Hare to Whatsapp
সড়ক নির্মাণে রাজ্যে লগ্নি হবে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি: মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, জানুয়ারি ১২, : 'আগামী তিন বছরের মধ্যে সড়ক নির্মাণে রাজ্যে লগ্নি হবে প্রায় সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা। এনএইচআইডিসিএল এর মাধ্যমে এই টাকা লগ্নি হবে। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই, রাজ্যে রেকর্ড সৃষ্টি করে ইতিমধ্যেই ৯২৯ কোটি টাকার, ৫টি টেন্ডারের কাজ বেরিয়েছে। আগে কখনো এতগুলি কাজ একসঙ্গে হয়নি। ডাবল ইঞ্জিনের সরকার চলছে বলেই সম্ভব হয়েছে'। শনিবার সোনামুড়ার মোহনভোগ ব্লক প্রাঙ্গণে গ্রাম স্বরাজ অভিযানের উদ্বোধন করে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
তিনি বলেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার উন্নয়নমূলক কাজ করছে। বিগত দিনগুলোতে কাজের গুণমান যাচাই না করে, নেহাতই রাজনৈতিক স্বার্থে মানুষকে ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন শিক্ষা ক্ষেত্রে গুণগতমান উন্নত করা হয়নি। যার ফলে বিভিন্ন দপ্তরে শূন্য পদ থাকা সত্বেও লোক নিয়োগ করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রসঙ্গত তিনি মহাকরণে স্টেনোগ্রাফার এবং টেট এর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, শিক্ষার গুণগত মানের এই দুর্বলতাকে কাটিয়ে তোলার জন্য রাজ্য সরকার এনসিইআরটি পাঠ্যক্রম চালু করেছে। কেন্দ্রীয়ভাবে নেয়া হচ্ছে পরীক্ষা। যাতে করে আগামী দিনে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা সাফল্য পেতে পারে।
এখন যোগ্য ব্যক্তিরা চাকরি পাচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা অবলম্বন করা হচ্ছে। লাইনে দাঁড়ানো, রাজনৈতিক দলের মিছিলে হাটার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকেই নিজের কাজ করে আয় করার ব্যবস্থা শুরু করেছেন। স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে তাদের পাশে দাঁড়িয়ে আছে সরকার। সরকারি সুযোগ সুবিধা গুলিকে কাজে লাগিয়ে প্রত্যেককে স্বাবলম্বী হয়ে ওঠার জন্য আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
যারা বলছে যে ত্রিপুরায় গ্রামীণ এলাকায় রোজগার নেই, তাদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে গত ২০ মাসে রেগা প্রকল্পের সফল বাস্তবায়নে ত্রিপুরা একইসঙ্গে তেরোটি পুরস্কার পেয়েছে। যা আগে কখনোই হয়নি। তিনি পরিসংখ্যান দিয়ে বলেন ২০১৬-১৭ সালে যেখানে ২৯ শ্রমদিবসের কাজ হয়েছিল, সেখানে বর্তমান সময়ে হয়েছে ৪৬ শ্রমদিবসের কাজ।
মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন বর্তমান সরকার সমাধান করার জন্য কাজ করে, পুরনো সরকারের মত ঝুলিয়ে রাখার রাজনীতিতে বিশ্বাস করেনা। এই সময়ে আন্দোলন ছাড়াই রাজ্য পেয়েছে ডেমো ট্রেন, সরাসরি দিল্লি পর্যন্ত বিমান পরিষেবা, আন্তর্জাতিক প্রটোকল রুট, বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল সহ নানা কিছু। শুধু তাই নয় রাজ্যে অপরাধীক প্রবণতাও হ্রাস পেয়েছে। বেড়েছে কনভিকশন রেট। মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধ কমেছে ১০%। গাজা সহ নানা অবৈধ ব্যবসায় জড়িত অনেকেই এখন জেল খাটছে। এসব পরিবর্তনের ফলেই হয়েছে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি বলেন যদি ২০১৮ সালে পরিবর্তন না হতো, তবে বিভীষিকা দেখতে হতো রাজ্যবাসীকে। বহু ত্যাগের ফলে এই পরিবর্তন। 'এখন কোন প্ররোচনায় পা দেবেন না'। মুখ্যমন্ত্রী বলেন অপরাধের বিরুদ্ধে সরকার কিছুতেই আপোষ করবে না। সে প্রাক্তন মন্ত্রী হোক, অথবা কোন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য গ্রাম স্বরাজ অভিযান উপলক্ষে মোহনভোগ এলাকায় এক মাসব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছিল। তাতে এই ব্লকের ৫৬৬৭ জন নাগরিককে ১১ ধরনের সরকারি প্রকল্পে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এদিন অনুষ্ঠান মঞ্চে মুখ্যমন্ত্রী তাদের মধ্যে কয়েকজনের হাতে সেই প্রকল্পগুলির সুবিধা তুলে দেন। গ্রাম স্বরাজ অভিযান উপলক্ষে সেখানে ২৪টি প্রদর্শনী মন্ডপ খোলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সাংসদ প্রতিমা ভৌমিক, বিধায়ক সুভাষ চন্দ্র দাস সহ অন্যান্যরা।