Hare to Whatsapp
৫ ই জুলাই রাজ্যে একদিনের লকডাউন ঘোষণা
By Our Correspondent
আগরতলা, জুন ৩০, : মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যান অন্ন যোজনার আওতায় আগামী নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। এতে দেশের গরীব শ্রেনীর ৮০ কোটি ভারতবাসীর সঙ্গে ত্রিপুরার একটা বড় অংশের মানুষের অন্নের ব্যবস্থা হবে বলে অভিমত ব্যক্ত করলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। একই সাথে রাজ্যে আগামী ৫ ই জুলাই রবিবার একদিনের লকডাউন ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন, এখন করোনা সংক্রমণে স্টেজ ১ চলছে। ত্রিপুরাবাসী স্টেজ ২ এবং স্টেজ ৩ এর জন্য কতটা সংযত আছে তা অনুধাবন করার জন্যই সরকারের এই সিদ্ধান্ত বলে তিনি জানান। ঐদিন সবাইকে নিজ নিজ বাড়িতে থাকার আবেদন রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধুমাত্র অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা ছাড়া অন্যান্য সবকিছু বন্ধ থাকবে বলে জানান তিনি।
রাজ্যবাসির উদ্দেশ্যে এক বিডিও বার্তা আনলক ২ তে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নভেম্বর মাস পর্যন্ত অর্থাৎ আগামী ৫ মাস প্রত্যেক ব্যক্তিকে ৫ কেজি চাল বা গম এবং প্রতিমাসে এক কেজি ডাল বিনামূল্যে দেয়ার এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবে ত্রিপুরা । মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এর মধ্য দিয়ে পারিবারিকভাবে করোনা মোকাবেলার পদ্ধতি আরও সুদৃঢ় হবে। এই যোজনায় ভারত সরকারের প্রায় ৯০ হাজার কোটি টাকা খরচ হবে বলেও উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী । তিনি বলেন প্রধানমন্ত্রী প্রথমে তিন লাক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করেন, পরবর্তী সময়ে কুড়ি লক্ষ কোটি টাকার প্যাকেজও আনেন। এরপর আজকের দিনে প্রধানমন্ত্রী গরীব কল্যাণ অন্ন যোজনা নভেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত রাখার ঘোষণায় সব মিলিয়ে প্রায় দেড় লক্ষ কোটি টাকার যোজনা কেন্দ্রীয় সরকার এই করোনা সংকটের সময়ে ঘোষণা করলেন । তা একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা । এর ফলে একটা বড় অংশের ভারতবাসী উপকৃত হবে।
দেশবাসীর উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর আপিল সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সবাইকে মাস্ক ব্যবহার করতে হবে, সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে হবে, অবশ্যই সেটা দুই গজের দূরত্ব অনুসরণ করতে হবে। ত্রিপুরাতে স্টেজ ওয়ান চলছে। স্টেজ ২ এবং ৩ এখনো বাকি রয়েছে । নিজের মাস্ক না থাকলে প্রয়োজনে গামছা অথবা রিসা ব্যবহার করার আবেদন আবারো রাজ্যবাসির উদ্দেশ্যে রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী। একই সঙ্গে সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সামাজিক সচেতনতা অনুসরন করে চলার পরামর্শও দেন তিনি । রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন "কোনোভাবেই ভাবা উচিত নয় যে ত্রিপুরাতে করোনা শেষ হয়ে গেছে।" যারা বহি: রাজ্য থেকে এসেছে। তাদের সঙ্গে মেলামেশা করোনার গুষ্টি সংক্রমণের সম্ভাবনাকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
করোনার সংক্রমণ আটকাতে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এতদিন যারা ট্রেনে বিমানে বহি: রাজ্য থেকে এসেছেন তাদের যতটা বেশি সংখ্যায় সম্ভব নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ।বর্তমানে রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রত্যেকের নমুনা পরীক্ষা করার। যে নতুন কীটের মাধ্যমে নমুনা পরীক্ষা করা হচ্ছে, তাতে আধ ঘণ্টার মধ্যেই ফলাফল চলে আসছে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এখন পর্যন্ত গোমতী, সিপাহীজলা ও দক্ষিন ত্রিপুরা জেলা থেকে বেশি সংখ্যায় করোনা পজিটিভ পাওয়া যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি । ত্রিপুরাতে গত ২৩ মার্চ থেকে যখন লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছিল তখন রাজ্যবসির মধ্যে যে মানসিকতা ছিল সেই মানসিকতা যাতে সবার মধ্যে অব্যাহত থাকে তার জন্য মুখ্যমন্ত্রী আবারো অনুরোধ করে বলেন, "আমি সমস্ত ত্রিপুরাবাসী কে করজোড়ে নিবেদন করব যে আপনারা জাগ্রুক থাকুন।" এই করুনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের একটা বড় অংশের মানুষের রোজগার কম হয়েছে, কেউ কেউ রোজগার হীন হয়ে পড়েছেন। তাদের স্বার্থে সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা আবারো উল্লেখ করেন তিনি। ছোটদোকনীদের জন্য স্কীম রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, স্বনির্ভর পরিবার তৈরি করতেও সরকার বদ্ধপরিকর ।গোমতী নদী দিয়ে ছোট জাহাজ অল্প সময়ের মধ্যে চলে আসবে। এর মধ্যে সরকারি চাকরির ব্যাবস্থা করতেও সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি ।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন পাশে রয়েছেন, তখন যথা সময়ের মধ্যেই তিনি ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য হিসেবে তুলে ধরতে পারবেন। করোনা পরিস্থিতির জন্য রাজ্যবাসীর কাছ থেকে একাজে বাড়তি সময় চাইতে হবে না বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মুখ্যমন্ত্রী।