ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে আগরতলা শহরের জন্য প্রায় ৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রিং রোড করার উদ্যোগ নেওয়া হবে : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ১৯, : কোনও একটি রাজ্যের অর্থনৈতিক সহ সার্বিক অগ্রগতির জন্য পরিকাঠামোগত উন্নয়ন অপরিহার্য। রাজ্যের বর্তমান সরকার রাজ্যবাসীকে উন্নত পরিষেবা প্রদানের লক্ষ্যে আধুনিক এবং উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য কাজ করছে। ১৮ জুলাই প্রজ্ঞাভবনে ইন্ডিয়ান বিন্ডিং কংগ্রেস আয়োজিত ‘ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনাচক্রে প্রধান অতিথির ভাষণে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নত পরিকাঠামো ব্যবসা বাণিজ্য, উৎপাদনশীলতা, নির্মাণ, স্বাস্থ্য সহ জীবনযাত্রার মানকে উন্নত ও ত্বরান্বিত করে। পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে ইঞ্জিনিয়ারদের অন্যতম ভূমিকা রয়েছে। তাদের উদ্ভাবনী চিন্তাধারার ফলেই উন্নত পরিকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে। এই ধরনের আলোচনাচক্র ইঞ্জিনিয়ারদের আরও সমৃদ্ধ করবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা সহ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির সার্বিক পরিকাঠামোর মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে এই ধরনের আলোচনাচক্র বিশেষ প্রভাব ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে অষ্টলক্ষ্মী বলে আখ্যায়িত করেছেন। অ্যাক্ট ইস্ট পলিসি উত্তর পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। প্রধানমন্ত্রীর দিক নির্দেশনায় রাজ্যের বর্তমান সরকারও জনগণের সামগ্রিক উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পরিকাঠামোগত উন্নয়নের লক্ষ্যে এবারের রাজ্য বাজেটে ৭ হাজার কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ রাখা হয়েছে। তিনি বলেন, রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের (সড়ক ও সেতু) অধীনে রাজ্যে প্রধান সড়ক, গ্রামীণ সড়ক, জেলা সড়ক সহ প্রায় ১০,৮ ১৮:৪২৩ কিলোমিটার সড়ক রয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে ৯২৩ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের জাতীয় সড়ক রয়েছে। এরমধ্যে ৫০৯ কিলোমিটার সড়ককে ডাবল লেনে উন্নীত করা হয়েছে। এছাড়াও রাজ্যে সেতু ও কালভার্ট রয়েছে ৩ হাজার ৯৩৯টি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে আগরতলা শহরের জন্য প্রায় ৪৯ কিলোমিটার দীর্ঘ রিং রোড করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। যানজটের সমস্যা নিরসনের লক্ষ্যে রাজ্যে আরও উড়াল পুল নির্মাণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সমস্ত রেলস্টেশনগুলিকে জাতীয় সড়কের সাথে সংযুক্ত করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে।
উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকাতে অবস্থিত হওয়ায় সমস্ত নির্মাণকাজে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখে গুর্খাবস্তিতে সুউচ্চ অফিস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্যে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রেল, সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা, জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা ইত্যাদির কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ইন্ডিয়ান বিল্ডিং কংগ্রেসের চেয়ারম্যান বাস্তুকার শ্যামলাল ভৌমিক, ইন্ডিয়ান বিল্ডিং কংগ্রেসের রাজ্য শাখার সভাপতি চিন্ময় দেবনাথ, বাস্তুকার রাজ চক্রবর্তী, বাস্তুকার ও. পি. গোয়েল প্রমুখ। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের পূর্ত দপ্তরের মুখ্য বাস্তুকার রাজীব দেববর্মা, ইন্ডিয়ান বিল্ডিং কংগ্রেসের সম্পাদক বাস্তুকার ভি. আর. বনসল। অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী একটি স্মরণিকা এবং অফিসিয়াল টেকনিক্যাল জার্নালের আবরণ উন্মোচন করেন।
আরও পড়ুন...