গণতন্ত্রকে ব্যবস্থিত রাখার ক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, নভেম্বর ১৭, : রাজনৈতিক, সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক বিন্যাসকে সুসংহত রাখা সাংবাদিকদের প্রধান দায়িত্ব। কারণ সাংবাদিকরা হলো সমাজের দর্পণ। সঠিক সংবাদ পরিবেশনও একটি কলা। সাংবাদিকতা পেশা হলেও তা সমাজের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকেই করা বাঞ্ছনীয়। ১৬ নভেম্বর সুকান্ত একাডেমির অডিটোরিয়ামে আয়োজিত জাতীয় প্রেস দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন, মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। এবারের জাতীয় প্রেস দিবস উদযাপনের মূল ভাবনা হলো ‘সেফগার্ডিং প্রেস ক্রেডিবিলিটি এমিডস্ট রাইজিং মিসইনফরমেশন'। অনুষ্ঠান মঞ্চে রাজ্যের বরিষ্ঠ দুই সাংবাদিক অমরপুরের প্রাণময় সাহা এবং কৈলাসহরের অনুপম ভট্টাচার্যকে সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা হিসেবে শাল চাদর, স্মারক এবং অর্থরাশি প্রদান করা হয়। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আজকের এই জাতীয় প্রেস দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়।

জাতীয় প্রেস দিবসের তাৎপর্য আলোচনায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, গণতন্ত্রকে ব্যবস্থিত রাখার ক্ষেত্রে সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীন মত প্রকাশ এবং বাক স্বাধীনতা সংবাদমাধ্যমের প্রাণ শক্তি। কিন্তু সমাজের প্রতি দায়দায়িত্ববোধ থেকে যে কোনও ধরনের সংবাদ পরিবেশনে সাংবাদিকদের আরও বেশিভাবে সজাগ থাকতে হবে। বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমের যুগে মিথ্যা সংবাদে প্রতিদিন সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সেগুলিকে কাটিয়ে উঠার জন্য সমস্ত ব্যবস্থাকে একযোগে চিন্তাভাবনা চালাতে হবে।

অনুষ্ঠানে বক্তব্যে মুখ্যমন্ত্রী বহির্রাজ্যের সাংবাদিকদের থেকে গুণগতমানে এ রাজ্যের সাংবাদিকরাও কোনও অংশে কম নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেন। তিনি এদিন রাজ্যের বরিষ্ঠ সাংবাদিকদের নিকট বর্তমান প্রজন্মের সাংবাদিকদের নৈতিক সাংবাদিকতা এবং সংবাদ পরিবেশনের বিভিন্ন দিক নিয়ে মাসিক কর্মশালার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন করার ব্যবস্থা চালু করার জন্য আহ্বান রাখেন।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের যে দু'জন সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছিলো তারা যাতে সঠিক ন্যায়বিচার পায় তারজন্য যথা স্থানে সময়ে সময়ে তদ্বির করা হচ্ছে। তিনি সাংবাদিকদের নিরাপত্তা ও আত্মমর্যাদা রক্ষায় সরকার দায়িত্বশীল রয়েছে অভিমত ব্যক্ত করেন। সাংবাদিকদের কল্যাণে ইতিমধ্যেই তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের মাধ্যমে বিভিন্ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি কর্তৃক যে সকল সিদ্ধান্ত সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের কল্যাণে গৃহীত হয়েছে তা ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করা হবে।

অনুষ্ঠানে আলোচনায় সম্পাদক শানিত দেবরায় বলেন, কার্যক্ষেত্রে সাংবাদিকদের নৈতিক দায়িত্ববোধ একটু বেশি থাকা প্রয়োজন। জনগণ এবং দেশের স্বার্থে কাজ করতে হলে প্রশাসনকে সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকদের স্বাধীনতা দেওয়া প্রয়োজন। তিনি আশা প্রকাশ করেন এই রাজ্যে সংবাদ শিল্প এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। আলোচনায় আগরতলা প্রেস ক্লাবের সভাপতি প্রণব সরকার বলেন, মিডিয়ার বিবর্তনের সুফল ও কুফল উভয়ই রয়েছে। প্রেস কাউন্সিল অব ইন্ডিয়ার গাইডলাইন অনুযায়ী সোশ্যাল মিডিয়া কোনও ধরনের সংবাদমাধ্যম এবং সাংবাদিকতার মাধ্যম হিসেব লিপিবদ্ধ নয়। তাও বর্তমানে সামাজিক মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যক্তি কুৎসা রটানো হচ্ছে। অনুষ্ঠানে আজকের জাতীয় প্রেস দিবস উদযাপনের মূল ভাবনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন কার্যনির্বাহী সম্পাদক মানস পাল। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখতে গিয়ে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী বলেন, রাজ্যে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের নথিভুক্ত ১৩৩টি সংবাদমাধ্যম, ৩১৩ জন অ্যাক্রিডিটেড সাংবাদিক রয়েছেন। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.