কৃষির অগ্রগতি এবং কৃষকদের মানোন্নয়নে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার সদা সচেষ্ট : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ১২, : রাজ্য এবং কেন্দ্রের বর্তমান সরকার কৃষকবন্ধু সরকার। কৃষির অগ্রগতি এবং কৃষকদের মানোন্নয়নে এই সরকার সদা সচেষ্ট। ১১ অক্টোবর এডি নগরের রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। আজ কৃষিক্ষেত্রে উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় পর্যায়ে ৩টি প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। নয়াদিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্পগুলির সূচনা করেন। এই প্রকল্পগুলির সূচনা উপলক্ষ্যে রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বক্তব্য রাখার পর রাজ্য কৃষি গবেষণা কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, বর্তমানে দেশের কৃষকরা অনেক অগ্রণী। কৃষি এবং কৃষকদের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি চালু করেছে। কৃষকদের উন্নয়নের মাধ্যমেই দেশ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ২০৪৭-এর বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্য পূরণে অগ্রসর হচ্ছে। তিনি বলেন, কৃষিক্ষেত্রে যেসব অঞ্চলে উৎপাদন কম এবং কৃষিজীবীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম সেইসব এলাকাকে কৃষিতে স্বনির্ভর করা আজ চালু হওয়া এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য। এরকম ১০০টি জেলাকে সারা দেশে চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে রাজ্যের উত্তর ত্রিপুরা জেলাও রয়েছে। আজকের এই তিনটি প্রকল্প ২০২৫-২৬ থেকে ২০৩০-৩১ পর্যন্ত চলবে। ১১টি দপ্তরকে যুক্ত করে এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হবে। এতে করে রাজ্যের প্রায় ৫৯ হাজার ৫১৭ জন কৃষক লাভবান হবেন বলেও মুখ্যমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে সরকার সর্বদা কৃষকদের স্বার্থে উন্নতিতে সচেষ্ট। আজকের এই প্রকল্পগুলির সূচনা সেই ইতিবাচক চিন্তাধারার প্রকাশ। কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতির জন্যই গত বছরের তুলনায় এবছর খাদ্যশস্যের উৎপাদন দেশে অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষিজাত পণ্যের পাশাপাশি পশুপালন, দুগ্ধ উৎপাদন, মধু উৎপাদন ইত্যাদি ক্ষেত্রেও দেশ সর্বশ্রেষ্ট হওয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে কৃষির উন্নতির পাশাপাশি কৃষিজাত পণ্যের বাজারজাত করণের উপরও জোর দেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আজ নতুন দিল্লিতে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ৪২,০০০ কোটি টাকারও অধিক মূল্যের একাধিক প্রকল্পের সূচনা এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ভারতীয় কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি রিমোটের বোতাম টিপে “প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা’, ‘মিশন ফর আত্মনির্ভরতা ইন পালসেস’ এবং ‘ন্যাশনাল মিশন অন ন্যাচারাল ফার্মিং' এর সূচনা করেন। এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ধন-ধান্য কৃষি যোজনা’ এবং ‘মিশন ফর আত্মনির্ভরতা ইন পালসেস' এই প্রকল্পগুলি দেশের লক্ষ লক্ষ কৃষকের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাবে।
একবিংশ শতাব্দীর ভারতের দ্রুত উন্নয়নের জন্য দেশের কৃষি ব্যবস্থায় সংস্কার অপরিহার্য ছিল যা শুরু হয় ২০১৪ সাল থেকে। গত এগারো বছরে ভারতের কৃষি রপ্তানি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে এবং কৃষকদের অবস্থার বিরাট পরিবর্তন হয়েছে। কৃষি বাজেট ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। জিএসটি হ্রাসে গ্রামীণ ভারত এবং কৃষকদের সর্বাধিক সুবিধা প্রদান করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিকশিত ভারত এবং ভারতকে উন্নত জাতি হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে কৃষকদের অবদান অসীম এবং এই প্রকল্প বড় ভূমিকা পালন করবে।
দিল্লিতে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনিও কৃষি এবং কৃষকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বক্তব্য তুলে ধরেন। এছাড়াও উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মৎস্য, পশুপালন ও দুগ্ধজাত মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজীব রঞ্জন সিং। এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সহ কৃষি মন্ত্রীগণ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। রাজ্যস্তরের মূল অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ দপ্তরের মন্ত্রী রতনলাল নাথ, বিধায়ক মীনারাণী সরকার, পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, কৃষি দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায় এবং রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত এফপিও এবং এফপিসি প্রতিনিধি এবং কৃষকগণ উল্লেখ্য, রাজ্যস্তরের অনুষ্ঠান শেষে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত কৃষকদের হাতে ন্যাশনাল পালস মিশনের অঙ্গ হিসাবে ‘পালস সিড’ তুলে দেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী সহ উপস্থিত অতিথিগণ কৃষকদের হাতে এগুলি তুলে দেন।
আরও পড়ুন...