ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি চেয়েছিলেন আত্মনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা : মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, জুলাই ৭, : ভারত কেশরী ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ছিলেন একাধারে একজন রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, স্বাধীনচেতা পরোপকারি ব্যক্তি। দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে তাঁর অবদান ছিল অসীম। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির দর্শন এবং ভাবধারা আজকের দিনেও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। ৬ জুলাই ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মজয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত রাজ্যভিত্তিক শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে আগরতলায় মুক্তধারা অডিটোরিয়ামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানের শুরুতে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিগণ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধানিবেদন করেন। অনুষ্ঠানে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবন দর্শন নিয়ে একটি তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বিগত সময়ে বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির মত দেশপ্রমিকের জীবন দর্শন জানা থেকে বর্তমান প্রজন্মকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে কেন্দ্রে সরকার গঠনের পর নতুন প্রজন্ম ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবন দর্শন সম্পর্কে জানতে পারছে। এই প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী পন্ডীত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জীবন বিষয়েও আলোকপাত করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি চেয়েছিলেন অত্মনির্ভর সমাজ ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং বর্তমান ত্রিপুরা সরকারও সেই মার্গ দর্শনে কাজ করে চলেছে। ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি দেশ ভাগের বিরোধীতা করেছিলেন, তিনি চেয়েছিলেন অখন্ড ভারত। দেশ ভাগের ফলে যে বিভীষিকাময় অধ্যায় তৈরি হয়েছিল সেই করুন চিত্র এখনও মানুষ ভুলে যাননি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে বর্তমান ভারত যে গতিতে এগিয়ে চলেছে তাতে অচিরেই আমাদের দেশ বিশ্বের দরবারে অন্যতম স্থান দখল করে নিতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে কাজ করছেন। ভারতের এই অগ্রগতিতে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ভাবধারাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, নবীন প্রজন্মের কাছে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবন ও আদর্শ পৌঁছে দিতে পারলেই তার প্রতি প্রকৃত শ্ৰদ্ধা জানানো
সম্ভব হবে।
শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ১২৫তম জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের উদ্যোগে সামাজিক/দেশসেবা/প্রশাসনিক কাজে বিশেষ অবদানের জন্য ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি এক্সিলেন্স এওয়ার্ড চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। এই মহামানবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আগামীদিনে আগরতলা টাউনহল প্রাঙ্গনে তাঁর প্রতিকৃতি স্থাপন ও নামাকরণ করার উদ্যোগ নেওয়া হবে।
অনুষ্ঠানে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জীবন, দেশপ্রেম এবং আদর্শ নিয়ে বক্তব্য রাখেন সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, অখন্ড ভারত গড়ার জন্য এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য তিনি সারা জীবন চেষ্টা করেছেন। রাজ্যভিত্তিক সাংস্কৃতিক উপদেষ্টা কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত চক্রবর্তী বলেন, ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আদর্শ, দর্শন, ভাবধারার প্রাঙ্গিকতা দিন দিন প্রাধান্য পাচ্ছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের ড. সচিব ড. পি কে চক্রবর্তী। তিনি বলেন, রাজ্যে ২৩টি মহকুমায় আজ ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির জন্মজয়ন্তী পালিত হয়েছে। তিনি ছিলেন প্রকৃত দেশপ্রেমী, ভারতের একজন সুযোগ্য সন্তান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সংস্কৃতি দপ্তরের অধিকর্তা বিম্বিসার ভট্টাচার্য্য। অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে অডিটোরিয়ামের বারান্দায় ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির কর্মজীবন বিষয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনির আয়োজন করা হয়। তাছাড়া অডিটোরিয়ামে উপস্থিত স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে ক্যুইজ প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন...