দেশ ও সমাজের কল্যাণে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের একাত্ম মানবতাবাদকে ভিত্তি করেই এগিয়ে যেতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ২৬, : পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় সবসময়ই জাতীয়তাবোধ, ভারতের কৃষ্টি, সংস্কৃতি ও পরম্পরাকে নিয়ে চিন্তাভাবনা করতেন। তিনি সবসময়ই বলতেন প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিয়ে মানব সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যেখানে প্রত্যেকেই হবে একে অপরের পরিপূরক। ২৫ সেপ্টেম্বর পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিবস উদযাপনের রাজ্যভিত্তিক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এই অনুষ্ঠানের সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা বলেন, পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় ছিলেন প্রখর ব্যক্তিত্বের অধিকারী। সর্বদাই দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে তিনি চিন্তাভাবনা করতেন। তিনি ছিলেন একাত্ম মানবতাবাদের প্রবক্তা। যেখানে তিনি বলেছেন ‘একে অপরের তরে’। দেশ সেবায় তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। স্বামী বিবেকানন্দ, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি, পন্ডিত দীনদয়ালের মতো ব্যক্তিত্বের সম্পর্কে আজকের প্রজন্মকে আরও বেশি জানতে হবে। তাহলেই দেশ ও সমাজের কল্যাণের চিন্তাধারা তৈরি হবে। যদিও পূর্বের সরকারগুলির সময় তাদের সম্পর্কে জানার কোনও উদ্যোগই গ্রহণ করা হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, কমিউনিজম, সোশ্যালিজমের মতো মতবাদগুলি মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে। তারফলে দেশের উন্নতি সম্ভব হয় না। মানুষের মনের স্বাধীনতা থাকে না৷ ফলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকাও সম্ভব নয়। তাই দেশ ও সমাজের কল্যাণে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের একাত্ম মানবতাবাদকে ভিত্তি করেই এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পন্ডিতজির ভাবধারাকে ভিত্তি করেই দেশের প্রান্তিক মানুষের উন্নয়নে কাজ করে চলেছেন। রাজ্য সরকারও সেই দিশাতেই কাজ করছে। রাজ্য সরকার প্রতি ঘরে সুশাসনের মতো কর্মসূচির মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের কাছে বিভিন্ন সরকারি সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার কাজ করছে। রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার জনকল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে সবার আস্থা অর্জন করেছে।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, একজন মানুষ হিসেবে অন্যের সম্পর্কেও চিন্তাভাবনা করা উচিত। তারজন্য মনীষীদের জীবন, দর্শন সম্পর্কে জানতে হবে। ভারতবর্ষের প্রাচীন ঐতিহ্য সম্পর্কে সকলকেই জানতে হবে। আমাদের সনাতন ধর্মের মধ্যেই এগিয়ে যাওয়ার মূল ভিত্তি লুকিয়ে রয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের সাধারণ জনগণ ও ব্যবসায়ীদের কথা চিন্তা করে জি.এস.টি.-র হার সংশোধন করা হয়েছে। বর্তমানে রাজ্য জি.এস.ডি.পি. এবং মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে ত্রিপুরা ২য় স্থানে রয়েছে। রাজ্য ফ্রন্ট রানার স্টেট হিসেবে সমাদৃত হচ্ছে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য বলেন, অন্ত্যোদয় পরিবারগুলিকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করাই বর্তমান রাজ্য সরকারের মূল লক্ষ্য। আমাদের প্রত্যেককেই স্বদেশি জিনিসপত্র ব্যবহার করা উচিত। দেশীয় প্রযুক্তিতে সৃষ্ট জিনিসই আমাদের দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহার করার প্রয়াস নেওয়া জরুরি। তাহলেই দেশ আত্মনির্ভর হবে।
আজকের অনুষ্ঠানে মরণোত্তর দীনদয়াল উপাধ্যায় জাতীয় সংহতি পুরস্কার প্রদান করা হয় স্বর্গীয় সুধীন্দ্র দাশগুপ্তকে। তাঁর কন্যা স্বপ্না দাশগুপ্ত এবং পুত্র শুভেন্দু দাশগুপ্তকে এই পুরস্কার প্রদান করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা।
পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মদিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত প্রবন্ধ প্রতিযোগিতায় ১ম স্থান অধিকার করেছে এম.বি.বি. বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী সৃষ্টি দাস। ২য় ও ৩য় স্থান অধিকার করেছে যথাক্রমে শচীন দেববর্মণ স্মৃতি সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রী স্নেহা সাহা এবং বি.বি.এম.সি.-এর ছাত্রী রেশমী নমঃশূদ্র। মুখ্যমন্ত্রী বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানে দীনদয়াল উপাধ্যায়ের উপর একটি তথ্যচিত্রও প্রদর্শিত হয়।
আজকের অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের সচিব ড. পি. কে. চক্রবর্তী ও রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য।
আরও পড়ুন...