Hare to Whatsapp
রাজ্যের দুই প্রধান হাসপাতাল ও মেডিক্যাল কলেজ চলছে বিনা নিউরোলজিস্ট ও কার্ডিওলজিস্ট ছাড়া
By Our Correspondent
আগরতলা, জুন ৬, : কোভিড জনিত পরিস্থিতি মোকাবেলা ও নিয়ন্ত্রণে যখন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের দিশেহারা অবস্থা ঠিক তখন কর্মী স্বল্পতায় নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দিন দিন উদ্বেগজনক পর্যায়ে যাচ্ছে রাজ্যে। খোদ এজিএমসি-তেই দেখা দিয়েছে চিকিৎসা সংকট। করোনা ছাড়া অন্যান্য রোগের চিকিৎসা অনেকটাই থমকে দাড়িয়েছে। এই পরিষেবার বেহাল অবস্থার কথা কে কাকে বলবে তা এখন লাখো টাকার প্রশ্ন। কেননা স্বাস্হ্য দপ্তরের দায়িত্বে খোদ মুখ্যমন্ত্রী।সুদীপ রায় বর্মন কে মন্ত্রীত্ব থেকে অপসারিত করার পরপর স্বাস্হ্য পরিষেবা চলতে গিয়ে থমকে যায়।
বলা চলে নন কোভিড রোগীদের জিবিতে কোন চিকিৎসাই নেই। উদ্ভত অবস্থার প্রেক্ষিতে সম্প্রতি এজিএমসিতে এক অভাবিত পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে। অবাক হলেও এটা ঘটনা রাজ্যের বৃহত্তম হাসপাতালে একজন নিউরো সার্জন যেমন নেই তেমনি নেই কা্রডিয়াক সার্জন, নেফ্রোলজিষ্ট। সবেধন নীলমণি নিউরোসার্জন এখন কোয়েরেন্টাইনে রয়েছেন। অথচ ওই ভদ্রলোক এজিএমসি তে বেশ কিছু সফল জটিল অপারেশন করেছেন। ছুটি থেকে আসার পরই ইনি কোয়েরেন্টাইনে চলে যান। অন্য কোন নিউরোসার্জন না থাকায় ষ্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীরা বিপাকে পড়েছেন। বেশী দিন আগের নয়, গত ৪ জুন এর ঘটনাটা। উত্তম দেবনাথ নামে রাজ্য এইডস কনট্রোল সোসাইটির এক কর্মীকে এজিএমসিতে ভর্তি করানো হয়। পরীক্ষায় দেখা যায় সে ষ্ট্রোকে আক্রান্ত। কিন্তু চিকিৎসা কে করবে? কারন নিউরোসার্জন নেই, নেই কারডিওলজিস্ট। রোগীর আত্মজনেরা তখন তাঁকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু কিভাবে নেয়া হবে? এম্বুলেন্স যে নেই। হাসপাতালের এম্বুলেন্স এর জন্য গোটা হাসপাতাল চষেফেলা হয়। ১১২/১০২ তে ফোন করে করে এরা ক্লান্ত হয়ে যান। একে ওকে ধরে পরে বহু চেষ্টা করে সন্ধ্যায় জিবি-র এম্বুলেন্সেই রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওখানেই ওর এখন চিকিৎসা চলছে। সম্প্রতি জিবিতে বিনা চিকিৎসায় একাধিক রোগীর মৃত্যুও হয়েছে বলে অভিযোগ।
তাছাড়া জিবি হাসপাতালে অরাজগতারও শেষ নেই। হাসপাতালের কোন কোন ওয়ার্ডে কখন কোন কোন চিকিৎসক দের ডিউটি তার কোন ধরনের ডিসপ্লে বোর্ড নেই। অথচ বাইরের রাজ্যের প্রতি হাসপাতালে ডিসপ্লে বোর্ড রয়েছে। এতে রোগিরা যেমন উপকৃত হন ঠিক তেমনি রোগীদের নিকটজনেরও সুবিধা হয়ে থাকে। কেননা এতে তদ্বির তদারকি যেমন করা যেতে পারে তেমনি ভূল ত্রুটির জন্য দায়বদ্ধ করা সম্ভব হয়।
জিবি হাসপাতালে অপেক্ষাকৃত কম টাকায় চিকিৎসা যে হচ্ছে না তা নয়। চিকিৎসা হচ্ছে যথারীতি। তবে চিকিৎসকদের বড় অংশ করোনা ভাইরাস চিকিৎসায় নিয়োজিত। এটা খুবই স্বাভাবিক। কারন রাজ্যে করোনা রোগী বাড়ছে। বাড়ছে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা।
কিন্তু এখন মহা সমস্যায় পড়েছেন কিডনী, ডায়াবেটিস কার্ডিওলজি এবং নিউরোলজি সম্পর্কিত রোগীরা। কারন এসব রোগের চিকিৎসকই নেই। আর অন্যান্য চিকিৎসক যারা আছেন তাঁরা তো কভিভ চিকিৎসায় নিয়োজিত। কিডনি, ডায়াবেটিস রোগীদের দেখছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। আসলে সমস্যার অন্ত নেই। অন্তহীন সমস্যার সমাধান কিভাবে তারও কোন দিশা নেই।
সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো- জিবি হাসপাতালের সাথে আগরতলা মেডিক্যাল কলেজেও যুক্ত। অথচ একটা মেডিক্যাল কলেজ চলেছে বিনা কার্ডিওলজিস্ট ছাড়া। নিউরোলজি-র মাত্র একজন চিকিৎসক। হাসপাতালের চিকিৎসকদের অভিযোগ, এসব সমস্যার বিষয়গুলি যে সরকার জানেন না তা নয়। কিন্তু প্রতিকারে কারোর কোন উদ্যোগ নেই।
শুধু জিবি হাসপাতাল নয়, নিউরোলজি ও কার্ডিওলজিস্ট নেই ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজেও। অথচ এই দুটি সাবজেক্ট এই দুই মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পড়ানোও হয়। কিন্তু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার বা প্রোফেসার ছাড়াই চলছে পড়াশোনা।