Hare to Whatsapp
মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য
By Our Correspondent
আগরতলা, জানুয়ারি ২৩, : আজ উমাপদ বর্মন ও অঞ্জলি বর্মন চ্যারিটেবল ট্রাস্ট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জগন্নাথ বাড়ি রোডস্থিত আই এম এ ভবনে ভিড়ে উপচেপড়া অনুষ্ঠানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নির্বাচিত ৩৩ জন দুঃস্থ ও মেধাবী পড়ুয়ার পাশে দাঁড়ালো ট্রাস্ট । তাদের প্রত্যেকের হাতে পাঁচ হাজার টাকার চেক তুলে দেওয়া হল এবং প্রত্যেককে দেওয়া হলো দুটি বই উপহার হিসেবে । ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও আমাদের সংবিধান। যারা ৫০০০ টাকা করে পেলেন তাদের কারোর বাবা চা-শ্রমিক, কারোর বাবা দিনমজুর, কারোর বাবা অনিয়মিত কর্মচারী, কারোর বাবা ক্ষুদ্র দোকানী । তাদের প্রত্যেকের ঘরে অনটন ও অভাবের বারোমাস্যা। তার মধ্যেও এই ৩৩ জন মাথা উঁচু করে প্রতিকূলতার মাড়িয়ে পড়াশোনা করছে। চোখে স্বপ্ন ডাক্তার , ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক হওয়ার। কর্কশ দারিদ্রতায় রূঢ় বাস্তবের মাটিতে স্বপ্ন চুরমার হতে হতে হয়না। এই রকম ছাত্র-ছাত্রীদের বেছে নিয়ে ট্রাস্ট তাদের পাশে দাঁড়ালো। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার। ইনি ট্রাস্টের উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন এই ধরনের উদ্যোগ অত্যন্ত ইতিবাচক । তিনি আরো বলেন তরুণরাই আগামী দিনের আশার আলো। উমাপদ বর্মন কর্মজীবনে খাদ্য দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন ১৯৮৩ সনে। পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে ত্রিপুরা সরকারি কর্মচারী সমিতির সভাপতি ছিলেন । ১৯৯৩-র ৬ই নভেম্বর তিনি প্রয়াত হন। তাঁর স্ত্রী অঞ্জলি বর্মন স্কুল শিক্ষিকা ছিলেন। ১৭ ই জুন ২০১১ সালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাদের মৃত্যুর পর পরিবারের সদস্যরা গঠন করেছে ট্রাস্ট। উদ্দেশ্য মানুষের পাশে থাকা । আজকের সভায় পুরুষোত্তম রায় বর্মণ বলেন , উমাপদ বর্মন ও অঞ্জলি বর্মনসহজ সহজ, সরল ও সৎ জীবন যাপন করেছেন সাধ্যমত মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করেছেন এবং অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছেন । তাঁদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ট্রাস্ট গঠন করা হয়। এখন অব্দি ট্রাস্ট প্রায় ১৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে মাথাপিছু ৫০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করেছে । একই সাথে ৫০ জন দুঃস্থ রোগীকে চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন রকমের আর্থিক সাহায্য করেছে । ট্রাস্টের উদ্যোগে প্রতি শনি ও রবিবার মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৫০ জন ছাত্রছাত্রীকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা বিনামূল্যে পড়াশোনার বিষয়ে পরামর্শ দেন । আগামী দিনে আরও কাজ করতে চায় ট্রাস্ট। ট্রাস্টের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে তারা যা করছেন তা সামান্য এবং এটা করা তাদের কর্তব্য । এরই প্রতিফলন ঘটেছে অনুষ্ঠানে । সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভিড় করেছেন ট্রাস্টের উদ্যোগকে সমর্থন জানাতে। অনুষ্ঠানে সঞ্চালনা করেন দীপ্রদিধীতি রায় বর্মন মুখবন্ধে দাদু দিদিমার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাদের পথে হাঁটার কথা জানিয়েছেন সবাইকে । সঙ্গীত আলেখ্য পরিবেশন করেন মুকুল রায় ও সামন্তা সাহা। মঞ্চে অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন নবতিপর নিহার গুহ, ট্রাস্ট সম্পাদক সুব্রত দেববর্মা, সহ-সভাপতি নিখিল দত্ত, ট্রাস্ট সভাপতি ডক্টর সমর দাস সবাইকে ধন্যবাদ জানান। ট্রাস্টের পক্ষে গৌতম রায় বর্মণ জানিয়েছেন আগামী দিনে আরো বড় কলেবরে কাজ করতে চায় ট্রাস্ট। আজকের অনুষ্ঠানে যারা সাহায্য পেয়েছেন তাদের কাছে ট্রাস্টের একটাই প্রত্যাশা, আগামী দিনে তারা বড় হয়ে মানুষের পাশে থাকবে , ট্রাস্ট তাদেরকে শুভেচ্ছা জানিয়েছে এবং ট্রাস্ট একথা বলেছে দারিদ্রতা জন্য মাথা নিচু করার কোনো কারণ নেই । কারণ দারিদ্রতা একটি সামাজিক অভিশাপ। ছাত্র-ছাত্রীদের মনোবল বাড়াতে আজকের অনুষ্ঠান সাহায্য করবে ।