জি.এস.টি.-র হার সংস্কারের ফলে কৃষক শ্রমিক সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ উপকৃত হবেন : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, অক্টোম্বর ৯, : জি.এস.টি. ব্যবস্থার সংস্কার একটি জনমুখী সিদ্ধান্ত। জি.এস.টি.-র হার সংস্কারের ফলে আমাদের দেশের মধ্যবিত্ত শ্রেণি থেকে শুরু করে কৃষক, শ্রমিক সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষ উপকৃত হবেন। ৮ অক্টোবর মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে দু'দিন ব্যাপী “ নেক্সট জেনারেশন জি.এস.টি.' শীর্ষক কর্মশালার সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। অর্থ দপ্তরের উদ্যোগে ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অব ইন্ডিয়ার সহায়তায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়৷
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি হলেন আস্থা ও বিশ্বাসের প্রতীক। তিনি দেশের কল্যাণে যা বলেন তাই করে দেখান। তিনিই প্রথম এক দেশ এক কর ব্যবস্থা চালু করার সাহস দেখিয়েছেন। ১ জুলাই, ২০১৭ সালে ৫টি পর্যায়ের জি.এস.টি. ব্যবস্থা চালু করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে ভারতের অর্থ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নতি ঘটে। বর্তমানে ভারত পৃথিবীতে চতুর্থ অর্থনীতির দেশে পরিণত হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন, ২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে ১১.৩৭ লক্ষ কোটি টাকা, ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৪.৮৩ লক্ষ কোটি টাকা, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৮.০৮ লক্ষ কোটি টাকা এবং ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ২০.১৮ লক্ষ কোটি টাকা জি.এস.টি. আদায় হয়েছে। আগামী ২০৪৭ সালের মধ্যে ভারতের অর্থনীতিকে ৩০ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারে পরিণত করার প্রয়াস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কাজ করে চলেছেন। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, একটি রির্পোট অনুযায়ী জি.এস.টি.-র হার সংস্কারের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর প্রতিমাসে ৪ শতাংশ ব্যয় হ্রাস হবে। তাছাড়া নতুন এই ব্যবস্থায় দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হবে, পরিবহণ ব্যয় প্রায় ৩৩ শতাংশ হ্রাস হবে, জ্বালানি খরচ হ্রাস হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশীয় পণ্য ব্যবহার, অভ্যন্তরীণ পর্যটন ব্যবস্থার উন্নয়নের উপর বিশেষ জোর দিয়েছেন। যাতে দেশের অর্থ দেশেই থাকে। ভারতের উন্নয়ন আজ চোখে পড়ার মতো। ভারতের এই উন্নয়ন কর্মসূচিকে বিভিন্নভাবে দুর্বল করারও প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। যা থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নতুন জি.এস.টি. সংস্কারের মাধ্যমে দুধ, ছানা ও রুটি সম্পূর্ণ করমুক্ত করা হয়েছে। সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্ট, সাইকেল সহ সাধারণ গৃহস্থালির পণ্যে কর মাত্র ৫ শতাংশ করা হয়েছে।
একইভাবে প্যাকেটজাত খাবার যেমন নোনতা খাবার, সস, পাস্তা, নুডলস, চকলেট, মাখন ও ঘি এখন ১২ শতাংশ বা ১৮ শতাংশ থেকে কমিয়ে মাত্র ৫ শতাংশ করা হয়েছে। জীবনবীমা ও স্বাস্থ্যবীমা নীতিমালাকে সম্পূর্ণ জি.এস.টি. মুক্ত করা হয়েছে। জীবনদায়ী ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম, ডায়াগনস্টিক কিট ও যন্ত্রপাতি হয় শূন্য বা ন্যূনতম ৫ শতাংশ করের আওতায় আনা হয়েছে। ব্যবসা বাণিজ্যের সুবিধা নিশ্চিত করতে জটিল জি.এস.টি. কাঠামোকে সরল করে দুটি স্তর করা হয়েছে। কৃষকদের জন্য ট্রাক্টর, ধান কাটার যন্ত্র ও সার এখন মাত্র ৫ শতাংশ করের আওতায়। পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সিমেন্টের কর ২৮ শতাংশ থেকে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নিয়ে অর্থমন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায় বলেন, জি.এস.টি. সংস্কারের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণি, কৃষকরা উপকৃত হবেন। শিক্ষাক্ষেত্রও লাভান্বিত হবে। জীবনদায়ী ওষুধের দাম হ্রাস হবে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বাড়বে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন অর্থসচিব অপূর্ব রায়, চিফ কমিশনার অব স্টেট ট্যাক্স ড. আকিঞ্চন সরকার, অ্যাডিশনাল কমিশনার অব স্টেট ট্যাক্স এল. রাঞ্চল, ইন্সটিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অব ইন্ডিয়ার সহ-সভাপতি সি.এ. উমেশ শর্মা।
আরও পড়ুন...