Hare to Whatsapp
প্রধানমন্ত্রী উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে দেশের গ্রোথ ইঞ্জিন বানানোর সংকল্প নিয়েছেন : কেন্দ্রীয় উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদন
আগরতলা, নভেম্বর ১৬, ২০২৪: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে সড়ক, রেল, বিমান, টেলিযোগাযোগ সহ প্রতিটি ক্ষেত্রেরই ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উত্তর- পূর্বাঞ্চলকে দেশের গ্রোথ ইঞ্জিন বানানোর সংকল্প নিয়েছেন। এই লক্ষ্যে গত ১০ বছরে ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বহু প্রকল্প রূপায়ণ করছে। ১৫ নভেম্বর সচিবালয়ে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এক পর্যালোচনা সভার পর সাংবাদিকদের সাথে কথা বলার সময় কেন্দ্রীয় যোগাযোগ ও উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া একথা জানান। উল্লেখ্য, আজ সচিবালয়ের ২নং সভাকক্ষে কেন্দ্রীয় উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের মন্ত্রী জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া এক পর্যালোচনা বৈঠক করেন। বৈঠকে তিনি রাজ্যের উন্নয়নে উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রকের বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা করেন। সভায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহা, কৃষিমন্ত্রী রতনলাল নাথ, পরিবহণমন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী, জনজাতি কল্যাণমন্ত্রী বিকাশ দেববর্মা, শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী বৃষকেতু দেববর্মা, রাজ্যসভার সাংসদ রাজীব ভট্টাচার্য সহ বিভিন্ন দপ্তরের সচিব ও পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জানান, সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে গত ৬৫ বছরে দেশে ১০ হাজার কিলোমিটার ন্যাশনাল হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের গত ১০ বছরের সময়কালে সাড়ে পাঁচ হাজার কিলোমিটার ন্যাশনাল হাইওয়ে তৈরি করা হয়েছে। রেল পরিষেবার ক্ষেত্রে আগে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মাত্র ১টি রাজ্যে রেল যোগাযোগের সুবিধা ছিল। বর্তমানে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৩টি রাজ্যে রেল যোগাযোগের সুবিধা রয়েছে। উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির রেল পরিষেবা উন্নয়নে বর্তমানে ১৯টি প্রকল্পের কাজ চলছে। তাতে ৮১ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা হবে।
তিনি বলেন, আগামী ২-৩ বছরের মধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বাকি রাজ্যগুলিতেও রেল যোগাযোগ সম্প্রসারণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। শুধু তাই নয় রেলওয়ে ট্র্যাকলিং পারফরমেন্সও বিগত দিনের তুলনায় বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলা, ধর্মনগর, কুমারঘাট ও উদয়পুর রেলস্টেশনকে অমৃত ভারত স্টেশনের আওতায় পুনঃউন্নয়নের কাজ করা হচ্ছে। তিনি জানান, ত্রিপুরা সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিকে বিকাশ ও প্রগতির মানচিত্রে যুক্ত করার লক্ষ্যে ডোনার মন্ত্রকও সর্বতো সহযোগিতা প্রদান করছে। গত ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের বাজেট ছিল ২৪ হাজার কোটি টাকা। বর্তমানে প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক প্রচেষ্টার ফলে উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বাজেট প্রায় চারগুণ বৃদ্ধি পেয়ে ১ লক্ষ ৩ হাজার কোটি টাকা হয়েছে।
কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জানান, বিমান পরিষেবার ক্ষেত্রে যেখানে বিগত সরকারের সময়কালে উত্তর- পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে ৯টি বিমানবন্দর ছিল, বর্তমানে তা বৃদ্ধি পেয়ে ১৭টি হয়েছে। তিনি বলেন, ত্রিপুরায় মুখ্যমন্ত্রী প্রফেসর (ডা.) মানিক সাহার নেতৃত্বে রাজ্য বর্তমানে প্রগতি ও বিকাশের পথে দ্রুত এগুচ্ছে। বর্তমানে রাজ্যের জিএসডিপিও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ত্রিপুরায় মাথাপিছু গড় আয়ও বিগত দিনের তুলনায় প্রায় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান, বিগত সরকারের সময়কালের ২০০৪ সাল থেকে ২০১৪ সালের তুলনায় বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারের গত ১০ বছরের সময়কালে ত্রিপুরা রাজ্যের জন্য বাজেট অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি জানান, গ্র্যান্ট-ইন-এইডে ত্রিপুরা রাজ্য যেখানে ২০০৪ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত ৩১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা পেয়েছে, সেখানে বর্তমান সরকারের সময়কালের গত ১০ বছরে পেয়েছে প্রায় ৬২ হাজার কোটি টাকা। টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। টেলি যোগাযোগ ব্যবস্থার আরও উন্নয়নে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে ১১৯টি ৪-জি টাওয়ার স্থাপনের লক্ষ্যে ৫০০ কোটি টাকার প্যাকেজ হাতে নেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, ত্রিপুরায় উদ্যান, আগর শিল্প, পর্যটন, শিল্প, বিদ্যুৎ সহ নানা ক্ষেত্রের উন্নয়নের বিরাট সম্ভাবনা রয়েছে। ত্রিপুরার উন্নয়নে ডোনার মন্ত্রক আগামীদিনেও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবেন বলে কেন্দ্রীয়মন্ত্রী জানান।