Hare to Whatsapp
নিজে স্বাবলম্বী হওয়ার পাশাপাশি অন্যকে রোজগারি করে তুলুনঃ মুখ্যমন্ত্রী।
By Our Correspondent
আগরতলা, জানুয়ারি ১১, : "স্বনির্ভরতার মানসিকতা সবার মধ্যে পৌঁছে দিন। শুধু স্বাবলম্বী নয়, জব ক্রিয়েটর হিসেবে নিজেকে উন্নিত করুন।" ত্রিপুরা অন্যান্য পশ্চাৎপদ শ্রেণী সমবায় উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের বার্ষিক সাধারণ সভায় যোগ দিয়ে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে ঋণ গ্রহণের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলি ব্যবহার করে, তাতে লগ্নি করে স্বনির্ভর হয়ে ওঠার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। বর্তমান সময়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে কমিশন প্রথা কথা বন্ধ হয়ে গেছে। যোগ্য ব্যক্তি নির্দিষ্ট প্রকল্প দেখিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলি থেকে সহজেই ঋণ গ্রহণ করতে পারেন। তা ব্যবহার করে, উপযুক্ত স্থানে তা লগ্নি করার মাধ্যমে শুধু নিজে স্বাবলম্বী হওয়া নয়, অন্যকেও রোজগারের রাস্তা বের করে দেওয়ার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
সরকার যে সমস্ত ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়েছে, সেই ক্ষেত্র গুলির উপর ভিত্তি করে রোজগারের বন্দোবস্ত করার পরামর্শ দেন তিনি। এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে "ঋণ নেওয়ার সময় ভুল সিদ্ধান্ত নেবেন না। যে ক্ষেত্রগুলিতে সম্ভাবনা রয়েছে, সেই সংক্রান্ত প্রকল্প হাতে নিয়ে ঋণ গ্রহণ করুন। মাথায় রাখতে হবে যে সেই ঋণ যেন আপনি সহজেই পরিশোধ করতে পারেন"।
প্রসঙ্গত তিনি বেশ কিছু ক্ষেত্রের উদাহরণ তুলে ধরেন। যেমন কৃষি ক্ষেত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র, রাবার, ধূপকাঠির শলা ইত্যাদি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন কৃষকদের কাছ থেকে ধান ক্রয় প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রাজ্যে ধানের মিল স্থাপনের প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পেয়েছে। সরকারের লক্ষ্যমাত্রা ২ লক্ষ মেট্রিক টন ধান ক্রয় করা। যদিও বর্তমান সময়ে রাজ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে ধান চুরাই করার মেশিন নেই। এক্ষেত্রে লগ্নি লাভ দায়ক হতে পারে।
পাশাপাশি রাবার উৎপাদনের ক্ষেত্রেও গুণগত মান বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে স্মোক হাউস তৈরি করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন এখন উন্নত মানের রাবার ইতিমধ্যেই রাজ্যে তৈরি হওয়া শুরু হয়েছে। যার মাধ্যমে চাষিরা অধিক মুনাফা লাভ করতে পারবেন। সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে রাজ্যে আরো স্মোক হাউস তৈরি করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
তিনি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রেও জোর দেন। বলেন রাজ্যে উৎপাদিত আনারস, কাজুবাদাম, কাঁঠাল, কমলা ইত্যাদি ব্যবহার করে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র, ত্রিপুরাতে একটি লাভ দায়ক শিল্প হয়ে উঠতে পারে। এক্ষেত্রেও অধিক লগ্নির উপর জোর দেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।
পাশাপাশি দুগ্ধ, মাছ, পশুপালন ইত্যাদি সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন তিনি। মুখ্যমন্ত্রী বলেন লোন পাওয়ার জন্য কমিশন দেওয়ার ব্যবস্থা বন্ধ করা হয়েছে। তিনি বলেন 'যে পরিবর্তনগুলি রাজ্যবাসী চাইছিল সেই পরিবর্তন আনা শুরু করেছে নতুন সরকার।'
দীর্ঘ ২৫ বছর, শাসক ও শোষিতের ইতিহাস যারা শোনাতেন, তারাই সাধারণ শ্রমিকের কথা না ভেবে রাজনৈতিক স্বার্থে তা ব্যবহার করতেন বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রসঙ্গত তিনি একই ব্যক্তিকে অধিক সংখ্যায় অটোর পারমিট প্রদান সংক্রান্ত বিষয়টি উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে বর্তমান সময়ে শুধুমাত্র অটোচালক হলেই তাকে পারমিট দেয়া হচ্ছে। একজনকে অধিক পারমিট দেওয়ার প্রথা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এর ফলে প্রকৃত অর্থেই যারা অটোচালক তারা সরকারের সুবিধা গ্রহণ করতে পারছেন এবং উপকৃত হচ্ছেন।
এদিন অনুষ্ঠান শেষে ২৫ জনকে ওবিসি কর্পোরেশনের ঋণে কেনা অটোরিকশা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেব।