বন্দে মাতরম গানের ১৫০ বছর পূর্তিতে রাজ্যেও বর্ষব্যাপী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে : পর্যটনমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ৬, : বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দে মাতরম গানটি আগামী ৭ নভেম্বর ১৫০ বছর পূর্ণ করবে। সারা দেশের সঙ্গে রাজ্যেও বন্দে মাতরম সঙ্গীতের ১৫০ বছর পূর্তি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে পালন করা হবে। বর্ষব্যাপী এই অনুষ্ঠান শুরু হবে আগামী ৭ নভেম্বর। চার পর্যায়ে অনুষ্ঠান চলবে আগামী বছর ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। রাজ্যভিত্তিক মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে সচিবালয় প্রাঙ্গণে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা৷ সচিবালয়ে ৫ নভেম্বর বিকেলে এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা জানান পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী।
সাংবাদিক সম্মেলনে পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ১৫০ বছর আগে দেশমাতৃকার বন্দনায় রচিত বন্দে মাতরম কেবল একটি গান নয়, একটি মন্ত্র। এই গান স্বাধীনতা আন্দোলনে দেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের নাগপাশ থেকে ভারতকে মুক্ত করতে লক্ষ লক্ষ ভারতবাসীকে আত্মত্যাগের প্রেরণা দিয়েছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে নরমপন্থী বা চরমপন্থী, সবারই মূল মন্ত্র ছিল বন্দে মাতরম। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নির্দেশে বন্দে মাতরম গান রচনার ১৫০তম বছর পূর্তিকে স্মরণীয় করে রাখতে দেশব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পর্যটনমন্ত্রী জানান, ত্রিপুরায় এই অনুষ্ঠান হবে চারটি পর্যায়ে। প্রথম পর্যায় ৭ থেকে ১৪ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। ৭ নভেম্বর সকাল ১০টায় দিল্লিতে মূল অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন সকাল ১০টায় সচিবালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে থাকবেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা৷ রাজ্যের প্রতিটি জেলায়, মহকুমায়, আগরতলা পুর নিগম এবং অন্যান্য পুর পরিষদগুলিতেও একই সঙ্গে বন্দে মাতরম গানের ১৫০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। পশ্চিম জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ এবং সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য, সিপাহীজলা জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন পর্যটনমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী। গোমতী জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহরায়, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন সমবায় মন্ত্রী শুক্লাচরণ নোয়াতিয়া, খোয়াই জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা এবং বনমন্ত্রী অনিমেষ দেববর্মা। ধলাই জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন মৎস্য মন্ত্রী সুধাংশু দাস, ঊনকোটি জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন সমাজকল্যাণ ও সমাজশিক্ষা মন্ত্রী টিঙ্কু রায়, উত্তর ত্রিপুরা জেলাভিত্তিক অনুষ্ঠানে থাকবেন শিল্পমন্ত্রী সান্ত্বনা চাকমা। বিভিন্ন মহকুমায় মহকুমা ভিত্তিক অনুষ্ঠানে বিধায়কগণ উপস্থিত থাকবেন।
পর্যটনমন্ত্রী জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে আগামী বছর ১৯ থেকে ২৬ জানুয়ারি পর্যন্ত। তৃতীয় পর্যায়ের অনুষ্ঠান হবে আগামী বছর ৭ আগস্ট থেকে ১৫ আগস্ট পর্যন্ত। এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি হর ঘর তিরঙ্গা অনুষ্ঠানও থাকবে। চতুর্থ পর্যায়ের বা সমাপ্তি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে আগামীবছর ১ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত। পর্যটনমন্ত্রী জানান, বর্ষব্যাপী এই অনুষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজের ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বন্দে মাতরম গানের তাৎপর্য কেন্দ্র করে অনুষ্ঠান, প্ৰবন্ধ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা, পোস্টার তৈরি, রাজ্য পুলিশের ব্যান্ডের মাধ্যমে জনবহুল স্থানে বন্দে মাতরম ও অন্যান্য দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করা, প্রদর্শনীর আয়োজন করা, মশাল দৌড়, বৃক্ষরোপণ, যুব ম্যারাথন দৌড় প্রভৃতি। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ১৮৭৫ সাল থেকে বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দে মাতরম গান ভারতবাসীকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন বর্ষব্যাপী এই অনুষ্ঠানে রাজ্যের জনগণ শ্রদ্ধার সঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন অর্থ, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত সচিব অপূর্ব রায়, তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন...