আমরা চাই সচেতন গ্রাম, সুরক্ষিত গ্রাম ও সমৃদ্ধশালী গ্রাম : পঞ্চায়েত মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ১৭, : ফিনান্সিয়াল লিটারেসি বা আর্থিক সাক্ষরতা কেবলমাত্র ব্যক্তিগত দক্ষতা অর্জন নয়, এবিষয়ে সচেতন হওয়া বা জ্ঞান অর্জন করা প্রতিটি মানুষের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। গ্রামাঞ্চলের অনেক মানুষ আজও আর্থিক বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিগণকে এবিষয়ে গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। আমরা চাই সচেতন গ্রাম, সুরক্ষিত গ্রাম ও সমৃদ্ধশালী গ্রাম। তবেই ভারত স্বাবলম্বী হয়ে উঠবে। পঞ্চায়েত মন্ত্রী (গ্রামোন্নয়ন) কিশোর বর্মণ ১৬ অক্টোবর হোটেল পোলো টাওয়ারে দু'দিনব্যাপী ফিনান্সিয়াল লিটারেসি বা আর্থিক সাক্ষরতা শীর্ষক কর্মশালার উদ্বোধন করে একথা বলেন। কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতিরাজ মন্ত্রণালয়, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়। উদ্দেশ্য, ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের আর্থিক জ্ঞান ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এই কর্মশালায় বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং, বিভিন্ন জিলা পরিষদের সভাধিপতিগণ, পঞ্চায়েত সমিতি ও বিএসি'র চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যানগণ, বিভিন্ন পঞ্চায়েতের প্রধানগণ, পঞ্চায়েত দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা অনুরাগ সেন, বিডিওগণ সহ পঞ্চায়েত দপ্তরের বিভিন্ন স্তরের আধিকারিকগণ অংশ নেন। কর্মশালার উদ্বোধন করে পঞ্চায়েত মন্ত্রী কিশোর বর্মণ উদ্যোক্তাদের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, ত্রিপুরায় সর্বপ্রথম এরূপ কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ভারত সরকার দেশের ৬টি রাজ্যে এরূপ কর্মশালা আয়োজনের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে ত্রিপুরাকেও বেছে নেওয়া হয়েছে। এজন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে ধন্যবাদ জানান।
তিনি বলেন, রাজ্যে সেবির এই উদ্যোগ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। কেননা, গ্রামের অনেক মানুষ আজও সঞ্চয় ব্যবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। চিট ফান্ডে অর্থ সঞ্চয় করেন। উচ্চ সুদে ঋণ নেন। আসল ও সুদ পরিশোধ করতে না পারলে আর্থিক সংকটে ভোগেন। স্থায়ী সম্পদ বিক্রি করে নি:স্ব হন। মোবাইলে ভূয়ো ম্যাসেজ পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত ও প্রতারিত হন। কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের প্রদত্ত বিভিন্ন প্রকল্প যেমন অটল পেনশন যোজনা, মুদ্রা যোজনা, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড, জীবনজ্যোতি বীমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি প্রকল্প, ডাইরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফার ইত্যাদি বিষয়ে গ্রামীণ জনগণকে সচেতন করে তুলতে হবে। যাতে তারা ঋণের ফাঁদে পা না বাড়ান। সমাজের অন্তিম ব্যক্তির কাছে এই প্রকল্পগুলোর সুযোগ পৌঁছে দিতে পারলেই এরূপ কর্মশালার আয়োজন সার্থক হয়ে উঠবে। প্রয়োজনবোধে প্রতিটি পঞ্চায়েতে একটি করে ফিনান্সিয়াল অ্যাওয়ারনেস সেন্টার গড়ে তোলার জন্য তিনি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, টাকা রোজগার করলেই হবে না। সেই টাকা সঠিক প্রতিষ্ঠানে জমা রাখতে হবে। যাতে গ্রামের মানুষ আর্থিকভাবে প্রতারিত না হন। তিনি বলেন, গ্রামীণ মানুষের আর্থ সামাজিক মানোন্নয়ন হলেই রাজ্য তথা দেশের আর্থিক বুনিয়াদ সুদৃঢ় হবে।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিধায়ক প্রমোদ রিয়াং বলেন, পঞ্চায়েত স্তরের অনেক মানুষ আর্থিক সঞ্চয়ের বিষয়ে সঠিকভাবে ধারণা নেই। আশাকরি এই কর্মশালা ত্রিস্তরীয় জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে গ্রামীণ জনগণের কাছে নতুন বার্তা পৌঁছে দেবে। স্বাগত বক্তব্যে সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অব ইন্ডিয়া তথা সেবির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর সুনীল জয়াওয়ান্ট কদম সেবির কাজকর্ম বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। পঞ্চায়েত দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব প্রসূন দে বলেন, একজন ব্যক্তির আর্থিক সমৃদ্ধি হলে সমাজ ও রাজ্য উপকৃত হয়। তাছাড়া আলোচনায় অংশ নেন সেবির মুখ্য ব্যবস্থাপক দীপ্তি আগরওয়াল। এছাড়া ফিনান্সিয়াল লিটারেসি রিলেটেড কনসেপ্টস এন্ড পার্সোনাল ফিনান্স পার্ট-ওয়ান এবং পার্ট-টু নিয়ে আলোচনা করেন সেবির প্রাক্তন এম এফ (নর্থ ইস্ট) সুবীমান দত্ত। ইনট্রোডাকশান অব সিকিউরিটিজ মার্কেট এন্ড ইকোসিস্টেম এবং প্রি-রিকিউজিটস টু ইনভেস্ট ইন সিকিউরিটিজ মার্কেট নিয়ে আলোচনা করেন সিডিএসএল-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট মলয় বিশ্বাস। সেবির রুল এন্ড ফাংশনস নিয়ে আলোচনা করেন সেবির সিজিএম অতনু পন।
আরও পড়ুন...