Hare to Whatsapp
জুলাই মাসে রাজ্যের কলেজগুলোতে পরীক্ষা গ্রহণের সম্ভাব্য সিদ্ধান্ত নিয়ে ছাত্র ছাত্র ছাত্রী ও অভিভাবক মহল বেশ কিছু প্রশ্ন তোলেছেন।
By Our Correspondent
আগরতলা, মে ৫, : বর্তমানে রাজ্য স্তরের কলেজগুলিতে ছাত্রছাত্রীরা কলা বিভাগ, বিজ্ঞান বিভাগ, বাণিজ্য বিভাগ এবং ইঞ্জিনিয়ারিং এর মতো বিষয়গুলি নিয়ে পড়াশুনা করতে পারছে।
সম্প্রতি এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে ছিলেন পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে জুন মাসে কলেজ খুলে এক মাস ক্লাস করানোর পর জুলাই মাসে ফাইনাল পরীক্ষা গ্রহণের পরিকল্পনা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষামন্ত্রীর এই বক্তব্য বাস্তব সম্মত নয় বলে মনে করছে ছাত্র সমাজ। তাদের মতে কোনো ভাবেই একমাস কলেজে ক্লাসের পর ফাইনাল পরীক্ষার সন্মুখীন হওয়া সম্ভব সন্মত নয়। যেসমস্ত ছাত্রছাত্রীরা যেকোনো বিষয়ে স্নাতক বিষয় নিয়ে পড়াশোনা করছে তাদের জন্য ঐ বিষয়ের প্রত্যেকটা অধ্যায় সম্পর্কে ভালোভাবে অবগত হওয়া দরকার। সব বিষয়ে মুখস্থ বিদ্যা চলে না যে একমাসে পুরো সিলেবাস কমপ্লিট করে পরীক্ষার সন্মুখীন হতে পারবে ছাত্ররা।
যারা বিজ্ঞান বিভাগের পড়ুয়া তাদের বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্র্যাকটিক্যাল কর্মসূচির মাধ্যমে ঐ বিষয় সম্পর্কে অবগত হওয়ার দরকার হয়। কিন্তু এক মাসে বিজ্ঞান বিভাগের বিষয়গুলোতে প্র্যাকটিক্যাল সহ আরো অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো কীভাবে ছাত্রছাত্রীরা পুরণ করবে?
অনুরূপ পরিস্থিতি বানিজ্য বিভাগের ছাত্র ছাত্রীদেরও হবে। আর যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করছে তাদেরও বিভিন্ন বিষয়ের উপর প্র্যাকটিক্যাল কর্মসূচি রয়েছে। অনেক সময় একটা প্র্যাকটিক্যাল ক্লাশ পুরোপুরি ভাবে সম্পন্ন হতে এক-দুই সপ্তাহ সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। তো সেখানে একমাস?
শিক্ষামন্ত্রী নিজে যেখানে কোয়ালিটি এডোকেশানের কথা বলেন সেখানে এই ভাবে তড়িঘড়ি করে শিক্ষাদান করিয়ে এডোকেশান সিস্টেমকে কোয়ালিটির দিকে নিয়ে যাওয়া কিভাবে সম্ভবপর?
প্রশ্ন উঠতে পারে লকডাউনে বাড়িতে বসে এতটা সময় ছাত্রছাত্রীরা কী করছিল? তার প্রত্যুত্তরে এক কলেজ পড়ুয়া ছাত্র জানাল, বর্তমানে দেশ তথা রাজ্যে মহামারীকে ঘিরে যে সংকটময় অবস্থা চলছে এই পরিস্থিতিতে বাড়ীতে বসে ঠিকঠাক ভাবে পড়াশুনা করা অস্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু রাজ্য সরকার তো ভিডিও কলে অনলাইন ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে? এই প্রশ্ন এর উত্তরে ছাত্রটি বলেছে, তার জন্যে শিক্ষামন্ত্রীকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। এর পরই তার পাল্টা প্রশ্ন :
১) ভিডিও কলে ক্লাস কতটা সম্ভব আর কতটা গ্রহণযোগ্য ?
২) আদৌ কী এই ক্লাস করা সকলের পক্ষে সম্ভব?
৩) রাজ্যের প্রতিটা ছাত্রছাত্রীর কাছে কী স্মার্টফোন আছে?
৪) ভিডিও ক্লাস ও সামনা সামনি ক্লাস কী একই ব্যাপার?
৫) ভিডিও কলে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস কীভাবে সম্ভব?
৬) আর একসাথে একটা বিভাগের এতো স্টুডেন্টকে কী ভিডিও ক্লাস করানো সম্ভব?
এই প্রত্যেকটা প্রশ্ন কিন্তু অন্যান্য ছাত্রদের মনেও উঠে আসছে। আর এই লকডাউন পরিস্থিতিতে এমনও অনেক ছাত্রছাত্রীর পরিবার আছে যাদের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ যে তাদের দুই বেলা খাবার জোগার করাই দায়। তাই তরিঘরি কোন সিদ্ধান্ত না নিয়ে বাস্তব সম্মত কোন সিদ্ধান্ত নেওয়া হোক চাইছেন ছাত্র সমাজ।