দ্রীয় সরকারেরই। মাইল্ড, এসিম্পটোম্যাটিক রোগীদের ক্ষেত্রে সেটা ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে করা যায়, আর আমি তো তার কোনওটাই নই এখনও।
তিনি আরও বলেন, সিপাহীজলার জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, জেলা সভাধিপতি, তারা পজিটিভ হয়েও হোম আইসোলেসনে আছেন। কী করে হয়, যদি সেই গাইডলাইন না থাকে। একজন চিত্র সাংবাদিকও আছেন একই রকমভাবে, একজন প্রাক্তন পুলিশ কর্তাও আছেন।
আমাকে ফ্যাসিলিটি কোয়ারান্টিনে যেতে হলে তো তাদেরকেও আসতে হয়, বলেছেন সুদীপ রায় বর্মন।
তিনি কয়েকজন ডাক্তারের নামও উল্লেখ করেছেন, এবং বলেছেন, কন্টাক্টে তারাও এসেছেন, কিন্তু ডিউটিও করেছেন।
তিনি আরও বলেছেন, একজন আধিকারিক, তিনি দেখেছেন, একজনের সৎকারের সময় টর্চ হাতে ছিলেন, তার পিপিই কিট ছিল না, তিনি কিন্তু তখন আইসোলেসনে যাননি।
সুদীপ জানান, জেলা শাসককে ব্যাক্তিগতভাবে বলার কিছু নেই, তিনি নির্দেশিত। এক মিটারের কথা যা বলা হচ্ছে, তা সত্য নয়, দাবি করেছেন সুদীপ রায় বর্মন। তাই তার বিরুদ্ধে যাই হচ্ছে সবটাই বেআইনী দাবী করে তিনি সরকারী কোয়ারেইন্টেনে যেতে অস্বীকার করেছেন ডিএমকে লেখা চিঠিতে।