Hare to Whatsapp
অপরাধী গ্রেপ্তার নিয়ে সুপ্রীম কোর্ট -এর রায় অপব্যাখ্যা করছেন রতন লাল নাথ: সিপিএম
By Our Correspondent
আগরতলা, জুন ৩০, : আইনমন্ত্রী গতকাল বলেছি্লেন রক্তদান, ত্রান কাজে বাধাদানকারীদের পুলিশ আইনগত ভাবে নাকি গ্রেপ্তার করতে পারে না, কেবলমাত্র নোটিশ দিতে পারবে। আইনমন্ত্রী যুক্তি দেখিয়েছিলেন, সুপ্রীমকোর্ট ৭ বছর পর্যন্ত শাস্তিযোগ্য অপরাধের অপরাধীদের নাকি গ্রেপ্তার করার বিরুদ্ধে রায় দিয়েছে।
আইন দপ্তরের মন্ত্রীর এই বক্তব্য সম্পূর্ণ আইনের পরিপন্থি বলে আজ সিপিআই(এম) এক বিবৃতিতে দাবী করেছে।
সিপিএম -এর বিবৃতিতে বলা হয়েছে,
ফৌজদারী কার্যবিধির ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, পুলিশ অফিসার ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশ বা গ্রেপ্তারী পরোয়ানা ছাড়া নীচে বর্ণিত কারণে গ্রেপ্তার করতে পারবেঃ
১) পুলিশ অফিসার যদি মনে করেন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা অভিযোগ, তথ্য বা সন্দেহ হয় যে ওই ব্যক্তি কোন অপরাধ সংঘটিত করেছে। ২) পুলিশ অফিসার যদি সন্তুষ্ট হন যে- ওই ব্যক্তি আবারও সে ধরনের অপরাধ যাতে সংঘটিত করতে না পারে, বা সংঘটিত অপরাধের তদন্তের প্রয়োজনে, বা ওই ধরনের অপরাধী যাতে সাক্ষ্য প্রমান লোপাট বা নষ্ট করতে না পারে। অপরাধী ওই ঘটনার সাক্ষীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন কিংবা অনুরোধ উপরোধ ইত্যাদির দ্বারা পুলিশ ও আদালতে ঘটনা সংক্রান্ত তথ্য জানাতে বিরত রাখতে পারে। যদি ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার না করা হয় আদালতে তার হাজিরা নিশ্চিত করা যাবে না। পুলিশ অফিসার তার কারন লিপিবদ্ধ করবে।
ফৌজদারী কার্য্য বিধির এই ধারা থেকে এটা সুস্পষ্ট যে উপযুক্ত ঘটনার ক্ষেত্রে পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়াই যে কোন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারবে। তবে তাকে অবশ্যই গ্রেপ্তারের যথাযথ কারণ আদালতে জানাতে হবে।
সুতরাং, আইনমন্ত্রীর বক্তব্য ফৌজাদারী কার্য্যবিধির ৪১(১) ধারায় সম্পূর্ণ পরিপন্থী সিপিএম দাবী করেছে।
সিপিএম মনে করে, বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশেই মন্ত্রী এ ধরনের বক্তব্য রেখেছেন। সুপ্রীম কোর্ট অর্নেশ কুমার বনাম বিহার সরকার মামলা এবং এ সংক্রান্ত মামলায় ১৯১৪ সালের ১২৭৭ নং মামলায় ২০১৪ সালের ২রা জুলাই সুস্পষ্ট রায় দিয়েছেঃ
১১.১. সমস্ত রাজ্য সরকার গুলোকে নির্দেশ দেয়া হচ্ছে কোন পুলিশ অফিসার যেন অযথা ভারতীয় দন্ডবিধির ৪৯৮ (ক) ধারায় যুক্ত ব্যক্তিকে বিনা কারণে গ্রেপ্তার না করে। সে ক্ষেত্রে অবশ্যই যেন ফৌজদারী কার্য্যবিধির ৪১(১) (বি) (ii) ধারায় নির্দেশিত নিয়মাবলী পালন করা হয়।
১১.২. প্রত্যেক পুলিশ অফিসারকে গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে অনুসন্ধান তালিকা (চেক লিষ্ট) ৪১ ৯১) (বি) (ii) ধারা অনুযায়ী সরবরাহ করতে হবে।
১১.৩. পুলিশ অফিসার অনুসন্ধান তালিকা যথাযথভাবে দাখিল করবেন এবং তাতে কেন গ্রেপ্তার প্রযোজন হয়ে পড়েছে তার কারণ লিপিবদ্ধ করে ম্যাজিষ্ট্রেটের কাছে জমা দেবেন।
১১.৫. যদি কোন পুলিশ অফিসার অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার না করেন তবে অপরাধ সংগঠিত হওয়ার দু'সপ্তাহের মধ্যে তা আদলতকে জানাতে হবে এবং তার প্রতিলিপি জেলার পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টকে দিতে হবে।
সুপ্রীম কোর্টের রায়ের ১১.১ এবং ১১.৩ অনুচ্ছেদ থেকে এটা পরিষ্কার পুলিশ উপযুক্ত কারন লিপিবদ্ধ করে অপরাধীকে গ্রেপ্তার করতে পারে। কিন্তু আইন দপ্তরের মন্ত্রী রক্তদান শিবির ও ত্রান বন্টনকারীদের উপর আক্রমনকারী সমাজদ্রোহীদের আস্কারা দিতে সুপ্রীম কোর্টের রায় অপব্যাখ্যা করেছে, যা অত্যন্ত মারাত্মক ও বিপজ্জনক বলে সিপিএম মনে করে। মন্ত্রীর এই অপব্যাখ্যা একাংশ পুলিশ অফিসার ও জনগনের মধ্যে বিভ্রাতি সৃষ্টি করবে বলেও সিপিএম -এর বিবৃতিতে দাবী করা হয়েছে।