বর্তমান রাজ্য সরকার সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে জনজাতিদের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ৫, : বর্তমান রাজ্য সরকার সময়ের সাথে সামঞ্জস্য রেখে জনজাতিদের উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে। বর্তমান সরকারই জনজাতিদের এবং রাজ্যের রাজ পরিবারকে সঠিক সম্মান দিয়েছে। শুধু কথা নয়, মানুষের কল্যাণে কাজের মধ্য দিয়ে এই রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় রাজ্য সরকার। ৪ নভেম্বর রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে জনজাতি অংশের মহিলাদের মধ্যে রিয়া ও পাছরার বোনার সুতা প্রদান অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী সহ অতিথিগণ অনুষ্ঠান মঞ্চে ২৫ জনের হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সুতা তুলে দেন। আজ রবীন্দ্রভবনে সুতা দেওয়া হয়েছে ২ হাজার জনজাতি মহিলাকে। হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের উদ্যোগে চিফ মিনিস্টার ট্রাইবেল ওমেন উইভার্স ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামে চলতি অর্থবছরে সারা রাজ্যে ২০ হাজার জনজাতি মহিলাকে সুতা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পর সারা দেশের জনজাতিদের উন্নয়নে সঠিক পদক্ষেপ নিয়ে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করছেন। তার অন্যতম উদাহরণ ধরতি আবা জনজাতি গ্রাম উৎকর্ষ অভিযান। এই প্রকল্প রূপায়ণে উল্লেখযোগ্য সাফল্যের জন্য ত্রিপুরা ইতিমধ্যেই ৩টি জাতীয় পুরস্কার পেয়েছে। রাজ্যের জনজাতি অধ্যুষিত ব্লক এলাকাগুলিতে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রভৃতির উন্নয়নে ১৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে। রাজ্যের বসবাসরত জনজাতিদের মধ্যে ব্লু বা রিয়াং-রা হলেন অন্যতম আদি জনজাতি গোষ্ঠী। তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন দপ্তরের মাধ্যমে গত ১ বছরে ৩২২ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের শুধু ১৯টি জনজাতি গোষ্ঠীই নয়, জনজাতি উপ-গোষ্ঠীগুলির উন্নয়নেও রাজ্য সরকার সমানভাবে কাজ করছে। বর্তমান সরকার জনজাতি বান্ধব সরকার। রাজ্য সরকার জনজাতি সমাজপতিদের ভাতা বাড়িয়ে ৫ হাজার টাকা করেছে। জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতির উন্নয়নে বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী জনজাতি বিকাশ যোজনায় এখন পর্যন্ত ৯,৩২৫ জনকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গক্রমে তিনি বলেন, জনজাতি নারীদের তৈরী করা রিয়া, পাছরা এখন বিভিন্ন রাজ্যে রপ্তানী হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের জাতি জনজাতি অংশের মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসের মাধ্যমেই ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তাই সর্বত্র শান্তি সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। নেশামুক্ত সমাজ গঠনে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের উদ্যোগে জনজাতি মহিলাদের সুতা প্রদান অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি জনজাতি কল্যাণ মন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা বলেন, জনজাতি অংশের মহিলাদের সশক্তিকরণে রাজ্য সরকার বিভিন্ন পরিকল্পনা রূপায়ণ করছে। ইতিমধ্যেই অনেক জনজাতি মহিলা স্বনির্ভর হয়েছেন। তিনি বলেন, নিজের এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নয়নের জন্য রাজ্যের সর্বত্র ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান সরকারের পাশে থাকতে হবে। অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি আগরতলা পুরনিগমের মেয়র তথা বিধায়ক দীপক মজুমদার বক্তব্য রাখেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন হস্ততাঁত, হস্তকারু ও রেশম শিল্প দপ্তরের অধিকর্তা অজিত শুরুদাস।
আরও পড়ুন...