Hare to Whatsapp
৪ঠা মে থেকে বড় মার্কেট কমপ্লেক্স ছাড়া অন্যান্য দোকানিদের ক্ষেত্রে মিলছে ছাড়ঃ মুখ্যমন্ত্রী
By Our Correspondent
আগরতলা, মে ২, : আগরতলা, ২ মেঃ প্রধানমন্ত্রীর আহবানে আগামী ৪ঠা মেথেকে ১৭ই মে পর্যন্ত চলবে দেশব্যাপী তৃতীয় দফায় লকডাউন। এক্ষেত্রে করোনা মোকাবেলায় কেন্দ্রীয় সরকারের জোন বিন্যাসে ত্রিপুরা গ্রীনজনে রয়েছে, তাই ৪ঠা মে থেকে বড় মার্কেট কমপ্লেক্স ছাড়া অন্যান্য দোকানিদের ক্ষেত্রে মিলছে ছাড়। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি নির্দেশিকা মেনে রাস্তায় নামার অনুমতি পাচ্ছে অন্যান্য যানবাহনও।
শনিবার রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে এক ভিডিও বার্তায় এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তিনি বলেন দোকানি ও ক্রেতাদের মাস্ক পড়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে। দোকানিরা ইচ্ছে করলে মাস্ক বিক্রিও করতে পারেন। কোনো ক্রেতা মাস্ক না পড়ে দোকানে এলে তার কাছে পণ্য বিক্রি না করার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বাজার কমিটির প্রতি আহ্বান রাখেন এই বিষয়টি নজরদারি করতে। প্রয়োজনে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করতেও বলেন তিনি। পাশাপাশি মাস্ক না পড়ে কেউ জনবহুল স্থানে এলে সরকারিভাবে জরিমানা করার বিষয়েও অবগত করেন মুখ্যমন্ত্রী।
যানবাহনের ক্ষেত্রে অন্যান্য গাড়িগুলোতে ৫০ শতাংশ হারে যাত্রী পরিবহনের নির্দেশ জারি করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। অটো, টমটম ও প্রাইভেট কারে ড্রাইভার সহ পেছনে সর্বমোট দুজন বসার অনুমতি মিলছে বলেও মুখ্যমন্ত্রী ভিডিও বার্তায় উল্লেখ করেন।
বহিঃরাজ্যে আটকে পড়া রাজ্যের নাগরিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তাদের সুরক্ষিতভাবে রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে সরকার যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। অযথা রাজ্যে ফিরে আসার ব্যাপারে অস্থির না হওয়ার আবেদন রাখেন তিনি। এ বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে কয়টি করোনা পজিটিভ কেইস এসেছে সবার ক্ষেত্রেই রয়েছে ট্রেভেলিং হিস্ট্রি। বহিঃরাজ্য থেকে যারাই ত্রিপুরায় আসবেন, সবার ক্ষেত্রেই যাবতীয় সুরক্ষা ব্যবস্থা গ্রহণ করছে সরকার। সম্প্রতি উদয়পুরে চেন্নাই ফেরত যাত্রীদের এম্বুলেন্স ড্রাইভারের সংক্রমণ ও আজ আমবাসা বিএসএফ ক্যাম্পের দুই জোয়ানের মধ্যে করোনা সংক্রমণ পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী সবাইকে আরও বেশি সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন যারা বহিঃরাজ্য থেকে ধাপে ধাপে ফিরে আসবেন, তাদের কোভিড-১৯ পরীক্ষা করার পর ছাড়া হবে। একই রকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বহিঃরাজ্য থেকে আসা পণ্যবাহী লড়ির ড্রাইভারদের ক্ষেত্রেও।
ত্রিপুরা বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেরার ওপারে যারা কৃষি কাজ করছেন, তাদের স্বার্থে খুব শীঘ্রই স্থানীয় প্রশাসন ও বিএসএফের মাধ্যমে গেইট খুলে দেবার ব্যবস্থা করা হবে। যাতে কৃষকরা ফসল তুলে আনতে পারেন ও কৃষিকাজ করতে পারেন। তবে তাদের বেরার ওপারে যাবার ক্ষেত্রে এবং ফেরার ক্ষেত্রে স্ক্রিনিং করা হবে বলেও জানান মুখ্যমন্ত্রী। এক্ষেত্রে কৃষকদের বাংলাদেশী নাগরিকদের সাথে মেলামেশা করার বিষয়ে সতর্ক করে দেন।ত্রুটি ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট কৃষকের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে বলেও জানান তিনি।
পঞ্চায়েত সেক্রেটারিদের বলেন কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছেছে কিনা তা নিশ্চিত করতে। উজ্জ্বলা যোজনা ২ লক্ষ ৭৫ হাজার ভোক্তাদের কাছে তিন মাসে তিনটি গ্যাস সিলিন্ডার পৌঁছে দেবার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট গ্যাস এজেন্সি কে উদ্যোগ নিতে বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ শুরু হচ্ছে রাজ্যের ছোট ইন্ডাস্ট্রিগুলিতেও। আগামী দিনে কিভাবে উৎপাদন দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ পর্যন্ত বাড়ানো যায়, সেই চিন্তা ধারা নিয়ে কাজ করার আহ্বান রাখেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন সাবরুমে লজস্ট্রিক হাবের কাজ শুরু হচ্ছে। চীন থেকে ভারতের দিকে ফিরছে শিল্পোদ্যোগীরা। কেন্দ্রীয় সরকারের সহায়তায় এই সুযোগটা ত্রিপুরা কাজে লাগাতে চায় বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
করোনা প্রতিরোধে বয়স্ক ও শিশুদের প্রতি সবাইকে আরও যত্নবান থাকার পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, মে মাসের মাঝামাঝি থেকে করোনার প্রকোপ বাড়তে পারে। তাই সবাইকে অপ্রয়োজনে বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেন। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার আহ্বান রেখে, এদিনও করোনা প্রতিরোধে ত্রিপুরা বাসির সাহায্য কামনা করেন মুখ্যমন্ত্রী।