Hare to Whatsapp
সহস্রাধিক মানুষ প্রানভয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে, কাঞ্ছনপুর ও গণ্ডাছড়ায় বাঙ্গালী ঐক্যমঞ্চ নাম দিয়ে পৃথক ভাবে বনধ আহ্বান
By Our Correspondent
আগরতলা, ডিসেম্বর ১৩, : তেলিয়ামুড়া, তৈদু, অম্পি, গঙ্গানগর, টাকারজলার পর আজ কাঞ্চনপুরের আনন্দবাজার, দশদা, পূর্বলক্ষীপুর, পশ্চিমলক্ষীপুর, দুর্গারাজ পাড়া, অহল্যাপুর প্রভূতি এলাকা থেকে ইতস্তত বিক্ষিপ্ত ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট বিল প্রত্যাহারের দাবীতে গত তিনদিনের টানা বনধ-এর প্রেক্ষিতে এসব এলাকার পাহাড়ী ও বাঙ্গালীদের মধ্যে একটা অস্থিরতা, হামলা ও পাল্টা হামলাকে কেন্দ্র করে গত তিনদিনে কাঞ্চনপুর ও তার আশপাশ এলাকা থেকে অন্তত সহস্রাধিক মানুষ বাড়ীঘর ছাড়া হয়েছেন।
কাঞ্চনপুর থেকে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, স্বার্থান্বেষী কতিপয় উপজাতি দুস্কৃতীর হামলায় সেখানকার অন্তত ত্রিশটি দোকানের ক্ষতি হয়েছে। আশপাশের বাড়িঘরেও হামলা হয়। এতে প্রান ভয়ে ৯৩টি পরিবার স্থানীয় আনন্দবাজার থানায় এসে আশ্রয় গ্রহন করেছে।
দশদা থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, সেখানকার মধ্যলক্ষীপুরের ২০৯টি বাঙালী পরিবার স্থানীয় দুর্গারাজ পাড়া দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ে এসে আশ্রয় গ্রহন করেছে। পূর্ব লক্ষীপুর এস পি ও ক্যাম্পে আশ্রয় গ্রহন করেছে ৩৯টি বাঙালী পরিবার । কাঞ্চনপুর- এর অহল্যাপুর জেবি স্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ৪৫টি বাঙালী পরিবার। উড়িছড়া রতনমনি স্মৃতি বিদ্যালয়ে আশ্রয় নিয়েছে ৫৬টি রিয়াং পরিবার। রামচরন হাইস্কুলে আশ্রয় নিয়েছে ১০টি রিয়াং পরিবার। গতকাল রাতে কাঞ্চনপুর মোটরস্ট্যান্ড সংলগ্ন আই পি এফ টি অফিসটিতে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া দশদা রাধামাধবপুরে এক রিয়াং বাড়ীতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। একটি গাড়ি সহ পুরো বাড়ীটি আগুনে পুড়ে যায়। রিয়াং শরনার্থী শিবির সংলগ্ন নাইশিং পাড়া, কাশীরামপুর থেকে হামলা পাল্টা হামলার খবর এসেছে। কাশীরামপুরে মৃণাল কান্তি রিয়াং নামে এক বনকর্মীর উপরও হামলা হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে রাস্তা থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
আজ কাঞ্চনপুরে যুব কংগ্রেসের বনধ-এর পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালী অংশের মানুষ বাঙ্গালী ঐক্যমঞ্চ নাম দিয়ে পৃথক ভাবে বনধ আহ্বান করেছিল।গণ্ডাছড়ার পরিস্থিতিও ভালো নয়।সেখানেও যুব কংগ্রেসের বনধ-এর পাশাপাশি স্থানীয় বাঙালী অংশের মানুষ বাঙ্গালী ঐক্যমঞ্চ নাম দিয়ে আজ পৃথক ভাবে অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বনধ আহ্বান করেছে। বাঙালী দোকানদার পাহাড়ী এলাকায় দোকান খুলতে যাচ্ছেন না। পক্ষান্তরে পাহাড়ী এলাকার মানুষ জন বাঙালী অধ্যুষিত বাজার গুলিতে খুব একটা আসছেন না। গতকাল রাতের একাধিক ঘটনার প্রেক্ষিতে জেলার পুলিশ সুপার, জেলা শাসক, এস ডি পি ও, স্থানীয় সবকটি থানার ওসি-রা কাঞ্চনপুর ও তার আশপাশ এলাকায় সফর করছেন। এস পি ভানুপদ দাস নিজেও আজ টি এস আর নিয়ে অস্থির এলাকা গুলিতে টহল দিয়েছেন। টি এস আর-এর পাশাপাশি বিএসএফ ও আসাম রাইফেলসও মোতায়েন করা হয়েছে। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় খুবই কম বলে স্থানীয় মানুষের অভিমত। সম্প্রতি বেশ কিছু এলাকা থেকে টি এস আর প্রত্যাহার করা হয়, এরফলে উভয় অংশের মানুষই অজানা আশঙ্কায় ভুগছেন।
কমলপুর থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, সেখানকার হালাহালি বাজারে নাকাশিপারার কিছু উপজাতির দোকান কে বা কারা পুড়িয়ে দেয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাধুনে গ্যাস ছুরে এবং ১৪৪ বলবৎ করে। এনিয়ে আজও সেখানকার পরিস্থিতি থমথমে।
তেলিয়ামুরা থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, তুইসিন্দ্রাই-এ আই পি এফ টি সমর্থক এক উপজাতি যুবক গতকালের বনধ কে কেন্দ্র করে কিছু বাঙালী দুষ্কৃতী দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিল আজ হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়েছে।