জনজাতিদের ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে রাজ্য সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, অক্টোম্বর ১০, : রাজ্যের জনজাতিদের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নে রাজ্য সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে নানা উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণ করছে। জনজাতিদের ভাষা, শিক্ষা ও সংস্কৃতির বিকাশে রাজ্য সরকার নিরলস ভাবে কাজ করে চলেছে। ৮ অক্টোবর শান্তিরবাজার মহকুমার বকাফা আশ্রম ইংরেজি মাধ্যম দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের মাঠে দু'দিনব্যাপী ৩৩ তম রাজ্যভিত্তিক হজাগিরি উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, হজাগিরি নৃত্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে সুনাম অর্জন করেছে। ফলে এই নৃত্য নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। রাজ্য সরকার এই নৃত্যের দক্ষতা বৃদ্ধি এবং এই নৃত্যকে আপডেট করার জন্য নানা উদ্যোগ ও প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। শুধু তাই নয়, জনজাতিদের লোক সংগীত, লোক নৃত্য সহ অন্যান্য সংস্কৃতি বিকাশের জন্য ৩ কোটি টাকা বাজেটে সংস্থান রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতি এলাকার মানুষের আর্থ-সামাজিক মানোন্নয়নের জন্য রাজ্যের ১২টি ব্লককে অ্যাসপিরিশনাল ব্লক হিসেবে ঘোষণা করে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়েছে। এই ব্লকগুলির জন্য অধিক অর্থ বরাদ্ধ করা হচ্ছে। জনজাতি এলাকায় শিক্ষার মানোন্নয়নে স্কুল, ছাত্রাবাস, একলব্য মডেল আবাসিক বিদ্যালয় ইত্যাদি নির্মাণ করা হচ্ছে। উচ্চ শিক্ষার জন্য জনজাতি ছাত্র ছাত্রীদের এককালীন আর্থিক সাহায্য, মাধ্যমিক স্তরে বৃত্তি প্রদান, ফ্রি কোচিং প্রদান ও স্মার্ট ক্লাস রুম তৈরী করা হয়েছে। খেলাধুলার জন্য সিন্থেটিক মাঠ নির্মাণ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, জনজাতিদের ভাষা ও সংস্কৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জনজাতি সমাজপতিদের মাসিক ৫০০০ টাকা ভাতা করে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্যের ৭ জন জনজাতি অংশের বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সাহিত্য ও শিল্প কলা নৈপুণ্যের জন্য পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। সংগ্রমা উৎসবের দিনকে সরকারি ছুটি ঘোষণা, ব্রু শরনার্থীদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা, গড়িয়া পূজোর ছুটি বাড়িয়ে ২ দিন করা হয়েছে। মহারাজা বীর বিক্রমের প্রতি সম্মান জানিয়ে আগরতলা বিমান বন্দরের নাম মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দর করা হয়েছে। সেখানে মহারাজার মুর্তিও স্থাপন করা হয়েছে। এছাড়া কামান চৌমুহনীতে বীরবিক্রমের মুর্তি স্থাপন করা হয়েছে। নেশামুক্ত ত্রিপুরা গঠনে জাতি জনজাতি সকলকে এগিয়ে আসার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আহ্বান জানিয়েছেন। অনুষ্ঠানে সমবায় মন্ত্রী শুক্লা চরণ নোয়াতিয়া জনজাতিদের সঙ্গীত, নৃত্য ও সংস্কৃতির চর্চা আরও বেশী করে করার জন্য যুবক-যুবতীদের প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া বক্তব্য রাখেন বিধায়ক নন্দিতা দেববর্মা রিয়াং, টিটিএএডিসি'র সমাজ কল্যাণ ও সমাজ শিক্ষা দপ্তরের কার্য নির্বাহী সদস্য ডলি রিয়াং। স্বাগত বক্তব্য রাখেন ব্লু সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থার রাজ্য সম্পাদক লাল বাহাদুর রিয়াং। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দক্ষিণ ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি দীপক দত্ত, বিধায়ক প্রমোদ রিয়াৎ, এমডিসি ভূমিকানন্দ রিয়াং, এমডিসি সঞ্জীব রিয়াং, দক্ষিণ ত্রিপুরা জেলার জেলাশাসক মহঃসাজ্জাদ পি প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন ব্লু-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংস্থার কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শান্তিরায় রিয়াং। দু'দিনব্যাপী রাজ্যভিত্তিক হজাগিরি উৎসবে ব্লু জনজাতি সংস্কৃতির পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য জনজাতির সংস্কৃতিও তুলে ধরা হবে। উৎসবে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের উন্নয়নমূলক তথ্য সম্বলিত ৩৩টি প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়েছে। ব্লু সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংস্থার পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রান তহবিলের জন্য ১৫০০১ টাকা মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার হাতে তুলে দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.