Share Whatsapp

ত্রিপুরার সোনামুড়া ও বাংলাদেশের দাউদকান্দি প্রটোকল রুট চুক্তিনামা সাক্ষর

By Our Correspondent

আগরতলা, মে ২১, : মুখ্যমন্ত্রীর প্রচেষ্টা বাস্তবের রূপ দেখল। আজ ঢাকায় এক ঐতিহাসিক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি পেল সোনামুড়া ও দাউদকান্দির মধ্যেকার প্রটোকল রুট। কিছুদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে চিঠি লিখেছিলেন। গত ১৪ তারিখ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত ভিডিও কনফারেন্সেও বিষয়টি উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী। মাত্র ৬ দিনের মধ্যে আজ ঢাকায় প্রটোকল রূট সংক্রান্ত সংযোজনে স্বাক্ষর করে উভয় দেশ। এজন্য মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ধন্যবাদ জানিয়েছেন উভয় দেশের প্রধানমন্ত্রীকে। বিশেষ করে এই অঞ্চলের উন্নয়নে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং ধন্যবাদ জানান।

আগেই ভারত-বাংলাদেশের মধ্যকার বৈঠকে আলোচনার সময় দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সহজতর করা, প্রটোকল রুট সম্প্রসারণ, নতুন রুটের অন্তর্ভুক্তি এবং কল অফ পোর্ট ঘোষণার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। প্রটোকলটিতে আজ দ্বিতীয় সংযোজন স্বাক্ষরের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্তগুলি কার্যকর করা হয়েছে।

ইন্দো-বাংলাদেশ প্রটোকল (আইবিপি) রুটের সংখ্যা ৮ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হচ্ছে এবং বিদ্যমান রুটে নতুন স্থানও যুক্ত করা হয়েছে। এতে প্রথমেই গোমতী নদীর সোনামুড়া-দাউদকান্দি (৯৩ কিমি) আইবিপির ৯ম ও ১০ম রুট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এটি ত্রিপুরা এবং সংলগ্ন রাজ্যগুলির সাথে ভারত-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে এবং উভয় দেশের নদী-দূরবর্তী অঞ্চলেও সহায়তা করবে। এই রুটটি ১ থেকে ৮ পর্যন্ত বিদ্যমান সকল আইবিপি রুটকে সংযুক্ত করবে।

বর্তমান প্রটোকলের অধীনে বিদ্যমান ছয়টি পোর্ট অফ কল হলোঃ ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ, পাণ্ডু, শিলঘাট এবং ধুবড়ি। বাংলাদেশের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ, আশুগঞ্জ ও পানগাঁও। আজকের স্বাক্ষরে ভারতের পক্ষ থেকে নতুন যুক্ত হওয়া পাঁচটি বন্দর হলো ধুলিয়ান, মাইয়া, কোলাঘাট, সোনামুড়া এবং যোগিগোফা। আর বাংলাদেশের বন্দরগুলো হলো রাজশাহী, সুলতানগঞ্জ, চিলমারী, দাউদকান্দি এবং বাহাদুরাবাদ। এছাড়াও, এই সংযোজনের মাধ্যমে ভারতের ত্রিবেলি (ব্যান্ডেল) ও বদরপুর এবং বাংলাদেশের ঘোড়াশাল ও মুক্তারপুর এই দু’টি বন্দর সম্প্রসারণের ফলে দুই দেশের পোর্ট অফ কলও সম্প্রসারিত হল। পোর্ট অফ কলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে এগারটি ও দুইটিতে।

এই প্রটোকলের আওতায় উভয় দেশের অভ্যন্তরীণ নৌযানগুলি নির্ধারিত প্রটোকল রুটে চলাচল এবং দুই দেশের পোর্ট অফ কল-এ নোঙর করে পণ্য উঠা-নামা করতে পারে। প্রটোকল রুটে ভারতের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে ট্রানজিট কার্গো এবং বাংলাদেশে রপ্তানি কার্গো চলাচলে উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। ভারতীয় ট্রানজিট কার্গোর পণ্যসমূহ হলো মূলত উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য কয়লা, ফ্লাই-অ্যাশ, পিওএল এবং ওডিসি। চলাচলের অন্যান্য সম্ভাব্য কার্গো পণ্য হলো সার, সিমেন্ট, খাদ্যশস্য, কৃষিপণ্য, কন্টেইনার কার্গো ইত্যাদি।

আশা করা যায়, প্রটোকলে এই সংযোজনগুলি ব্যবসায়ীদের এবং উভয় দেশের জনগণের জন্য নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি এবং ব্যয় সংকোচনের মাধ্যমে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে ব্যাপকভাবে সহায়তা করবে।

বিদ্যমান কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে এবং সদ্য সংযুক্ত প্রটোকল রুটের মাধ্যমে এই যোগাযোগ, উভয় দেশের বাণিজ্য ও ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের জন্য অর্থনৈতিক, দ্রুত, নিরাপদ এবং দূষণমুক্ত পরিবহণ ব্যবস্থায় সহায়ক ভূমিকা রাখবে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের পরিবেশগত সুবিধাও পাওয়া যাবে।

আজ ঢাকায় ভারতের পক্ষে হাই কমিশনার রীভা গাঙ্গুলি দাশ এবং বাংলাদেশের পক্ষে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ ও বাণিজ্য সম্পর্কিত প্রটোকলের এই দ্বিতীয় সংযোজনটি স্বাক্ষর করেন।


You can post your comments below  
নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।  
বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।
 
Free Download Avro Keyboard  
Name *  
Email *  
Address  
Comments *  
 
 
Posted comments
Till now no approved comments is available.