সর্বভারতীয় স্তরের যে কোনও নীতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্য এখন সমগ্র দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, সেপ্টেম্বর ১১, : সাধারণ নাগরিকদের জন্য সময়মতো এবং সঠিক বিচারের ব্যবস্থা করে দিতে পারলেই আইনি ব্যবস্থার প্রতি তাদের আস্থা বজায় থাকবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির চিন্তাধারাতেই ঔপনিবেশিক আমলের ৩টি ফৌজদারি আইন পরিবর্তিত করে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা, ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম সমস্ত দেশে গত ১ জুলাই, ২০২৪ চালু করা হয়েছিল। ১০ সেপ্টেম্বর হাঁপানিয়া আন্তর্জাতিক মেলা প্রাঙ্গণের ইন্ডোর এক্সিবিশন হলে ৫ দিনব্যাপী ৩টি নতুন ফৌজদারি আইন সম্পর্কিত রাজ্যস্তরীয় এক প্রদর্শনীর সূচনা করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে এই প্রদর্শনী খোলা থাকবে। নতুন এই ৩টি ফৌজদারি আইন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরের পক্ষ থেকে প্রদর্শনী স্টল খোলা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে আয়োজিত প্রদর্শনীর তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের সাধারণ জনগণকে নতুন আইনগুলি সম্পর্কে আরও সচেতন করে তুলতেই এই প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, দেশের আইন ব্যবস্থায় এই ৩টি নতুন আইনের সংযোজন এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ। নাগরিকদের দ্রুত ন্যায়বিচার প্রদানের কথা মাথায় রেখেই এই পরিবর্তন করা হয়েছে। সময়ে সময়ে অন্যান্য অনেক ব্যবস্থার সরলীকরণের মাধ্যমে নাগরিক পরিষেবাকেই সর্বাপেক্ষা গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে এই আইনগুলি প্রণয়নের প্রাথমিক প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সভাপতিত্বে গুয়াহাটিতে একটি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। সেখানে রাজ্যের গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের মধ্যে কিছুটা খামতি লক্ষ্য করা গেলেও এই আইন প্রণয়নে সংশ্লিষ্ট সকলের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় রাজ্য সরকার প্রয়োজনীয় সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে সর্বভারতীয় স্তরের যে কোনও নীতি ও প্রকল্প বাস্তবায়নে রাজ্য এখন সমগ্র দেশের মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে। রাজ্যে নাগরিক পরিষেবা ও ব্যবসায়িক পরিবেশ গড়ে তুলতে অনেক নিয়মনীতির সরলীকরণ করা হয়েছে। যা রাজ্যের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে। মুখ্যমন্ত্রী নতুন এই ফৌজদারি আইনগুলির বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনায় সময়মতো বিচার প্রদান, অযথা হয়রানি বন্ধ, তদন্তের ক্ষেত্রে ফরেন্সিক ও ডিজিটাল ব্যবস্থার গুরুত্ব বৃদ্ধি সহ শিশু, মহিলা, ৬০ বছরের উর্ধ্বের ব্যক্তিদের জন্য এই আইনে কি কি সুবিধা রয়েছে তা নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন নাগরিকবান্ধব এই সকল আইন নাগরিকদের বিচার প্রদানে সহায়ক হবে।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় মুখ্যসচিব জে. কে. সিনহা বলেন, দৃঢ়তা, নিশ্চয়তা ও একাগ্রতার সঙ্গে কোনও কাজ করলে তাতে অবশ্যই সফল হওয়া যায়। রাজ্যে নতুন এই ফৌজদারি আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থা নিজ নিজ ভূমিকা গুরুত্ব সহ পালন করছে। আলোচনায় রাজ্য পুলিশ মহানির্দেশক অনুরাগ বলেন, আইনগুলি হল নাগরিকবান্ধব ও নাগরিক কেন্দ্রিক। যা সাধারণ নাগরিকের কাছে আইন ব্যবস্থাকে সহজ করে তুলবে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও আলোচনা করেন স্বরাষ্ট্র দপ্তরের সচিব অভিষেক সিং। অনুষ্ঠানে এছাড়া উপস্থিত ছিলেন বিধায়ক মিনারাণী সরকার, অতিরিক্ত পুলিশ মহানির্দেশকদ্বয় জি.এস. রাও (আর্ম পুলিশ) এবং এম. রাজা মুরুগন (ট্রেনিং)।
অনুষ্ঠানের শুরুতে আরক্ষা প্রশাসনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়। উদ্বোধনী পর্বের পর মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ প্রদর্শনী স্টলগুলি ঘুরে দেখেন। আজকের এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাগণ ছাড়াও বিভিন্ন মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, আশাকর্মী, অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীগণও উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন...