চিকিৎসা পরিষেবার সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে চিকিৎসক ও রোগীর পরিজন উভয়কে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৮, : চিকিৎসকদের তাদের কাজের প্রতি সর্বোচ্চ দায়বদ্ধতা রেখে সাধারণ মানুষকে পরিষেবা প্রদান করতে হবে। তবেই রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থার ভিত্তি তৈরি হবে। হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবার সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখতে চিকিৎসক ও রোগীর পরিজন উভয়কে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করতে হবে। ২৭ আগস্ট ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ ও ড. বি আর আম্বেদকর টিচিং হাসপাতালের ২০তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। হাসপাতালের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে আয়োজিত প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানের পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী কলেজ চত্বরে খেলার মাঠের সংস্কার কাজ এবং নতুন গ্যালারির উদ্বোধন করেন। এছাড়া ট্রমা কেয়ার সেন্টার (জি+৪), আবাসিক ভবন (জি+ ১৩) নির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে একটি রক্তদান শিবিরেরও আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের স্বচ্ছতার বিষয়টিকে প্রশংসা করে রাজ্যের অন্যান্য স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলিতেও এধরণের স্বচ্ছতা ব্যবস্থা গড়ে তোলার উপর জোর দেন। তিনি বলেন, চিকিৎসকের পেশা একটি মহৎ পেশা। এই সম্মানজনক অবস্থান বজায় রাখতে চিকিৎসকদেরও পরিষেবা নিতে আসা মানুষদের দায়বদ্ধতার সাথে চিকিৎসা করা প্রয়োজন। বর্তমানে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এক অভূতপূর্ব পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যাকে মানব কল্যাণে ব্যবহার করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এআই'র মতো ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে চিকিৎসা পরিষেবাকে এক অনন্য স্তরে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু এক্ষেত্রে চিকিৎসকদেরও দক্ষতা বিকাশ অত্যন্ত আবশ্যক। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে বর্তমানে এমবিবিএস-এর ৪০০টি সিট রয়েছে। ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজেও এমবিবিএস-এর সিট ১০০ থেকে ১৫০ করার জন্য সংশ্লিষ্টদের নিকট অনুরোধ জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে তাদের কাজকর্মের আরও প্রচার প্রসার করার জন্য উদ্যোগ নিতে পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠানে আলোচনায় স্বাস্থ্য সচিব কিরণ গিত্যে বলেন, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নে রাজ্যের জিডিপি ৩ শতাংশ ব্যয় করা হয়। যা দেশের বিভিন্ন বড় রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই বেশি। রাজ্যের চিকিৎসা ক্ষেত্রে সর্বাধিক ব্যবসায়িক বিনিয়োগ হচ্ছে। জনজাতি এলাকায় স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে আরও একটি মেডিক্যাল কলেজ স্থাপনের লক্ষ্য রয়েছে বলে জানান স্বাস্থ্য সচিব। অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সোসাইটি ফর ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান ডা. প্রমথেশ রায় ও মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন সাহা, ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর (ডা.) অরিন্দম দত্ত, প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদযাপন কমিটির সচিব প্রফেসর (ডা.) এ কে চাকমা প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এদিন কলেজের বিভিন্ন পরীক্ষায় কৃতি ছাত্রছাত্রী এবং ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে কলেজের প্রাক্তন শিক্ষক-শিক্ষিকা, ছাত্রছাত্রী সহ কলেজের চিকিৎসক, শিক্ষাকর্মী এবং বিভিন্ন স্তরের কর্মচারিগণ উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন...