Hare to Whatsapp
কোভিড সেন্টার গুলোতে বহু জায়গায় কেন্দ্রীয় গাইডলাইন মানা হচ্ছে না অভিযোগ উঠেছে
By Our Correspondent
আগরতলা, আগষ্ট ১, : একটি কোভিড কেয়ার সেন্টারে ভর্তি রোগীরা কি কি সুবিধা পাবে তার জন্য কেন্ড্রীয় সরকারের একটি গাইডলাইন রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন বা নীতি নির্দেশিকা অনুযায়ী দেশের অনেক রাজ্য কোভিড ১৯ রোগীদের জন্য বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। প্রতিবেশী অসম সরকারও দিচ্ছে। যে সব ব্যবস্হা আসাম নিয়েছে ত্রিপুরাতেও তা কেন নেওয়া হচ্ছেনা প্রশ্ন উঠেছে।
অসম সরকারের গৃহীত ব্যবস্হা বা সুযোগ-সুবিধা গুলি এরাজ্যে বাস্তবায়ন হলে করোনা কেয়ার সেন্টারে চিকিৎসাধীন রোগীরা খুব দ্রুত আরোগ্য লাভ করতে পারত এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মানসিক ভাবে চাঙ্গা থাকতে পারত বলে এখানকার চিকিৎসকদের একটি মহলও মনে করছেন।
প্রাপ্ত তথ্য ও খবর অনুযায়ী, কোভিড কেয়ার সেন্টারের জন্য যে সব নীতি নির্দেশিকা রয়েছে তার প্রথমেই বলা হয়েছে কোন করোনা আক্রান্ত কোভিড সেন্টারে আসা মাত্রই তাকে প্রথমেই একটি ওয়েলকাম কিট দিতে হবে। এর মধ্যে থাকতে হবে একটি বালতি, মগ, তোয়ালে, ব্রাশ, কলম, টুথপেস্ট, কাগজ বা নোটবুক। অবশ্যই নয়া
রোগীদের দিতে হবে নুতন বালিশের ঢাকনা। বিছানার নতুন চাদর প্রদান করতেই হবে। প্রতি রোগী রাতে যাতে খবরাখবর শুনতে পারে তার জন্য একটি করে রেডিও দেওয়া হচ্ছে আসামে। প্রতি ওয়ার্ডে ইলেকট্রনিক চুল্লী, কেটলী থাকতে হবে। রোগীরা যাতে চা করে খেতে পারে বা গরম জল করতে পারে তার জন্য এটা জরুরী।
তাছাড়া, প্রতি ওয়ার্ডে ওয়াইফাই কানেক্টিভিটি থাকতেই হবে।
বিনোদনের ব্যবস্হার পাশাপাশি প্রত্যেক রোগীকে তার চাহিদা বা পছন্দ অনুযায়ী সংবাদপত্র ও ম্যাগাজিন দিতে হবে। যদি কোন রোগীর বাড়ী থেকে খাবার পাঠানো হয় তাহলে তা তাৎক্ষণিকভাবে রোগীর বেডের পাশে রাখার ব্যবস্হা করতে হবে। এটা কেন্দ্রীয় সরকারের গাইডলাইন। এতে সুষ্পষ্ট ভাবেই বলে দেয়া হয়েছে প্রতি রোগীকে দিনে অন্তত একবার তার পছন্দের খাবার অবশ্যই দিতে হবে।
কোভিড কেয়ার সেন্টারের চিকিৎসকদের কিংবা দায়িত্ব প্রাপ্তদের পরিস্কার ভাবে বলা হয়েছে প্রতি ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত অক্সিজেন সিলিন্ডার যেমন মজুত রাখতে হবে তেমনি ঔষুধ পত্র রাখতেই হবে। সরকারী সরবরাহ কম থাকলে স্হানীয় বাজার থেকে কিনতে হবে। প্রতি রোগীকে ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক, চিকিৎসক এর মোবাইল নং দিতে হবে যাতে তারা জরুরী প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে পারেন।
জানাগেছে, এই নীতিমালা কেন্দ্রীয় সরকারের হলেও আসাম ছাড়াও অবিজেপি অনেক রাজ্য বাস্তবায়ন করেছে। এই নীতিমালা প্রতিটি রাজ্য সরকারকে যেমন অবশ্যই অনুসরণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে।
কিন্তু ত্রিপুরাতে চিকিৎসক মহলেই প্রশ্ন, এ রাজ্যে এই নীতিমালা কি অনুসরণ করা হচ্ছে? অভিযোগ ও সংশয়, এ রাজ্য তা বহুলাংশে বাস্তবায়ন করছেনা সরকার। ত্রিপুরার চিকিৎসকদের একটি মহলের অভিযোগ, অনেক বিষয়েই কোন গাইডলাইন মানা হচ্ছেনা। এই বক্তব্য চিকিৎসকদের ওই অংশের যারা কোভিড কেয়ার সেন্টারে নিজেরাও চিকিৎসাধীন ছিলেন তাঁদের একাংশের। এই অভিযোগ হয়তো বা সঠিক, কারন বেঠিক হলে তো কোভিড কেয়ার সেন্টার গুলিতে নিত্যদিন যে অসন্তোষ এর খবর বেড়িয়ে আসছে তা এড়াবে মিডিয়াতে আসতোনা। বা ক্যাবল চ্যানেলে দেখানো হতো না।
জানাগেছে, কোভিড রোগীদের চিকিৎসা বা তাদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানের বহুলাংশে দায়িত্ব কিন্তু জাতীয় স্বাস্হ্য মিশনের। রাজ্য সরকার সার্বিক তদারকি যেমন করবে তেমনি রসদ যোগান দেবে। কিন্তু সরকার কি তদারকি করছে তা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠছে। তবে এটা ঠিক বেনিয়ম তো হচ্ছেই । স্হানীয় ভাবে বেশ কিছু স্বঘোষিত হোমড়া চোমড়া গজিয়ে উঠেছে, যারা কোভিড কেয়ার সেন্টারের আশপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করছে এবং খাবার সরবরাহ সহ নানা বরাত নেয়ার চেষ্টা করছে। যেহেতু সোজা পথে এসব বরাত দেওয়া হচ্ছেনা, তাই বহু জায়গাতেই নিম্নমানের খাবার সরবরাহ হচ্ছে বলে অভিযোগ আসছে। আর পারিপার্শ্বিক তথ্য প্রবাহও কিন্তু এমনটা বলছে। তাই অতি সত্বর কোভিড কেয়ার সেন্টার গুলোর সুযোগ সুবিধা যথাযথ ভাবে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী উঠেছে।