রাজ্যের চিকিৎসকগণই অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো দক্ষতা অর্জন করেছেন : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, আগষ্ট ১, : যে কোনও জটিল রোগের চিকিৎসা যাতে রাজ্যেই করা যায় সে লক্ষ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। বহির্রাজ্য থেকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক আনার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। ৩১ জুলাই হাপানিয়াস্থিত ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে দু'দিনব্যাপী বৃক্ষরোপণ ও রক্তদান কর্মসূচির সূচনা করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ, রোটারি ক্লাব এবং ত্রিপুরা মেডিক্যাল ও নার্সিং কলেজের কর্মচারি সংঘের উদ্যোগে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমানে রাজ্যের চিকিৎসকগণই অভিজ্ঞতা অর্জনের মধ্য দিয়ে চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান চালানোর মতো দক্ষতা অর্জন করেছেন। রাজ্য সরকার রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো উন্নয়নের মধ্য দিয়ে আগামীদিনে রাজ্যকে মেডিক্যাল হাব বানানোর পরিকল্পনা গ্রহণ করে কাজ করছে। তিনি বলেন, উত্তর পূর্বাঞ্চলের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ এক বিশেষ স্থানে রয়েছে। তিলে তিলে গড়ে উঠা এই প্রতিষ্ঠান আজ বহু মানুষের ভরসার স্থল হয়ে উঠছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বর্তমান রাজ্য সরকার রাজ্যের সাধারণ মানুষের সার্বিক বিকাশে চিন্তাশীল। ২০১৮ সালের পর থেকে রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নে সর্বাধিক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে রাজ্য ও জেলাস্তরের হাসপাতাল ছাড়াও ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং কলেজ, ফার্মেসি কলেজ ইত্যাদি রয়েছে। এছাড়াও এ.জি.এম.সি. ও জি.বি.পি. হাসপাতালে প্রায় ২৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে কর্পোরেট ধাঁচে সুপার স্পেশালিটি ব্লক তৈরি করা হয়েছে। আই.এল.এস. হাসপাতালের পাশেই সর্বসুবিধাযুক্ত চক্ষু হাসপাতাল স্থাপনের বিষয়েও আলোচনা চলছে।

রক্তদান সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রক্তের কোনও ধর্ম নেই। রক্তদানের মাধ্যমেই মানবতাবোধ দৃঢ় হয়। একজন পূর্ণ বয়স্ক পুরুষ ও মহিলা বছরে যথাক্রমে ৪ বার ও ৩ বার রক্তদান করতে পারেন। রক্তদান করলে শারীরিকভাবেও সুস্থ থাকা যায়। রাজ্যে বর্তমানে সরকারি ও বেসরকারি মিলে মোট ১৪টি ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। নেশার আসক্তিকরণ, এইচ.আই.ভি., এইডস ইত্যাদি বিষয়ে গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রী সবার প্রতি আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতিই আমাদের বেঁচে থাকার রসদ যোগায়। প্রকৃতি থেকে শিক্ষা নিয়েই আমাদের এগিয়ে যাওয়া উচিত। মানব জীবনে গাছের গুরুত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিতেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘এক পেড় মা কে নাম'-এর মতো কর্মসূচির সূচনা করেছেন।

অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন সোসাইটি ফর ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের চেয়ারম্যান প্রমথেশ রায়, মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক স্বপন সাহা এবং ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর (ডা.) অরিন্দম দত্ত। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রোটারি ক্লাবের সভাপতি ডা. দামোদর চ্যাটার্জি, বি.আর.এ.এম. টিচিং কলেজের মেডিক্যাল সুপারিন্টেন্ডেন্ট ডা. জয়ন্ত কুমার পোদ্দার প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে রোটারি ক্লাবের আগামী ১ বছরের কর্মসূচি ‘দৃষ্টিপথ’-এর সূচনা করেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দৃষ্টিপথ কর্মসূচিতে কোমর ও হাঁটুর প্রতিস্থাপনকারী রোগীদের মধ্যে সহায়ক সামগ্রী এবং ১৪ বছরের নীচে শিশুদের মধ্যে বিনামূল্যে চশমা বিতরণ করা হবে। আজ অনুষ্ঠানে প্রতীকী হিসেবে মুখ্যমন্ত্রী ২ জন সুবিধাভোগীকে সহায়ক সামগ্রী ও চশমা তুলে দেন। অনুষ্ঠান শুরুর পূর্বে মুখ্যমন্ত্রী বিবেকানন্দ অডিটোরিয়াম প্রাঙ্গণে একটি চারাগাছ রোপণ করেন এবং রক্তদান শিবির পরিদর্শন করে রক্তদাতাদের উৎসাহিত করেন।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.