মানুষের জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে তার বিকাশে রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, নভেম্বর ১৪, : মানুষের জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে তার বিকাশে রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গঠনের যে সংকল্প নিয়েছেন সেই সংকল্পকে সামনে রেখে ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরাও এগিয়ে চলেছে। ১৩ নভেম্বর ধলাই জেলার কমলপুরে হরচন্দ্র দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের পাকা বাড়ি নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন এবং ভার্চুয়ালি জেলার ২২টি প্রকল্পের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, উন্নয়নের নির্দিষ্ট কোনও অন্ত নেই। রাজ্য সরকার সারা রাজ্যে উন্নয়নের ধারা বজায় রেখেছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের যৌথ প্রয়াসে ধলাই জেলাতেও বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন মহকুমা এবং গ্রামেগঞ্জে ব্যাপকভাবে উন্নয়নমূলক কর্মযজ্ঞ চলেছে। স্বাস্থ্য, শিক্ষা ইত্যাদির পাশাপাশি রাস্তাঘাট, বিভিন্ন অফিসের নতুন ভবন, স্টাফ কোয়ার্টার, সেতু, পানীয়জল, বিদ্যুৎ, বাজারের পরিকাঠামোগত উন্নয়নের কাজ চলেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা এখন উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে জি.এস.ডি.পি. এবং মাথাপিছু আয়ের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে। সম্প্রতি নীতি আয়োগ ত্রিপুরাকে ফ্রন্ট রানার রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। তিনি বলেন, কাজের গতি আনতে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত থেকে ক্যাবিনেট পর্যন্ত ই-অফিস চালু করা হয়েছে। এতে জনগণের সুবিধা হচ্ছে। পাশাপাশি আমার সরকার পোর্টাল চালু করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের মানুষের আর্থসামাজিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্যের বর্তমান সরকার কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্ৰী কৃষাণ সম্মাননিধি প্রকল্পের ২০তম কিস্তিতে ৪৫ কোটি ৩১ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা সরাসরি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে কৃষকদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্য সরকারের লক্ষ্য ত্রিপুরায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার লাখপতি দিদি তৈরি করা।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ধলাই জেলায় একটি সরকারি মেডিক্যাল কলেজ গড়ে তোলার প্রয়াস নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে রোগীদের শয্যার সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের মেডিক্যাল কোর্সে পড়ার আসনও বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একটা সময় রাজ্যের ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য ত্রিপুরার বাইরে যেতে হতো। তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য এখন রাজ্যেই অনেক সুবিধা রয়েছে। বিভিন্ন জেলা ও মহকুমাগুলিতে যে সমস্ত হাসপাতাল রয়েছে সেগুলির আরও উন্নত পরিকাঠামো তৈরির জন্য চেষ্টা করা হচ্ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো সম্প্রসারণের জন্য রাজ্য সরকার নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। এর সুফল সবাই ভোগ করছেন। বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসা এখন রাজ্যেই হচ্ছে। বহির্রাজ্যে রোগীর রেফারের সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক হ্রাস পেয়েছে। শিশু মৃত্যুর হারও অনেক কমেছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনায় ত্রিপুরায় পরিষেবা প্রদান করতে গিয়ে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। নেশার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে রাজ্য সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়েছে। প্রত্যেকটি জেলায় নেশামুক্তি কেন্দ্র চালু করা হবে। তিনি বলেন, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ১৫৩ কোটি টাকা ব্যয় করে ৪৪টি নতুন বিদ্যালয় স্থাপন করা হয়েছে। ৮০ কোটি ৮৭ লক্ষ টাকা ব্যয় করে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের সংস্কার করা হয়েছে। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে সুপার ৩০ প্রকল্পে রাজ্যের ৩০ জন ছাত্রছাত্রী পড়াশুনার সুযোগ পাচ্ছে। তিনি বলেন, জাতি, জনজাতি সবাই মিলে একটি সুন্দর ত্রিপুরা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। আগরতলা, উদয়পুর এবং ধর্মনগরকে স্যাটেলাইট টাউন হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন বিধায়ক মনোজ কান্তি দেব। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ধলাই জেলার জেলাশাসক বিবেক এইচ. বি.। এছাড়াও অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ধলাই জিলা পরিষদের সভাধিপতি সুস্মিতা দাস, বিধায়ক স্বপ্না দাস পাল, আমবাসা পুরপরিষদের চেয়ারপার্সন প্রতিমা মালাকার, এম.ডি.সি. পরিমল দেববর্মা, স্বাস্থ্য ও পূর্ত দপ্তরের সচিব কিরণ গিত্যে প্রমুখ। উল্লেখ্য, হরচন্দ্র দ্বাদশ শ্রেণি বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ কোটি ৭৪ লক্ষ টাকা। এছাড়া ধলাই জেলার বিভিন্ন এলাকায় যে ২২টি প্রকল্পের উদ্বোধন করা হয়েছে সেগুলি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ১০২ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.