আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ক্ষেত্রে যুব সম্প্রদায়ের বিরাট ভূমিকা রয়েছে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, আগষ্ট ২৪, : আত্মনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা তথা আত্মনির্ভর ভারত গড়ার ক্ষেত্রে যুব সম্প্রদায়ের বিরাট ভূমিকা রয়েছে। সমাজসেবা, দেশপ্রেম, ভ্রাতৃত্ববোধ, কুসংস্কার মুক্ত সমাজ গড়ার মধ্য দিয়েই আত্মনির্ভর দেশ গড়ে তোলা সম্ভব। এই চেতনা উন্মেষের ক্ষেত্রে দেশের এনএসএস যুবাদের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। ২৩ আগস্ট আগরতলার নজরুল কলাক্ষেত্রে সপ্তম উত্তর-পূর্ব এনএসএস উৎসব ২০২৫ এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। উল্লেখ্য যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের ত্রিপুরা স্টেট এনএসএস সেল এবং কেন্দ্রীয় যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া মন্ত্রকের গুয়াহাটিস্থিত এনএসএস রিজিওনাল ডাইরেক্টরের যৌথ উদ্যোগে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। এই উৎসব আগামী ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চলবে।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যুবকরাই দেশের তথা উত্তর পূর্বাঞ্চলের ভবিষ্যৎ। এই যুবসমাজকে সঠিকভাবে পরিচালনার ক্ষেত্রে শিক্ষক সমাজ ও অভিভাবকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। প্রকৃত শিক্ষাদানের মাধ্যমেই যুবকরা আগামীদিনের দেশের চালিকাশক্তি হয়ে দাঁড়াবে। শিক্ষাই হচ্ছে জাতির সফলতা প্রাপ্তির মূল সেতু। একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর শিক্ষা ছাত্রাবস্থা থেকেই গ্রহণ করা আবশ্যক। এতে সমাজে ইতিবাচক প্রভাব জন্মে। এই প্রসঙ্গে স্বামী বিবেকানন্দের উক্তি উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস থাকলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। এই আত্মবিশ্বাসের জন্ম হয় ইতিবাচক পদক্ষেপের মাধ্যমে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশের তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে বিকশিত ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখছেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি ছাত্রছাত্রীদের সাথে মতবিনিময় করছেন। তাদের মতামতকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, নরেন্দ্র মোদি দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত হয়েছে। রাজ্যগুলির সার্বিক উন্নয়নে নতুন মাত্রা সংযোজিত হয়েছে। তিনি এই অঞ্চলের রাজ্যগুলিকে অষ্টলক্ষ্মী নামে অভিহিত করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর হাতে নেওয়া হীরা কর্মসূচি তথা অ্যাক্ট ইস্ট পলিসির সফল বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চল শিক্ষা, যোগাযোগ ব্যবস্থা সহ সার্বিক ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতি হয়েছে। বিগত দিনে এই উত্তর পূর্বাঞ্চল উপেক্ষিত ছিল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আত্মনির্ভর ভারত গড়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, আত্মনির্ভর ভারত শুধু স্লোগান নয়, ১৪০ কোটি ভারতবাসীর একটি আত্মনির্ভরতার প্রতি সংকল্প। এটি একটি জন আন্দোলন। এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী স্বদেশী সামগ্রী ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীর ভোকাল ফর লোকালের কথা তুলে ধরেন। মুখ্যমন্ত্রী পাঁচ দিন ব্যাপী এই উৎসবের সার্বিক সফলতা কামনা করেন।
অনুষ্ঠানে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের মন্ত্রী টিংকু রায় বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মার্গ দর্শনে উত্তর পূর্বাঞ্চল সহ ত্রিপুরা দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। এক্ষেত্রে যুব সমাজ সহ এনএসএস-র গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমাজকে সুদৃঢ় করার ক্ষেত্রে এনএসএসের যুবকরা প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছে। যা অত্যন্ত গর্বের দাবি রাখে। তিনি বলেন, রাজ্যের ছেলেমেয়েরা বর্তমানে ক্রীড়া সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছে।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের সচিব ডঃ পি কে চক্রবর্তী বলেন, ৫৬ বছর ধরে এনএসএস বা জাতীয় সেবা প্রকল্পের যুব সম্প্রদায় স্বার্থহীন চিত্তে দেশের জন্য কাজ করে চলছে। উত্তর-পূর্ব এনএসএস উৎসব ২০২৫ ভারতের বৈচিত্রের মধ্যে ঐক্যের একটি প্রতিফলন। এই ঐক্যের উপর ভিত্তি করেই আগামীদিনে দেশ বিকশিত ভারত গড়ার ক্ষেত্রে কার্যকরী ভূমিকা নেবে।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি রাজীব কুমার সিং। উপস্থিত ছিলেন গুয়াহাটিস্থিত এন এস এস রিজিওনাল ডিরেক্টর-এর রিজিওনাল ডিরেক্টর ডি. কার্থিগিয়ান। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া দপ্তরের অধিকর্তা এল ডার্লং।
আরও পড়ুন...