Hare to Whatsapp
রবিবার বাড়িতে থেকে বয়স্কদের নিজের হাতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ জুস খাওয়ান: মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, জুলাই ৪, : আগরতলা,৪ জুলাই : রাজ্যবসীকে রবিবার ভোর পাঁচটা থেকে পরদিন ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সম্পূর্ণ লকডাউন পালনের আহ্বান রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। শনিবার রাতে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী বলেন, একমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য সবকিছু এদিন বন্ধ থাকবে। সবাইকে অপ্রয়োজনে বাড়ি থেকে না বের হওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী । একই সঙ্গে বাড়িঘরে যাদের বয়স্ক লোকজন রয়েছে তাদেরকে নিজের হাতে ভিটামিন সি সমৃদ্ধ জুস খাওয়ানোর পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন এদিন যদি হাতের কাছে সেই ব্যবস্থাও না থাকে, তাহলে অল্প গরম জলে খানিকটা আদা বা তুলসী পাতা মিশিয়ে তাই যেন তুলে দেয়া হয় বয়স্কদের সামনে। মুখ্যমন্ত্রী নিজেও তাঁর মাকে এদিন ফলের জুস খাওয়াবেন বলে উল্লেখ করেন । একই সাথে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় তা শেয়ার করবেন। তিনি সবাইকে বলেন, তারাও যেন একই রকম ভাবে বয়স্কদের জুস খাওয়ানোর ছবি তুলে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেন।
রাজ্যে কেন একদিনের সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা করেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন বিগত মার্চ মাস থেকে কোন সময় জনতার কার্ফু, কোন সময় লকডাউন, কোন সময় লকডাউন থেকে বেরিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ৫ এপ্রিলের আগে ত্রিপুরাতে করোনা সংক্রমিত কোন রোগী ছিল না। পরবর্তী সময় রাজ্যের নাগরিক যারা বহি:রাজ্যে ছিলেন। তারা ফিরে আসার পর সেই সংখ্যা বেড়েছে। মুখ্যমন্ত্রী তথ্য দিয়ে বলেন শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত করোনা পজেটিভ রোগীর সংখ্যা ১৪৪১। তারমধ্যে ১১৯৯ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন । ত্রিপুরায় সুস্থ হওয়ার হার ৭৯.৫ শতাংশ । মৃত্যু ০.০৭% । পার মিলিয়ন হিসেবে ন্যাশনাল রিকভার রেইটের প্রায় তিনগুণ বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান । একই সাথে সিপাহীজলা জেলার তিনটি ব্লককে কেন কনটেন্টমেন্ট জোন ঘোষণা করতে হয়েছে তাও তুলে ধরেন । উত্তর ও গোমতী জেলাতেও পজিটিভ রোগীর সংখ্যা অনেকটাই বেশি রয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানান।
রাজ্যবাসীকে আশ্বস্ত করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সরকার করোনা প্রতিরোধে মাইক্রো লেভেলেও কাজ করে চলেছে। ত্রিপুরায় পর্যাপ্ত কীটের ব্যবস্থা রয়েছে। এখন আধঘণ্টার মধ্যেই রেজাল্ট বলে দেয়া যাবে। তবে ত্রিপুরা বাসীকে আগের তুলনায় আরো একটু বেশি সংযত থাকার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন বিনা মাস্কে কেউ যেন ঘর থেকে না বের হন, তার শপথ নিতে হবে । দুই গজ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। বাজার হাটে, রাস্তাঘাটে, যে উদাসীন মানসিকতা চলে এসেছে এমনটা থেকে সরে আসতে হবে।
একই সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য ভিত্তিক যে বনমহোৎসব পালন করা হয়েছে সে বিষয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, বনোমহোৎসবে গাছ লাগালেই হয়না, গাছ কতটা বেঁচেছে তার মূল্যায়নও করতে হবে। বর্তমান সরকারের সময়ে ৯০ থেকে ৯৫ শতাংশ গাছ বাঁচছে । রাজ্য সরকার ই ট্রি লাগানোর ব্যবস্থা করেছে। ভারতবর্ষে প্রথমবারের মতো স্মৃতিবন তৈরীর কাজ শুরু হয়েছে । যদিও রাজস্থানের জয়পুরে এরকম একটা কাজ শুরু হয়েছিল, তবে পরবর্তী সময় তাকে ইকো পার্কে পরিণত করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন বনদপ্তরের প্রত্যেকটি সাব ডিভিশনে স্মৃতিবন তৈরি করা হবে । এতে স্বর্গীয় পিতা মাতার নামে বৃক্ষ রোপন করার সুযোগ থাকবে । ভারতবর্ষের যেকোনো জায়গা থেকে অনলাইনেও এই সুবিধা পাওয়া যাবে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন । এর মধ্য দিয়ে পরিবেশ যেমন নির্মল থাকবে, পাশাপাশি রাজ্যের অর্থনৈতিক বুনিয়াদ আরো মজবুত হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিনের ভিডিও বার্তায় আবারো সবাইকে রবিবারের একদিনের লকডাউন যথাযথভাবে পালন করার আহ্বান রাখেন