Hare to Whatsapp
ত্রিপুরার উন্নয়নে হীরা স্কিম সম্পন্ন হয়ে এখন হীরা প্লাসে উন্নতি চলছে বলে দাবি মুখ্যমন্ত্রীর
By Our Correspondent
আগরতলা, জুলাই ২৩, : আগরতলা , ২৩ জুলাই ।। বাম আমলে যেখানে রাজ্যের একটিমাত্র লাইফলাইন অথবা জীবনরেখা ছিল , সেখানে ত্রিপুরা এখন ৭ টি লাইফলাইনে যুক্ত হচ্ছে । স্থল , জল এবং আকাশ পথ । সবক্ষেত্রেই ত্রিপুরা ক্রমশ যোগাযোগ বান্ধব হয়ে উঠছে । দুই বছর সময়ের মধ্যে রাজ্যকে এইসব সুবিধা প্রদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব । আজ আখাউড়াস্থিত সুসংহত সিমান্ত বন্দরে প্রবেশ করে ইন্দো - বাংলা কোস্টাল চুক্তি অনুযায়ী কলকাতা থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে আসা প্রথম ট্রানজিট কার্গো । ১৯৬৫ সাল থেকে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার জন্য ভারতের এই দাবি ছিল । যা আজ বাস্তবের রূপ দেখলে । সবুজ পতাকা দেখিয়ে এই ট্রানজিট কার্গোকে স্বাগত জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন , বিজেপি - আইপিএফটি সরকারের নেতৃত্বে রাজ্য উন্নয়নের শীর্ষে পৌঁছে যাবে । আজ এই ট্রানজিট কার্গোকে স্বাগত জানানোর পর মুখ্যমন্ত্রী বলেন , এর ফলে ত্রিপুরা ও বাংলাদেশ উভয়ই লাভান্বিত হবে । তিনি বলেন , আগে ত্রিপুরার সঙ্গে সংযোগ রাক্ষাকারী একটিই লাইফলাইন ছিল , তাও চুরাইবাড়ি থেকে দীর্ঘ সড়ক বর্ষাকালে হয়ে থাকতাে চলাচলের অনুপযুক্ত । যার ফলে পণ্যবাহী লরি ত্রিপুরায় প্রবেশ করার ক্ষেত্রে নানান সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে । এর সরাসরি প্রভাব পড়তে রাজ্যের বাজারগুলিতে । আকাশছোঁয়া দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে জনজীবন হয়ে উঠতো বিপর্যস্ত । এই অবস্থায় রাজ্যে নতুন করে আসাম - আগরতলা জাতীয় সড়কের সংস্কার কাজ অনেকাংশে সম্পন্ন হয়ে গেছে । মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেব বলেন , রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এই সময়ের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে রাজ্যে উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে । দীর্ঘদিন কুমারঘাট পর্যন্তই ছিল রেল সম্প্রসারণ । তাও ছিল মিটারগেজ । আজকের দিনে উন্নিত হয়ে মিটারগেজ রূপান্তরিত হয়েছে । ব্রডগেজে । সাব্রুম পর্যন্ত পৌছে গেছে রেল । শুধু তাই নয় , আগরতলা - আখাউড়া রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রেও কাজ চলছে । গতিতে । এরই সঙ্গে জলপথ ব্যবহার করে ত্রিপুরা যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক ঐতিহাসিক মুহূর্তের স্বাক্ষী থাকলে আজ । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , আগে যেখানে হলদিয়া থেকে ১৬০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে ত্রিপুরায় পণ্য সামগ্রী আসততা , সেখানে আজ হলদিয়া থেকে চট্টগ্রাম বন্দর হয়ে রাজ্যে ট্রানজিট কার্গো পৌঁছে গেছে মাত্র ৬০০ কিলোমিটারের দূরত্ব অতিক্রম করেই । এরমধ্যে ৪০০ কিলোমিটার চট্টগ্রাম পর্যন্ত জলপথ এবং বাকি ২০০ কিলোমিটার স্থলপথ । আগামী ডিসেম্বরে ফেনী নদীর উপর সেতু নির্মাণ কাজ । সম্পন্ন হয়ে গেলে ২০০ কিলোমিটারের দূরত্ব আরও কমে ৬০ কিলোমিটার হয়ে যাবে । এছাড়া সোনামুড়া দাউদকান্দি , এই আন্তর্জাতিক প্রটোকল রুট চালু হবে শীঘ্রই । তিনি বলেন , সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতে নদীর জল বেড়ে যাওয়ায় , কুমিল্লায় কিছু সেতু অতিক্রম করা অসম্ভব হওয়ার ফলে এই প্রক্রিয়ায় কিছুটা বিলম্বিত হচ্ছে । পাশাপাশি রয়েছে মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দর । উত্তর - পূর্বাঞ্চলের দ্বিতীয় ব্যস্ততম এই বিমান বন্দরে ১৮ টি বিমান যাতায়াত করে । যা দেশের বেশ কিছু বড় শহরের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত । সবমিলিয়ে রাজ্য ৭ টি মাধ্যমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সম্পর্কযুক্ত । যা এই সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় উপলব্ধি বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন । মুখ্যমন্ত্রী বলেন , এদিন স্থল পথে হলদিয়া বন্দর থেকে যে ট্রানজিট কার্গো এসেছে এরফলে সাশ্রয় হয়েছে ৫০ হাজার টাকা । আগে ১৬০০ কিলোমিটার অতিক্রম করে আসা পণ্যে মেট্রিকটন প্রতি খরচ হতাে ৬ হাজার ৩০০ টাকা । তা কমে হয়েছে ৫,৮০০ টাকা । এর ফলে প্রতি মেট্রিকটনে সঞ্চয় হচ্ছে ৫০০ টাকা করে । ফেনী নদীর উপর দিয়ে পণ্য পরিবহণ হলে সেই সঞ্চয় মেট্রিকটন প্রতি ৮০০ টাকা গিয়ে পৌঁছাবে । এই সঞ্চয় রাজ্যের একদিকে যেমন দ্রব্যমূল্য হ্রাস করবে , তেমনি রোজগারের সুযোগও বৃদ্ধি করবে । মুখ্যমন্ত্রী এদিন তার ভাষণে উল্লেখ করেন , বর্তমান সময়ে ত্রিপুরা থেকে বাংলাদেশে রপ্তানি হয় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সামগ্রী । বাংলাদেশ থেকে আসে ৬৪৫ কোটি টাকা মূল্যের সামগ্রী । নতুন সম্ভাবনা উন্মোচিত হওয়ার ফলে আগামী ১ বছরে রপ্তানি ৪০০ কোটি টাকা এবং আমদানি ২০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি । ৫ বছরে সেটা গিয়ে দাঁড়াবে রপ্তানি ১২০০ কোটি টাকা এবং আমদানি ৪২০০ কোটি টাকা । রাজ্যের সামগ্রীক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারের এহেন ভূমিকার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী । রাজ্যের উন্নয়নে হীরা ’ সম্পন্ন হয়ে এখন হীরা প্লাসে উন্নতি চলছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী । বলেন , এতে রোজগার বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিকভাবে লাভবান হবে ত্রিপুরা ।