প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজ্য সরকার কাজ করে চলেছে : মুখ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদন

আগরতলা, জুন ৯, : প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী রাজ্যের মানুষের সার্বিক উন্নয়নই সরকারের লক্ষ্য। রাজ্যের বর্তমান সরকার সেই দিশাতেই কাজ করে চলেছে। স্বচ্ছতার সঙ্গে সঠিক দিশায় কাজ হচ্ছে বলেই ত্রিপুরা আজ উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে মাথা পিছু আয়ের ক্ষেত্রে এবং জিএসটি সংগ্রহের ক্ষেত্রে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। ৮ জুন বামুটিয়া ব্লকের তুফানিয়ালুঙ্গা জেবি স্কুল মাঠে মুখ্যমন্ত্রী চা শ্রমিক কল্যাণ প্রকল্পে চা শ্রমিকদের জমির পাট্টা প্রদান, মেগা স্বাস্থ্য শিবির ও রক্তদান শিবিরের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা একথা বলেন। তিনি বলেন, সময়ের কাজ সময়ে শেষ করার জন্য বিগত ৩৫ বছরের চেয়েও বর্তমান সরকারের ৭ বছরের সময়কালে উন্নয়নের কাজ অনেক দ্রুত গতিতে হয়েছে। রাজ্যের উন্নয়নমূলক কাজ থেকে অভিজ্ঞতা লাভ করার জন্য মহারাষ্ট্রসহ দেশের বিভিন্ন রাজ্য থেকে প্রতিনিধিরা এখানে ছুঁটে আসছেন। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নমূলক কাজ করার পাশাপাশি রাজ্য সরকার চাইছে রাজ্যের মানুষকে যাতে আর অযথা অর্থব্যয় করে চিকিৎসার জন্য বাইরে যেতে না হয়। সেজন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে আধুনিক করার উপর বিশেষভাবে জোর দেওয়া হয়েছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই ১০০ শয্যাবিশিষ্ট আধুনিক চক্ষু হাসপাতাল রাজ্যে চালু হয়ে যাবে। তিনি বলেন, ২০২২ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনকে কেন্দ্র করে রাজ্যে প্রতি ঘরে সুশাসন কর্মসূচি এক নির্দিষ্ট সময়ে করা হচ্ছে। এই কর্মসূচিতে এখন পর্যন্ত ৪৬০০টি শিবিরের মাধ্যমে মানুষের কাছে বিভিন্ন পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণই রাজ্যের বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। দেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী গ্রাম, শহরের উন্নয়নের মধ্য দিয়ে বিকশিত ভারত গড়ার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছেন, রাজ্যেও সে লক্ষ্যে কাজ হচ্ছে। রক্তদানের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রক্তদানের মতো মহৎ দান আর হতেপারে না। রক্তদানে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার জন্য তিনি রাজ্যবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। ৫ মিনিটে ৫ লক্ষ গাছের চারা রোপন করে বৃক্ষরোপনেও ত্রিপুরা রেকর্ড করেছে বলে মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, নেশামুক্ত সমাজ এবং রাজ্য গড়তে সরকার জিরো টলারেন্স নীতি নিয়ে কাজ করছে। নেশায় আসক্ত হয়ে পড়া যুবকদের সুস্থ করতে রাজ্যের ৮টি জেলাতেই সরকারিভাবে নেশামুক্তকেন্দ্র গড়েতোলা হয়েছে। নেশাকারবারের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

কৃষিক্ষেত্রে রাজ্যের অগ্রগতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ২০১৬ সালে রাজ্যের কৃষকদের আয় যেখানে ছিল ৬,৫৮০ টাকা তা এখন বেড়ে গিয়ে হয়েছে ১৩,৫৯০ টাকা। কৃষকরা যাতে আরও এগিয়ে যেতে পারেন সেজন্য শুরু হয়েছে কৃষি সংকল্প অভিযান। তিনি বলেন, প্রতিটি ক্ষেত্রে রাজ্য এগিয়ে যাচ্ছে বলেই কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে রাজ্যকে নিয়মিতভাবে পুরস্কৃত করা হচ্ছে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মোহনপুর মহকুমার মহকুমা শাসক সুভাষ দত্ত।

অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বামুটিয়া এলাকার একটি স্বসহায়ক গোষ্ঠীর সদস্যদের হাতে ১৫ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। এছাড়াও মুখ্যমন্ত্রী কয়েকজন চা শ্রমিকদের হাতে জমির পাট্টার কাগজ এবং বিভিন্ন সার্টিফিকেট তুলে দেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পর মুখ্যমন্ত্রী বৃক্ষরোপন করে বৃক্ষরোপন কর্মসূচির সূচনা করেন। এছাড়া তিনি রক্তদান শিবিরও পরিদর্শন করেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাধিপতি বিশ্বজিৎ শীল, টিটিডিসিএল এর চেয়ারম্যান সমীর রঞ্জন ঘোষ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক মেঘা জৈন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বামুটিয়া পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান দীপক কুমার সিনহা।

আরও পড়ুন...


Post Your Comments Below

নিচে আপনি আপনার মন্তব্য বাংলাতেও লিখতে পারেন।

বিঃ দ্রঃ
আপনার মন্তব্য বা কমেন্ট ইংরেজি ও বাংলা উভয় ভাষাতেই লিখতে পারেন। বাংলায় কোন মন্তব্য লিখতে হলে কোন ইউনিকোড বাংলা ফন্টেই লিখতে হবে যেমন আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড (Avro Keyboard)। আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ডের সাহায্যে মাক্রোসফট্ ওয়ার্ডে (Microsoft Word) টাইপ করে সেখান থেকে কপি করে কমেন্ট বা মন্তব্য বক্সে পেস্ট করতে পারেন। আপনার কম্পিউটারে আমার বাংলা কিংবা অভ্রো কী-বোর্ড বাংলা সফ্টওয়ার না থাকলে নিম্নে দেয়া লিঙ্কে (Link) ক্লিক করে ফ্রিতে ডাওনলোড করে নিতে পারেন।

Free Download Avro Keyboard

Fields with * are mandatory





Posted comments

Till now no approved comments is available.